Advertisement
E-Paper

গবেষণার কাজে কোন কোন কাজগুলো না করলেই নয়? বিশেষজ্ঞ দিলেন একগুচ্ছ পরামর্শ

একটাই ভুল সিদ্ধান্ত সমস্ত পরিশ্রম মাটি করে দিতে পারে। তাই ভেবে চিন্তে এগনোই শ্রেয়।

ইন্দ্রনীল সামন্ত

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৪ ১২:৫৪
Research work.

প্রতীকী চিত্র।

গবেষণা শুরু করতে আগ্রহীদের ঘরের সজ্জা কেমন হওয়া উচিত কিংবা কী ভাবে নিজেকে একাধিক কাজের জন্য প্রস্তুত করতে হবে, সেই সব নিয়ে আগেই আলোচনা করেছি। কিন্তু শুধু সবই ঠিক পথে চলবে, এমনটা ভাবলেও মুশকিল। নিয়মমাফিক কাজ করার পরেও ভুল হতেই পারে। সে ক্ষেত্রে জেনে নেওয়া দরকার, কী কী বিষয়ে ভুল সিদ্ধান্ত এড়ানো যেতে পারে।

১. সাফল্যের কোনও শর্টকাট নেই:

পড়াশোনায় সাফল্য পাওয়া এবং গবেষণার কাজে সফল হওয়া— এর কোনওটাই শর্টকাটে অর্জন করা সম্ভব নয়। গবেষকেরা যে বিষয়েই গবেষণা করবেন, সে বিষয়ে তিনিই বিশেষজ্ঞ। কাজেই থিয়োরির বিষয়ে জানার পাশাপাশি, প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিষয়গুলিও বিশদে জানতে হবে। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা মূলত যন্ত্র নির্ভর। সেই সমস্ত যন্ত্রের খুঁটিনাটি সম্পর্কে সঠিক তথ্য না জানা থাকলে কাজে ব্যাঘাত ঘটবে। একই সঙ্গে পরীক্ষার আশানুরূপ ফল না পেলে সেই কাজ থেকে চট করে বেরিয়ে আসাও সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। তাই কোনও শর্টকাট পদ্ধতিতে কাজ শেষ হবে, এটা ভাবা চলবে না।

২. যন্ত্রের সম্যক ধারনা:

গবেষণার কাজে যে যন্ত্রগুলি ব্যবহৃত হয়, সেগুলি সম্পর্কেও সম্যক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। গবেষণাগারে সব যন্ত্রের ‘টেকনিক্যাল লিটারেচার’-এর ফাইল থাকে, তা ডিজিটাল নথিও হতে পারে। সেগুলি নিয়ে পড়াশোনার প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি, বিভিন্ন যন্ত্রের নকশা সম্পর্কিত তথ্যও জানা প্রয়োজন। একই সঙ্গে এই ধরনের নথিতে ‘ট্রাবল শ্যুট’-এর সবিস্তার তথ্য দেওয়া থাকে। সেগুলি থেকে যন্ত্রের ছোটখাটো সমস্যার সমাধান সম্পর্কে জানা যায়। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি, নিজেকেও যন্ত্রপাতি নিয়ে নাড়াচাড়া করতে হবে।

৩. প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া:

কোনও যন্ত্র বা যন্ত্রাংশে বড়সড় সমস্যা দেখা দিলে সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা বলতে হবে। সমস্যাটা ঠিক কী, তা বুঝতে হবে। এর পর কোন কোড দিয়ে এই সমস্যার কথা দ্রুত বোঝানো যায়, সেটাও খুঁজে দেখতে হবে। ইঞ্জিনিয়ারকে ওই কোডটি জানালেই সমস্যার দ্রুত সমাধান মিলবে। গবেষণাগারে কাজের সময় দেখা যায়, কোনও না কোনও যন্ত্রে শুরু থেকেই ত্রুটি (ম্যানুফ্যাকচারিং ডিফেক্ট) রয়ে গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে সেই সমস্যার সঙ্গে মানিয়ে চলার চেষ্টা করাই ভাল। প্রয়োজনে সেই বিষয়ে সিনিয়র গবেষকদেরও জিজ্ঞেস করে নেওয়া যেতে পারে।

৪. কাজের নিরিখে সকলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা:

গবেষণার বিষয় ও তার পদ্ধতি— এই দু’টি বিষয়ই জটিল। একটি বিষয় নিয়ে একা কাজ করে উচ্চ ‘ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর’ যুক্ত জার্নালে ছাপানো বা পেটেন্টের আবেদন করাটাও বেশ কঠিন। এর জন্য গবেষকদের দল ভারী এবং কার্যকারী হওয়া প্রয়োজন। প্রয়োজনে যাঁরা ওই একই বিষয় নিয়ে অন্যরকম কোনও কাজ করছেন, তাঁদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে হবে। দলের সঙ্গে কাজ করার পাশাপাশি, সকলের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলা, কাজের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করাও সমান ভাবে প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে, মাথায় রাখতে হবে, ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গিকে বাদ দিয়ে কাজ করাই শ্রেয়।

৫. শুভাকাঙ্খীদের সঙ্গত প্রয়োজন:

কাজের জন্য এক জন শুভাকাঙ্খীর সঙ্গত প্রয়োজন। সাফল্য তো বটেই, কোথাও কোনও ভুলের জন্যও তাঁর পরামর্শ বিশেষ ভাবে প্রয়োজন হবে। এ ক্ষেত্রে যিনি গবেষণার গাইড, তিনি তো বটেই, এই বিষয় নিয়ে আগে গবেষণার কাজ করেছেন, এমন ব্যক্তিও গবেষকের শুভাকাঙ্খী হতে পারেন। তবে, সবটাই গবেষকের উপর, তিনি কাকে বেছে নেবেন, উৎসাহ এবং পরামর্শের জন্য।

[লেখক পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান]

success attitude Academician Research Work Expert Advice Goals
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy