শিলিগুড়ি পুরসভার নব নির্বাচিত মেয়র অশোক ভট্টাচার্যকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন তৃণমূলের মেয়র পদপ্রার্থী নান্টু পাল।
সংখ্যাই সত্য। অন্তত শিলিগুড়িতে তো বটেই!
আর সেই সংখ্যাতত্ত্বের নিরিখেই শিলিগুড়ি পুরবোর্ড গঠন করতে চলেছে বামেরা। মেয়র হিসেবে জয়ী হয়েছেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। সোমবার গোপন ব্যালটে ৪৭ ওয়ার্ডের পুরসভায় ২৪ জন কাউন্সিলরই তাঁর পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এঁদের মধ্যে অশোকবাবু-সহ ২৩ জনই বাম কাউন্সিলর। অন্য যে ভোটটি তিনি পেয়েছেন সেটি নির্দল প্রার্থী অরবিন্দ ঘোষের। আগে থেকে যদিও তিনি বামেদের সমর্থন করেছিলেন। অশোকবাবুকে মেয়র হিসেবে মনোনয়নের তিনিই প্রস্তাবক ছিলেন। অন্য দিকে, তৃণমূল পেয়েছে ১৬টি ভোট। তাদের দলের কাউন্সিলরের সংখ্যা ছিল ১৭। কিন্তু, একটি ভোট বাতিল হওয়ায় তৃণমূলের মেয়র পদপ্রার্থী নান্টু পালের বরাদ্দ থেকে সেই ভোটটি কমে যায়। বাকি ছয় কাউন্সিলরের মধ্যে চার জন কংগ্রেসের এবং দু’জন বিজেপি-র। যদিও এই ছয় জনই এ দিন শপথগ্রহণের পর পুরভবন ছেড়ে বেরিয়ে যান।
এ দিন পুরসভার নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ছিল বেলা ১টায়। তার পরেই গোপন ব্যালটে নতুন বোর্ডের মেয়র এবং চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার কথা ছিল। এ দিন সকাল ১১টা ২০ মিনিট নাগাদ শিলিগুড়ি পুরভবনে ২২ জন বাম কাউন্সিলরকে নিয়ে পৌঁছন অশোকবাবু। এর কিছু আগে পুরভবনের ২০০ মিটার দূরে পূর্ত দফতরের একটি বাংলোয় শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে বসেছিলেন তৃণমূলের ১৭ জন কাউন্সিলর। বেলা ১২টা ৩৫ নাগাদ তাঁরাও মিছিল করে পুরভবনে প্রবেশ করেন। বিজেপি এবং কংগ্রেসের কাউন্সিলররাও পৌঁছন। তবে, শপথগ্রহণের পর দার্জিলিঙের সাংসদ তথা বিজেপি নেতা সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার সঙ্গে পুরভবন ছেড়ে বেরিয়ে যান বিজেপি-র দুই কাউন্সিলর। কংগ্রেসের চার কাউন্সিলরও বেরিয়ে যান। মেয়র নির্বাচনে অংশ নেন ৪১ জন কাউন্সিলর। তাঁদের মধ্যে বামেদের ২৩, তৃণমূলের ১৭ এবং এক জন নির্দল কাউন্সিলর ছিলেন। কাজেই ৪১-এর মধ্যে ২১ জনের সমর্থন পেলেই অশোকবাবু জয়ী হতেন। কিন্তু, তিনি এ দিন ২৪ জন কাউন্সিলরেরই সমর্থন পেয়েছেন।
গত ২৫ এপ্রিল রাজ্যের ৯১টি পুরসভার সঙ্গে শিলিগুড়িতেও নির্বাচন হয়। ফল জানা গিয়েছিল তার তিন দিন পর। ২৮ এপ্রিল দেখা যায়, মোট ৪৭টি আসনের মধ্যে ২৩টিই দখল করেছে বামেরা। তৃণমূল ১৭, কংগ্রেস চার এবং বিজেপি দু’টি আসন দখল করে। বাকি একটি ওয়ার্ডে জিতেছিলেন নির্দল প্রার্থী অরবিন্দ ঘোষ ওরফে অমুবাবু। তিনিই এ দিন বামেদের তুরুপের তাস ছিলেন।
সব কিছু ঠিকঠাক মিটলেও তৃণমূলের এই হারের বোঝায় শাকের আঁটির মতো চেপে রইল একটি প্রশ্ন, কোন কাউন্সিলরের ভোট বাতিল হল? তা কি ইচ্ছাকৃত?
ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy