বাংলাদেশকে হারানোর পর ভারতের উচ্ছ্বাস। ছবি: রয়টার্স।
বাংলাদেশের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠাটা যে নেহাত ‘ফ্লুক’, তা ওরা নিজেরাই বুঝিয়ে দিল এমসিজি-তে। ভারতের কাছে ১০৯ রানে হেরে।
ম্যাচটা নিয়ে গত দু’দিন ধরে এত হইচই কেন হল জানি না। সাধারণত, যে ম্যাচে সমানে-সমানে মরণ-বাঁচন লড়াই হয়, সে রকম ম্যাচ নিয়েই এত হইচই হয়ে থাকে। ভারত-পাকিস্তান হলে যেটা হয়। সেমিফাইনালে ভারতের সামনে যে-ই পড়ুক না কেন, সেই ম্যাচ নিয়ে দু’দিন ধরে হইচই হলে অবাক হব না। কিন্তু ভারত-বাংলাদেশ নিয়ে এত মাতামাতি! অবাক হওয়ার আছে বইকি।
বাংলাদেশ যে ম্যাচটা জিতবে না, তা আগে থেকেই জানা। ভারত এখন যে ফর্মে আছে, যে ক্রিকেট খেলছে, তাতে বাংলাদেশের মতো পিছিয়ে থাকা দল ওদের হারাতে পারবে, এমন ভাবাটাই অন্যায়। তবু ক্রিকেটের অনিশ্চয়তার দিকের কথা ভেবেই হয়তো অনেকে ভেবে বসেছিলেন যে অল্প হলেও বাংলাদেশের জেতার সম্ভাবনা রয়েছে। ক্রিকেটের টেকনিক্যাল লোক হিসেবে আমার তা মনে করার কোনও কারণ ছিল না। এবং যা ভেবেছি, তা-ই হল। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের এখনও এই স্তরের টেম্পারামেন্ট নিয়ে খেলা শিখতে দেরি আছে। ওদের এখনও অনেক অভিজ্ঞতার প্রয়োজন।
তবু শুরুর দিকে যে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের হাত-পা বেঁধে রেখেছিল তাস্কিন, মোর্তাজা, রুবেলরা, তার প্রশংসা করতেই হবে। ওই সময় সত্যিই ওরা ভাল লাইন ও লেংথ বজায় রেখে বোলিং করছিল। রুবেল বিরাট কোহলিকে আউট করে দিলেও আমি বলব, ওটা কোহলির নিজের দোষে। অযথা বাইরের বল খেলতে গিয়ে বাইরের কানা দিয়ে খোঁচা মেরে আউট হল ও। এই দুর্বলতাটা ওর নতুন নয়। প্রায়ই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে আউট হয় বিরাট। আজও সেই ঘটনাই ঘটল।
মাঠ ছাড়ছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মোর্তাজা। ছবি: এএফপি।
ভারতের একশো রান তুলতে প্রায় ২৬ ওভার লেগে যায়। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড হলে এই চাপটা বজায় রাখার জন্য বোলারদের যা যা করা দরকার, তা সবই করত। এখানেই বাংলাদেশের সঙ্গে বড় দলগুলোর তফাৎ। ভারত যে ওই জায়গা থেকে চাপ বাড়াবে, এটাই স্বাভাবিক। সে ভাবেই তখন বাংলাদেশের বোলারদের পাল্টা চাপ বাড়ানো উচিত ছিল। কিন্তু এই জায়গাতেই ওরা মার খেয়ে গেল। রায়না-জাডেজারা বাংলাদেশের হাত থেকে ম্যাচ বার করে নিয়ে চলে গেল বলা যায়। ধোনি মাত্র ছ’রানে আউট হয়ে না গেলে ভারত হয়তো আরও ২৫ রান বেশি পেত। কিন্তু ভারত ২৬০ পেরিয়ে যেতেই ম্যাচও বাংলাদেশের হাত থেকে বেরিয়ে গেল।
তিনশোর উপর রান তাড়া করে ভারতের বোলারদের বিরুদ্ধে জেতা প্রায় অসম্ভব। দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ার মতো দল হলেও ভারতের এই রান তাড়া করতে নেমে বেগ পেত। যে দলের বোলাররা প্রতি ম্যাচে বিপক্ষকে অল আউট করে দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে তিনশোর উপর রান তাড়া করে জেতার ক্ষমতা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আছে বলে মনে হয় না। শাকিব, মাহমুদুল্লাহ ছাড়া তো এই স্তরে সফল হওয়ার মতো কোনও ব্যাটসম্যান নেই এই দলে। তবু ওরা চেষ্টা করেছে। মাঝে সৌম্য সরকার ও মাহমুদুল্লাহর মধ্যে একটা বড় পার্টনারশিপ তৈরি হচ্ছিল বটে। কিন্তু ভারতীয় বোলাররা তা হতে দেবেই বা কেন? শামি, উমেশরা সারা বিশ্বকাপে যে রকম গোলাবর্ষণ করে চলেছে, তাতে তো শাকিবদের এ ভাবে উড়ে যাওয়ারই কথা!
সেমিফাইনালে পাকিস্তান, না অস্ট্রেলিয়া কে ভারতের সামনে পড়বে জানি না। পাকিস্তান পড়লে ভারতকেই এগিয়ে রাখব। আর অস্ট্রেলিয়া পড়লে বলব ৫০-৫০।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy