Advertisement
০৪ মে ২০২৪

দলীয় প্রচারে আক্রান্ত রূপা, অভিযুক্ত তৃণমূল

পুরভোটের আগে রাজ্য জুড়ে শাসক দলের সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ভোটের মাত্র তিন দিন আগেও খাস কলকাতায় বিজেপি-র উপর আক্রমণের অভিযোগ উঠল শাসক দলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ঢিলছোড়া দূরত্বে দলীয় প্রচারে গিয়ে আক্রান্ত হলেন বিজেপি-র তারকামুখ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। বিজেপি-র অভিযোগ, ঘটনার সময় নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল পুলিশ। যদিও পরে রূপা বলেন, আক্রমণের সময় নীবর থাকলেও পুলিশ না থাকলে এ দিন আরও ভয়ানক কিছু ঘটতে পারত। কাকতালীয় ভাবে, পুরভোটে সন্ত্রাস বন্ধের দাবিতে এ দিন দুপুরেই শহরের রাজপথে নেমেছিলেন কৌশিক সেন, অশোক গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ বিশিষ্টজন।

ঘটনার পর সংবাদমাধ্যামের মুখোমুখি রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।

ঘটনার পর সংবাদমাধ্যামের মুখোমুখি রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৫ ২০:৩৯
Share: Save:

পুরভোটের আগে রাজ্য জুড়ে শাসক দলের সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ভোটের মাত্র তিন দিন আগেও খাস কলকাতায় বিজেপি-র উপর আক্রমণের অভিযোগ উঠল শাসক দলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ঢিলছোড়া দূরত্বে দলীয় প্রচারে গিয়ে আক্রান্ত হলেন বিজেপি-র তারকামুখ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। বিজেপি-র অভিযোগ, ঘটনার সময় নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল পুলিশ। যদিও পরে রূপা বলেন, আক্রমণের সময় নীবর থাকলেও পুলিশ না থাকলে এ দিন আরও ভয়ানক কিছু ঘটতে পারত। কাকতালীয় ভাবে, পুরভোটে সন্ত্রাস বন্ধের দাবিতে এ দিন দুপুরেই শহরের রাজপথে নেমেছিলেন কৌশিক সেন, অশোক গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ বিশিষ্টজন।

এ দিন আলিপুরের গোপালনগর মোড়ে সার্ভে বিল্ডিংয়ের উল্টো দিকে ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী প্রমিতা দত্তের হয়ে প্রচারে একটি দলীয় সভায় যোগদানের কথা ছিল রূপার। সাড়ে ৫টা নাগাদ ওখানে সভা করার জন্য পুলিশের কাছে লিখিত অনুমতিও ছিল বলে জানিয়েছে বিজেপি। সেইমতো বিকেলে সেখানে গাড়ি নিয়ে পৌঁছেও যান তিনি। অভিযোগ, গাড়ি থেকে নেমে সভামঞ্চের দিকে এগোতেই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের বাধার সম্মখীন হন রূপা। তাঁর গাড়ি ঘিরে ফেলা হয়। গাড়ির উপর ক্রমাগত চড়চাপড়ও পড়তে থাকে বলে দাবি। কোনও রকমে গাড়ি থেকে নেমে সভাস্থলের দিকে এগিয়ে তিনি দেখেন, সভামঞ্চে বিজেপি-র পতাকা সরিয়ে সেখানে তৃণমূলের পতাকা লাগানো। এমনকী, মঞ্চের দখল নিয়েছে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। রূপার আরও দাবি, এর পর সভাম়ঞ্চেই তৃণমূলের সমর্থকদের হাতে কার্যত বন্দি হয়ে পড়েন তিনি। তাঁকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজও করা হয় বলে এ দিন সংবাদমাধ্যমে অভিযোগ করেন তিনি। শুধু তাই নয়, মঞ্চ থেকে তাঁকে ঠেলে ফেলে দেওয়ার চেষ্টাও করা হয় বলে দাবি রূপার। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক এবং রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। রূপাকে সঙ্গে নিয়ে আলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী প্রমিতা দত্ত। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধার্থনাথের কটাক্ষ, “বিজেপি-কে ভয় পেয়েছে তৃণমূল, এ জন্য গুণ্ডামির আশ্রয় নিয়েছে তারা। বিহারে যেমন জঙ্গলরাজ ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে পশ্চিমবঙ্গে তেমনই জঙ্গলরাজ শুরু হয়েছে।’’

তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য এই ঘটনাকে নাটক বলে অভিহিত করেছেন। তৃণমূলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজেদের তুলে ধরার জন্যই বিজেপি নেতানেত্রীরা নাটক করছেন। ফিরহাদ পাল্টা অভিযোগ করেছেন, ‘‘আলিপুরের গোপালনগরে আমাদের ব্যানার, পতাকা, ফেস্টুন রূপা ও তাঁর দলের লোকেরা ছিঁড়ছিল বলেই স্থানীয় মানুষ প্রতিবাদ করে।’’ তৃণমূল তো বিজেপি-কে রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্ব দিতে চান না। তা হলে পুরভোটের মুখে তাদের বিরুদ্ধে এই হামলার অভিযোগ উঠছে কেন? ফিরহাদের দাবি, ‘‘রূপা তো ওখানে নাটক করেছেন।’’ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘এর থেকে বড় নৈরাজ্য আর কিছু হতে পারে না। এই বাংলায় কিশোরী থেকে সন্ন্যাসিনী— কেউ নিরাপদে নেই। সেখানে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ছাড় পাবেন কী করে?’’ আসন্ন পুরভোটে তৃণমূলকে ‘শিক্ষা’ দেওয়ার জন্য তিনি কলকাতার মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার প্রদীপ আদকের তোলা ছবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE