অলফোনস আরেনার মঞ্চে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: এএফপি।
এ যেন আলেকজান্ডারের ভারত জয়ের মতো! তবে এটা ভারত নয়, অস্ট্রেলিয়া। তিনিও আলেকজান্ডার নন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে আলেকজান্ডার ভারত জয় করেছিলেন, আর মোদী সিডনি জয় করলেন তাঁর ‘ক্যারিশমা’য়।
জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে ব্রিসবেনে মোদী পা রাখেন গত বৃহস্পতিবার। তিন দিনের সম্মেলন শেষে সেখান থেকে সোমবার সোজা চলে আসেন সিডনি। জি-২০ সম্মেলনের পাশাপাশি তাঁর অন্যতম লক্ষ্য ছিল অস্ট্রেলিয়ার হৃদয় জয় করা। সেই লক্ষ্যেও সফল তিনি। মোদীর অস্ট্রেলিয়া সফর ঘিরে প্রবাসী ভারতীয় তো বটেই, গোটা অস্ট্রেলিয়ায় একটা উচ্ছ্বাসের তরঙ্গ কাজ করছিল। সেই তরঙ্গেই এ দিন গা ভাসালেন মোদী। আমেরিকার ম্যাডিসন স্কোয়ারের মতোই সিডনি-র অলিম্পিক পার্কের অলফোনস আরেনাতে ১৬ হাজার ভারতীয় হাজির ছিলেন মোদীকে স্বাগত জানাতে। আরেনার বাইরে জায়ান্ট স্ক্রিনের ব্যবস্থা করা হয় বাকি দর্শকদের জন্য।
মোদীর অপেক্ষায় তখন প্রহর গুনছে গোটা অলফোনস আরেনা। তিনি এলেন। পরনে সাদা জামা, উপরে নীলরঙা হাফ-জ্যাকেট। তাঁকে দেখামাত্রই মোদী...মোদী ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠল আরেনা। স্থানীয় সময় তখন সন্ধে ৬টা। মঞ্চে একে একে হাজির হলেন সে দেশের রাজনীতিবিদ থেকে ক্রিকেটাররা। শেষ নামটা সঞ্চালক উচ্চারণ করতেই গোটা আরেনায় উচ্ছ্বাসের বন্যা বয়ে যায়। মঞ্চে উঠেই স্বকীয় ভঙ্গিতে প্রবাসী ভারতীয়দের মোদী সম্বোধন করেন ‘মেরে পেয়ারে দেশবাসী’ বলে। আরেনার পরিবেশ তখন যেন এক টুকরো ভারত!
অলফোনস আরেনায় তখন উত্সবের পরিবেশ। ছবি: পিটিআই।
প্রবাসী ভারতীয়দের উদ্দেশে এ দিন মোদী বলেন, “আপনাদের কাছ থেকে যে সম্মান ও ভালবাসা পেলাম, তার যোগ্য আমি নই।” তাঁর কথায়, “যে অস্ট্রেলিয়া আসতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা লাগে, সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সময় লাগল ২৮ বছর।” তবে তিনি সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়দের স্পষ্ট বার্তা দেন যে তাঁদের এত সময় অপেক্ষা করতে হবে না। এক জন ভারতীয় হিসাবে যা যা অধিকার রয়েছে সবই দেওয়া হবে তাঁদের। পাশাপাশি, যুব সমাজকেও দেশের উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। তাঁর ‘স্বচ্ছ ভারত’ অভিযানে অংশ নেওয়ার জন্য প্রবাসী ভারতীয়দের আমন্ত্রণও জানান মোদী। অস্ট্রেলিয়ার শ্রমব্যবস্থা এবং শ্রমিকদের প্রতি জনগণের অভূতপূর্ব দৃষ্টিভঙ্গির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “কাজ ছোট হোক বা বড়, কাজ দিয়ে মানুষকে দেখা উচিত নয়। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আমাদের সরে আসতে হবে।” এ দিন তাঁর বক্তব্যে জনধন যোজনা থেকে শুরু করে ভিসা সংক্রান্ত বিষয় উঠে আসে। আমেরিকার মতো অস্ট্রেলিয়ার প্রবাসী ভারতীয়দের জন্যও তিনি রেল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার মতো একগুচ্ছ উপহারের কথাও ঘোষণা করেন। তাঁর এ দিনের ঘণ্টাখানেকের বক্তৃতাও যেন মোড়া ছিল সেই ‘মোদী ক্যারিশমা’য়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy