পথনাটিকার বিশেষ মুহূর্তে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গণজ্ঞাপন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গণজ্ঞাপন বিভাগের পক্ষ থেকে ক্লাসরুমের চৌহদ্দির বাইরে বেরিয়ে আধুনিক অপরাধ এবং আইন সম্পর্কে সাধারণ মানুষদের সচেতন করার একটি বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের আনুষ্ঠানিক ভাবে বর্ধমান জেলা পুলিশ এবং বর্ধমান পুরসভার তরফে এই বিষয়ে বিশেষ সহযোগিতা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ৬ অগস্ট বর্ধমান শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন বাজার সংলগ্ন এলাকায় ‘নিজের দায়িত্বে সাইবার সুরক্ষা’ শীর্ষক একটি পথনাটিকার মাধ্যমে সাইবার অপরাধ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সাধারণ মানুষদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেন।
এ দিনের প্রথম দফার কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গণজ্ঞাপন বিভাগের চতুর্থ সেমেস্টারের পড়ুয়াদের একটি দল, বর্ধমান জেলা পুলিশের এসডিপিও সুপ্রভাত চক্রবর্তী (পূর্ব বর্ধমান সদর দক্ষিণ), আইপিএস শ্রীনিবাসন এম.পি এবং ২১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। পথনাটিকার শেষে জেলা সাইবার ক্রাইম বিভাগের তৈরি করা সাইবার আইন সম্পর্কিত লিফলেটও বিলি করেন পড়ুয়ারা। এই বিশেষ কর্মসূচি আয়োজিত হওয়ায় খুশি স্থানীয় বাসিন্দারাও। তাঁদের মতে, ইন্টারনেট ব্যবহার সম্পর্কে অনেক বিষয় অজানা থাকায় সহজেই মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। এই ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে সচেতনতা যেমন বাড়বে, তেমনই আরও সহজ ভাবে বিনা বাধায় অনলাইনে কাজ করা সম্ভব হবে।
পড়ুয়াদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে এসডিপিও সুপ্রভাত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রবিবার বাজার সংলগ্ন এলাকায় সাধারণের ভিড়ের কথা মাথায় রেখেই পথনাটিকার আয়োজন করা হয়েছে, যাতে বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে সাইবার অপরাধ এবং আইন সম্পর্কিত তথ্য পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়।’’ আইপিএস শ্রীনিবাসন এম.পি-র মতে, ‘‘সাধারণ মানুষের পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও ইন্টারনেটের যথাযথ ব্যবহার সম্পর্কে আরও সচেতনতা বাড়াতে এই ধরনের কর্মসূচির প্রয়োজন রয়েছে।’’ ২১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বর্ধমান জেলা পুলিশ এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগের মাধ্যমে ইন্টারনেটে প্রতারণার হাত থেকে বাঁচার সহজ উপায় জানতে পারবেন সাধারণ মানুষ।’’
এই বিষয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গণজ্ঞাপন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রাজেশ দাস বলেন, ‘‘বর্ধমান জেলা পুলিশ এবং বর্ধমান পুরসভার আনুষ্ঠানিক সহযোগিতা ছাড়া এই পথনাটিকার প্রয়াসের সাফল্য পাওয়া সম্ভব ছিল না। বর্ধমান জেলা পুলিশের সুপারিন্টেন্ডেন্ট অফ পুলিশ কামনাশিস সেনের তরফে আইনি ছাড়পত্র পাওয়ায় পড়ুয়ারা বাড়তি সুবিধা পেয়েছেন। পাশাপাশি, কর্মসূচির শেষে সাধারণ মানুষের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া মেলায়, ভবিষ্যতে গণজ্ঞাপন বিভাগের পক্ষ থেকে দ্বিতীয় দফায় সোশ্যাল আউটরিচ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বর্ধমান শহরের বাইরে রায়না, জামালপুর, মেমারির বিভিন্ন কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের নিয়ে সচেতনামূলক কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা রয়েছে। সেই সমস্ত কর্মসূচিতেও বর্ধমান জেলা পুলিশ এবং প্রশাসনের সমান ভাবে সহযোগিতা পাওয়া যাবে, এমনটাই জানানো হয়েছে।’’
তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘‘গণজ্ঞাপন বিষয়টি বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ নয়। এই বিষয়টি নিয়ে চর্চার ক্ষেত্রে ক্লাসরুমের বাইরে বেরিয়ে জ্ঞাপনের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির অভ্যাসেরও সমান ভাবে প্রয়োজন রয়েছে। সেই হিসাবে, শিক্ষার্থীদের ‘বিয়ন্ড দ্য ক্লাসরুম’-এর মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করার দীর্ঘকালীন প্রয়াসের একটি দিক হল এই বিশেষ কর্মসূচি। যাঁরা এই বিষয়টি নিয়ে ভবিষ্যতে পেশাদার হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চান, তাঁদের সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংযোগ রক্ষার উপর বিশেষ জোর দিতে হবে, যা পথনাটিকা কিংবা অন্যান্য সোশ্যাল আউটরিচ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাস্তবায়িত করা সম্ভব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy