E-Paper

লন্ডন ডায়েরি: কেড়ে নেওয়া ঐশ্বর্য, এই প্রথম প্রদর্শনীতে

তিনি লেখক, শিখ শিল্পের সংগ্রাহক। শিখ সাম্রাজ্যের শাসককে নিয়ে সাম্প্রতিক প্রদর্শনীটির অতিথি-কিউরেটর। এটি রণজিৎ সিংহকে নিয়ে ব্রিটেনে প্রথম পূর্ণাঙ্গ প্রদর্শনী।

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৫০

Sourced by the ABP

তাঁর হাতের চূড়েই ছিল কোহিনুর, এখন তা টাওয়ার অব লন্ডনে, রাজমুকুটের রত্নরাজির অংশ। ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড অ্যালবার্ট মিউজ়িয়মে সাজানো তাঁরই স্বর্ণসিংহাসন। লিডসে রাজ-অস্ত্রাগারে তাঁর তরবারি, শিরস্ত্রাণ। তবুও ব্রিটেনে অনেকেই রণজিৎ সিংহের বিষয়ে বিশেষ জানেন না। লন্ডনের ওয়ালেস কালেকশনের বাইরে মহারাজার বিশাল পোস্টার দেখে তাই গর্বিত দেবেন্দ্র তুর। তিনি লেখক, শিখ শিল্পের সংগ্রাহক। শিখ সাম্রাজ্যের শাসককে নিয়ে সাম্প্রতিক প্রদর্শনীটির অতিথি-কিউরেটর। এটি রণজিৎ সিংহকে নিয়ে ব্রিটেনে প্রথম পূর্ণাঙ্গ প্রদর্শনী। শুরুতেই যোদ্ধা জাতি রূপে শিখদের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস বিবৃত। ২৫ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন রণজিৎ, পশ্চিমে আফগান সীমান্ত থেকে উত্তরে কাশ্মীর পর্যন্ত ছিল সাম্রাজ্য, লাহোরে রাজধানী। তাঁর তরবারি, শিরস্ত্রাণ, অস্ত্র, স্বর্ণসিংহাসন, অলঙ্কার ও অলঙ্করণ, পরিচ্ছদ, প্রতিকৃতি রয়েছে প্রদর্শনীতে। প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ আলাদা রাগসঙ্গীত, যাতে দর্শকরা হেডফোন কানে সেই সময়কে ধরতে পারেন। শেষ ঘরে রণজিৎ-পুত্র দলীপ সিংহের আবক্ষ মর্মরমূর্তি। এমন ভাবে বসানো, মনে হয় যেন সামনে সমগ্র শিখ ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে আছেন পঞ্জাবের শেষ মহারাজা। একটি ছবিতে শিখদের পরাজয়ের পর শিশু দলীপ লর্ড ডালহৌসির পাশে বসে আছেন। মাত্র দশ বছর বয়সে তাঁকে জবরদস্তি সই করিয়ে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল রাজ্য ও কোহিনুর। সেই হস্তান্তরের চুক্তিপত্রের অনুকৃতিও ঝুলছে দেওয়ালে।

ইতিহাস: প্রদর্শনীতে মহারাজা রণজিৎ সিংহের স্বর্ণসিংহাসন। ডান দিকে তাঁর তরবারি

ইতিহাস: প্রদর্শনীতে মহারাজা রণজিৎ সিংহের স্বর্ণসিংহাসন। ডান দিকে তাঁর তরবারি

টিম আঙ্কল

১৯৮৭-তে কলকাতায় আসেন ব্রিটিশ ব্যাঙ্কার টিম গ্র্যান্ডেজ। তাঁর ছোট ফ্ল্যাটে পথশিশুদের আশ্রয় দেন। নিজের পেশা ছেড়ে দাতব্য সংস্থা স্থাপন করেন। লন্ডনে সংস্থাটির পডকাস্টের সিরিজ় উদ্বোধনে শোনা গেল তাঁর কাজ শুরুর কাহিনি। রাস্তার এক অসুস্থ ছেলের জন্য ব্যাঙ্কের গ্রাহক এক চিকিৎসকের সাহায্য চান। তিনি ছেলেটিকে বাঁচান, অন্য শিশুদেরও সাহায্য করেন। টিমের হৃদয় সোনার, বলেছেন সে দিনের এক পথশিশু। শ্রোতাদের মধ্যে ছিলেন লন্ডনে কর্মরত দুই বাঙালি যুবক। পথ থেকে তাঁদের তুলে আনেন টিম। তাঁরা বলেছেন, এ জীবন টিম আঙ্কলের দান।

বাঁদর ও নায়ক

স্লামডগ মিলিয়নেয়ার-খ্যাত দেব পটেল হনুমান নিয়ে মায়ের মুখে শোনা গল্পের অনুপ্রেরণায় কাল্পনিক শহর ইয়াতানায় (মুম্বই-সদৃশ) গড়েছেন প্রতিশোধমূলক, গ্যাংস্টার বিষয়ক ছবি মাঙ্কি ম্যান। অভিনয় ছাড়াও পরিচালক, প্রযোজক, সহ-চিত্রনাট্যকার তিনি। পটভূমিতে ক্রমবর্ধমান সাম্প্রদায়িকতা, সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, নির্বাচনী আবহে রাজনীতিকদের উপর ‘গডম্যান’দের প্রভাব। পটেল এখানেও বস্তিবাসীর চরিত্রে। তার মাকে এক পুলিশ (সিকন্দর খের) খুন করে, ছেলে প্রতিশোধ চায়। রাতে হনুমানের মুখোশ পরে বেআইনি, জরাজীর্ণ এক বক্সিং রিং-এ লড়ে। মার খায়, তার বিরুদ্ধে বাজির দর ওঠে। পরে চাকরি নেয় অভিজাত রেস্তরাঁয়, সেখানে সেই খুনে পুলিশ, নেতাদের আনাগোনা। বলিউড, হলিউড এবং ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার গ্যাংস্টার ঘরানার মিশেলের ছবিটি ব্রিটেনে উচ্চপ্রশংসিত। বলা হচ্ছে, গুন্ডা-রাজনীতি ও অপরাধের চিত্রণে পটেল তারুণ্যের মার্টিন স্করসেসিকে মনে করিয়েছেন। তবে, ছবির ‘গডম্যান’-এর হাবভাবে ছায়া এক সুপরিচিত যোগগুরুর। হিন্দুত্ববাদী নেতার চরিত্রটিও অতি চেনা ঠেকবে। তাতেই মুশকিল। ভারতীয় দর্শকমহলে অশান্তি এড়াতে ছবিটি থেকে সরে গিয়েছে নেটফ্লিক্স। ভারতে ১৯ এপ্রিল মুক্তির দিন ধার্য হলেও তা পিছিয়ে গিয়েছে।

জুতা বিভ্রাট

ঋষি সুনকের বিধি বাম। মূল্যস্ফীতি হ্রাসের খবরে স্বস্তি আসবে, সেই আশায় করনীতি নিয়ে টিভি সংস্থাকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। গোল বাধাল প্রধানমন্ত্রীর জুতোজোড়া। জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের পকেটসই ট্রেনার শু পরেছিলেন। দশ জনে এক জন সেটাই পরেন। কিন্তু, মনে হচ্ছিল বাক্স খুলে ঝকঝকে নতুন জুতো বার করে সুনককে দিয়েছেন কোনও পরামর্শদাতা। সম্প্রতি ৪৯০ পাউন্ডের মহার্ঘ জুতো পরে সমালোচিত সুনক। তাই ‘সাধারণ’ জুতো পায়ে পরিস্থিতি সামলাতে চাইছিলেন। সমাজমাধ্যম রুষ্ট, নতুন জুতোর মডেলিং করছেন? ফ্যাশনবোদ্ধাদের মত, ভীষণ মেকি। অন্যেরা বলছেন, সেই ব্র্যান্ডের ওই জুতোর জনপ্রিয়তা ধাক্কা খাবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

London Diary

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy