ইন্টিগ্রেটেড টিচার এডুকেশন প্রোগ্রাম (আইটিইপি) চালু হলে কী কী অসুবিধা হতে পারে, তা নিয়ে এ বার এনসিটিই-কে চিঠি দিল রাজ্য সরকার। কেরল, অসমের পর পশ্চিমবঙ্গও কি সরাসরি আপত্তি তুলছে ডুয়াল ডিগ্রি কোর্সে?
শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহীদের জন্য ইন্টিগ্রেটেড টিচার এডুকেশন প্রোগ্রাম (আইটিইপি) বাধ্যতামূলক হতে চলেছে আগামী ২০২৭ সাল থেকে। ইতিমধ্যে জাতীয় শিক্ষানীতি বা এনসিটিই গাইডলাইন অনুযায়ী বিএড-এর পাশাপাশি চার বছরের ডুয়াল কোর্স ডিগ্রি করানো শুরু করেছে বিভিন্ন রাজ্য। এখনও সে পথে হাঁটেনি পশ্চিমবঙ্গ।
আরও পড়ুন:
শিক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, উচ্চশিক্ষা দফতরকে অবিলম্বে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। না হলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে রাজ্যকে। ওই কোর্স বাধ্যতামূলক হয়ে গেলে বর্তমান বিএড পড়ুয়ারা চাকরির আবেদন করতে পারবেন না। আবার আগ্রহী বহু পড়ুয়াই হয়তো পার্শ্ববর্তী রাজ্যে গিয়ে ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হবেন। তাতে এ রাজ্যের শিক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ২০২০ সালে চালু হয়েছে জাতীয় শিক্ষানীতি। তার পর পরই ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে আইটিইপি ডুয়াল কোর্সের কথা জানায় এনসিটিই।
এ প্রসঙ্গে উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ সরকারি ভাবে কিছু জানাতে চাননি কর্তৃপক্ষ। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তা জানিয়েছেন, “বিষয়টি বিবেচনা করে উপযুক্ত সময় সিদ্ধান্ত জানাবে দফতর।”
আরও পড়ুন:
পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিএড ডিগ্রি দেওয়ার জন্য রয়েছে বাবা সাহেব অম্বেডকর শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়। যার অধীনে ৬২৩ কলেজ রয়েছে। দু’বছরের বিএড ডিগ্রি করানো হয় এ সমস্ত কলেজে। এর মধ্যে পাঁচটি জেলার সাতটি কলেজে আগে থেকেই এই চার বছরের ডুয়াল ডিগ্রি কোর্স করানো হয়। তবে তার এনসিটিই নিয়মভুক্ত নয়। এখানে তিন বছরের ডিগ্রি কোর্স এবং এক বছরের শিক্ষকশিক্ষণ কোর্স শেখানো হয়।
বাবা সাহেব অম্বেডকর শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই বিষয়ে সরকার কী ভাবছে, সে বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আগামী দিনে এই কোর্স বাধ্যতামূলক হলে রাজ্যের পড়ুয়াদের ক্ষতি হবে। বিশেষ করে পুরনো বিএড ডিগ্রি প্রাপকদের চাকরির আবেদনে অসুবিধা হবে। আশা করি সরকার দ্রুত পদক্ষেপ করবে।”
উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, কেরালা, অসম, ঝাড়খণ্ড ও তামিলনাড়ু এনসিটিই-র এই নিয়ম লাগু করেনি। এ রাজ্যে ইতিমধ্যেই বিশেষ সচিব পর্যায়ের আধিকারিকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে সরকারের কাছে একটি রিপোর্ট ও জমা দেওয়া হয়েছে। সরকারের তরফে ওই রিপোর্ট কেন্দ্রের কাছেও পৌঁছে গিয়েছে। ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, চার বছরের এই ডুয়াল ডিগ্রি কোর্স চালু করার ক্ষেত্রে কী কী অসুবিধা রয়েছে রাজ্যে। এই ধরনের ডুয়াল ডিগ্রি কোর্স করাতে গেলে অন্য যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি রয়েছে তাদের বাবাসাহেব অম্বেডকর বিশ্ববিদ্যালয় অধীনে আনতে হবে। সে ক্ষেত্রে অনেকগুলি অসুবিধা রয়েছে। দ্বিতীয়ত, বিএড বিশ্ববিদ্যালয়কে জেনারেল ডিগ্রি কোর্স পড়ানোর জন্য অনুমতি দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে কলেজগুলির পরিকাঠামো নির্মাণ এবং শিক্ষক নিয়োগ করা হবে কী ভাবে? জেনারেল ডিগ্রি কলেজের অধীনে আনলে পুরনো বিএড এবং জেনারেল ডিগ্রি কলেজগুলির অস্তিত্ব খর্ব হতে পারে বলে মনে করছে উচ্চশিক্ষা দফতর। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কোর্স করাতে গেলেও পড়ুয়াদের অনেক দূর পড়াশোনা করতে হবে, এমন পরিস্থিতি ও তৈরি হতে পারে।