পুরনো শত্রুতার জেরে কুপিয়ে খুন করা হল এক তৃণমূল কর্মীকে। শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের বৈষ্ণবনগর এলাকার সাহাবানচক গ্রাম পঞ্চায়েতে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম ফিরোজ মিয়াঁ (৪০)। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ইশা মিয়াঁ-সহ সাত জনের বিরুদ্ধে রাতেই বৈষ্ণবনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ফিরোজের ভাই ফকিরুদ্দিন। রবিবার বিকেল পর্যন্ত অভিযুক্তরা অধরা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঠিক কী ঘটেছিল?
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে খবর, গত কাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ এলাকায় একটি চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন ফিরোজ। সে সময় জনা সাতেক লোক নিয়ে সেখানে এসে উপস্থিত হয় ইশা মিয়াঁ। এলাকায় কংগ্রেস কর্মী বলে পরিচিত সে। কোনও প্ররোচনা ছাড়া আচমকাই ফিরোজের উপর চ়ড়াও হয় ইশা-সহ তার দলবল। হাঁসুয়া নিয়ে ফিরোজকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে তারা। ঘটনার সময় চায়ের দোকানে ছিলেন ফিরোজের কাকার ছেলে আফসার আলি। ফিরোজকে আক্রান্ত হতে দেখে এগিয়ে আসেন তিনি। বাধা দিতে গেলে তাঁর উপরেও চড়াও হয় ইশার সঙ্গীরা। ফিরোজকে ছেড়ে তাঁর উপরে হাঁসুয়ার এলোপাথাড়ি কোপ চলতে থাকে। খবর পেয়ে ছুটে আসেন ফিরোজের প্রতিবেশীরা। তাঁদের দেখে এলাকা ছেড়ে পালায় ইশা ও তার দলবল। গুরুতর আহত অবস্থায় ফিরোজ ও আফসারকে স্থানীয় দরিয়াপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই তাঁদের মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, গভীর রাতে সেখানেই মারা যায় ফিরোজ। অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় আফসারকে রাতেই কলকাতার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
মৃতের পরিবারের দাবি, পুরনো শত্রুতার জেরেই ফিরোজকে আক্রমণ করেছে ইশা। পরিবার সূত্রে খবর, বছর দু’য়েক আগে তাদের গ্রামের এক সুদের কারবারি বাবলু শেখের থেকে এক লাখ টাকা ধার নেয় ইশা। কিন্তু, বার বার তাগাদা সত্ত্বেও সেই টাকা ফেরত দেয়নি সে। এ নিয়ে মাস দু’য়েক আগে ফিরোজের নেতৃত্বে এলাকায় এক সালিশি সভা বসে। ইশাকে টাকা ফেরতের কথা বলে ফিরোজ। তখনকার মতো কোনও রকম উচ্চবাচ্য না করলেও গত কাল দুপুরে ফের বিষয়টি নিয়ে ফিরোজের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে ইশা। কিন্তু, প্রতিবেশীদের হস্তক্ষেপে তা মিটেও যায়। ফিরোজের ভাই ফকিরুদ্দিন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি। তাঁর দাবি, সেই আক্রোশেই ফিরোজের উপর হামলা চালিয়েছে ইশা।
রবিবার সকালে মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy