গিলগিটে উদ্ধারকাজে পাক সেনা। ছবি এএফপি।
পাকিস্তানের গিলগিটে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন ফিলিপিন্সের রাষ্ট্রদূত দোমিনগো ডি লুসেনারিও জুনিয়র এবং নরওয়ের রাষ্ট্রদূত লেইফ লারসেন। মারা গিয়েছেন মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূতের স্ত্রীরাও। শুক্রবার গিলগিট-বালতিস্তানের নালতার উপত্যকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে পাক সেনার মুখপাত্র মেজর জেনারেল অসীম বাজওয়া জানিয়েছেন। এ দিকে, তেহরিক-ই-তালিবান হেলিকপ্টারটিকে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে নামিয়েছে বলে দাবি করেছে। যদিও তাদের লক্ষ্য ছিল পাক-প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। যদিও পাক-সেনার পক্ষ থেকে এই দাবি অস্বীকার করা হয়েছে।
এ দিন তিনটি এমআই-১৭ হেলিকপ্টারে মোট ৩৭ দেশের প্রতিনিধিরা গিলিগিট-বালতিস্তান অঞ্চলে তিন দিনের সফরে যাচ্ছিলেন। সেখানে নালতার উপত্যকার একটি প্রকল্পের উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পটি উদ্বোধনের জন্য পাক-প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফও বিমানে গিলগিট যাচ্ছিলেন। সেখানে বিদেশি প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দেখা করার কথা ছিল। এই দলে ফিলিপিন্স, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, নরওয়ে, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত এবং কয়েক জন রাষ্ট্রদূতের স্ত্রীরাও ছিলেন। এর মধ্যে একটি হেলিকপ্টার নালতারের একটি স্কুলে ভেঙে পড়ে। এই হেলিকপ্টারটিতে ১১ জন বিদেশি ও ছ’জন পাকিস্তানি ছিলেন। চার জন বিদেশি এবং দু’জন পাইলট— সব মিলিয়ে এই দুর্ঘটনায় মোট ছ’জনের প্রাণ গিয়েছে। নিহত পাইলটরা হলেন মেজর আলতামাস এবং মেজর ফয়জল। এই দুর্ঘটনায় নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত মার্সেল ডি ভিঙ্ক এবং পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেজ আনানিজ আহত হয়েছেন বলে মেজর জেনারেল আসীম বাজওয়া ট্যুইটারে জানিয়েছেন। হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ার পরে স্কুলটিতেও আগুন ধরে যায়। তবে স্কুলে কেউ হতাহত হয়েছেন বলে এখনও খবর আসেনি।
১৯৮৮-র ১৭ অগস্ট বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছিল তৎকালীন পাক প্রেসিডেন্ট জিয়া উল হকের। সেই একই বিমানে ছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্লন্ড র্যাফেল। প্রাণ হারিয়েছিলেন তিনিও। প্রাণ গিয়েছিল উচ্চপদস্থ সেনা ও আমলাদেরও। সেই দুর্ঘটনা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে। এ দিনের ঘটনার পরেও নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এর মধ্যেই তালিবানদের এই দাবি। যদিও মেজর জেনারেল আসীম বাজওয়া জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য দুর্ঘটনাই ঘটেছে। ঘটনার তদন্তও শুরু হয়েছে।
আহতদের বিশেষ হেলিকপ্টার গিলগিটের সেনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই সময়ে দু’টি প্রকল্পের উদ্বোধনের জন্য পাক-প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফও গিলগিটে যাচ্ছিলেন। ঘটনার খবর পেয়ে তিনি সফর বাতিল করে দ্রুত ইসলামাবাদে ফিরে আসেন। রেডিও পাকিস্তানে পাক প্রেসিডেন্ট মন্নু হুসেন এবং প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এই ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy