আহত পুলিশকর্মীর ছবি তুলেছেন অনির্বাণ সেন।
মাত্র কয়েক দিনের বিরতি। ফের আক্রান্ত পুলিশ। আবার সেই বীরভূমে।
গত ২৪ অক্টোবর চৌমণ্ডলপুরে বোমা উদ্ধারে গিয়ে জখম হন পাড়ুই থানার ওসি। এ বার রামপুরহাটের হাটতলায় হামলায় আহত হলেন পুলিশের এক কনস্টেবল। আহত হয়েছেন এক এনভিএফ কর্মীও।
বুধবার রাত পৌনে ১২টা নাগাদ হাটতলায় টহল দিচ্ছিলেন কনস্টেবল অরুণ মুখোপাধ্যায় এবং এনভিএফ কর্মী জগন্নাথ সরকার। সেই সময়ে একটি মোটরবাইকে করে দ্রুত গতিতে যাচ্ছিলেন তিন যুবক। অভিযোগ, পুলিশকর্মীদের কাছে এসে গালিগালাজ করতে থাকে ওই যুবকেরা। বাইকটি দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই শুরু হয় কথা কাটাকাটি। হঠাত্ই যুবকেরা আক্রমণ করে ওই দু’জনকে। অরুণবাবুকে চোখে ঘুঁষি মারার পাশাপাশি রড দিয়ে মারা হয় জগন্নাথবাবুকেও। অভিযোগ, অরুণবাবুর রাইফেলটিও কেড়ে নেওয়া হয়। বেধড়ক মারধরের পর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। আহত দু’জনকে রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অরুণবাবুকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। হামলায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অরুণবাবুর চোখ। বুকে আঘাত করা হয়েছে জগন্নাথবাবুর। পরে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় অরুণবাবুর রাইফেল। পুলিশ সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক জনকে আটক করা হয়েছে। আটক বাবু শেখ এলাকার দাগী অপরাধী।
পুলিশের উপর এই হামলার পর শাসক থেকে পুলিশ— বিরোধীরা আক্রমণ করেছে দু’পক্ষকেই। বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের মতে, পুলিশের উপর শাসকের বেড়ে চলা হামলা থেকে ‘উদ্বুদ্ধ’ হচ্ছে বাকিরা। তাঁর প্রশ্ন, রক্ষকেরই এই হাল হলে রাজ্যকে নিরাপত্তা দেবে কে? একই মত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীরও। তিনি বলেন, “তৃণমূলের সন্ত্রাসে শেষ হচ্ছে বাংলা। দলমত নির্বিশেষে এর প্রতিবাদ করতে হবে। পুলিশের উপরেই হামলা হলে সাধারণ নাগরিক আস্থা রাখবে কার উপর?” এই ধরনের ঘটনায় পুলিশের উর্দির মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম। তাঁর আরও দাবি, “পুলিশের উপর মহল শাসকের দালালি করছে, আর তার ফল ভোগ করছে নীচুতলার কর্মীরা।”
জেলা পুলিশের উপর হামলা অবশ্য নতুন নয়। গত ২৪ অক্টোবর বোমা উদ্ধার করতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হাতে গুরুতর জখম হন পাড়ুই থানার ওসি প্রসেনজিত্ দত্ত এবং এক কনস্টেবল। চলতি বছরের ৩ সেপ্টেম্বর বোলপুর থানায় ঢুকে ডিউটি অফিসারকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তত্কালীন জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সুদীপ্ত ঘোষের বিরুদ্ধে। জুন এবং জুলাই মাসেও হামলা হয় পুলিশের উপর। এর মধ্যে ৩ জুনের হামলায় মৃত্যু হয় দুবরাজপুর থানার সাব ইনস্পেক্টর অমিত চক্রবর্তীর। বার বার জেলা পুলিশের উপর হামলা হওয়ায় নিরাপত্তার অভাবে ভুগছে গোটা এলাকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy