কারখানার গেটের সামনে শ্রমিকদের জমায়েত। রবিবার ছবি তুলেছেন সজল চট্টোপাধ্যায়।
রাজ্যে চটশিল্পের পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো হয়ে উঠছে। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক জুটমিল। গত ৯ সেপ্টেম্বর শ্রমিক অসন্তোষের কারণ দেখিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় সাঁকরাইলের ডেল্টা জুটমিল। সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই সেই ছায়া এসে পড়ল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। রবিবার সকালে বন্ধ হয়ে গেল কাঁকিনাড়ার নফরচাঁদ জুটমিল।
ফলে পুজোর মুখে কর্মহীম হয়ে পড়লেন কারখানার প্রায় তিন হাজার কর্মী। শতাব্দীপ্রাচীন এই কারখানাটি এর আগেও নানা কারণে বেশ কয়েক বার বন্ধ যায়। তবে এ দিনের কারণ ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বরাত কম থাকায় উত্পাদনের উপর প্রভাব পড়ছিল বেশ কয়েক মাস ধরেই। শ্রমিকদের সাত দিনের পরিবর্তে চার দিন করে কাজ করানো হচ্ছিল। বন্ধ করে দেওয়া হয় রাতের শিফ্টও।
ওই শিল্পাঞ্চলে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ২১টি জুটমিল রয়েছে। বেশ কয়েকটি কারখানায় সপ্তাহে ছ’দিন করে কাজ করেন শ্রমিকরা। নফরচাঁদ জুটমিলের শ্রমিকদের দাবি, ওই সব কারখানায় শ্রমিকরা ছ’দিন কাজ পেলে তাঁদের ক্ষেত্রে কেন অন্যথা হবে। তবে কর্তপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, একেই বিশ্ববাজারে চটের চাহিদা কমে গিয়েছে, তার উপর বিদ্যুত্ ও আনুষঙ্গিক বিষয়েও খরচ বহুগুণে বেড়েছে। বাজারে চটের চাহিদা না থাকায় উত্পাদন সে হারে বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই শ্রমিকদের কাজের দিন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে একপ্রকার বাধ্য হয়েই। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, চটের ব্যবহার যাতে আরও বাড়ানো হয় সে বিষয়ে কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে বহু বার। কিন্তু তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে এ রাজ্যের অধিকাংশ চটকলগুলি ধুঁকছে।
এ দিন এআইটিইউসি-র সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ কুণ্ডু দাবি করেন, কারখানার ম্যানেজমেন্ট তাঁদের মদতপুষ্ট একটি সংগঠনের সাহায্যে সাত দিনের পরিবর্তে চার দিন কাজ করাচ্ছে শ্রমিকদের। কিন্তু শ্রমিকদের পাঁচ দিনের কাজের হিসাব মালিককে খাতায়কলমে দেখানো হচ্ছে।
উত্পাদন কম হওয়ায় শনিবার থেকেই কারখানার মেশিনগুলি কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ দিন সকালে কাজের দাবিতে শ্রমিকরা কারখানার গেট অবরুদ্ধ করেন। তাঁদের দাবি, বরাত কম ও লোকসানের কারণ দেখিয়ে কর্তৃপক্ষ যদি কারখানার মেশিন বন্ধ করতে পারে, তাহলে তাঁরাও কারখানা চলতে দেবেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy