পণ্য প্যাকেজিংয়ে চটের বস্তার ব্যবহার ধীরে ধীরে তুলে দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই বিষয়ে কেন্দ্রের মনোভাব ব্যাখ্যা করার জন্য আগামী ৯ ডিসেম্বর দিল্লিতে বৈঠক ডাকা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, পঞ্জাব, হরিয়ানার মতো চট উৎপাদক রাজ্যগুলির মুখ্যসচিব ও জুট কমিশনারদের। এ রাজ্য থেকে ডাক পেয়েছে আইজেএমএ-ও। কেন্দ্রের এই উদ্যোগেই অশনি সঙ্কেত দেখছে এ রাজ্যের শাসক দল। তাদের আশঙ্কা, এমনিতেই পর্যাপ্ত বরাতের অভাবে রাজ্যের চটকলগুলি ধুঁকছে। কেন্দ্রের নতুন উদ্যোগ ফলপ্রসূ হলে আরও বেশি মানুষ কর্মহীন হবেন, চটকলকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলারও অবনতি হবে। কেন্দ্রের এমন উদ্যোগের প্রতিবাদে নামার লক্ষ্যে আজ, শুক্রবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন আইএনটিটিইউসি-র বর্ষীয়ান নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক সম্প্রতি একটি নোট (নং ১৬(১৬)/২০০৯-ই-আই (এ)) পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের কাছে। সেখানে বলা হয়েছে, বাজার অর্থনীতির সঙ্গে তাল রেখে জুট প্যাকেজিং মেটেরিয়ালস (জেপিএম) আইনের পর্যালোচনা করা দরকার। খাদ্যশস্য প্যাক করার জন্য চটের বস্তার আবশ্যিক ব্যবহারের জন্য যে নীতি আছে, তা-ও পর্যায়ক্রমে তুলে দেওয়া প্রয়োজন। নোটে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, খাদ্যশস্যের ক্ষেত্রে চটের বস্তা ব্যবহারের পরিমাণ ৯০% থেকে চলতি আর্থিক বছরেই ৭০% করে দেওয়া হোক এবং আগামী দু-তিন বছরে পর্যায়ক্রমে তা তুলে নেওয়া হোক। তা হলে চটকলগুলি বাঁচবে কী ভাবে? নোটে বলা হয়েছে, চটকলগুলির আধুনিকীকরণ এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ঘটাতে হবে। বিশ্ব বাজারের চাহিদা মেটাতে চটকলগুলিকে রফতানি করার মতো পণ্য উৎপাদনে উপযোগী করতে হবে। আর এ দিকে কেন্দ্রীয় সরকার চটকলে বরাত বেঁধে দেওয়ার পরিবর্তে দক্ষ কারখানার কাছ থেকে টেন্ডারের ভিত্তিতে মাল নেবে।
পশ্চিমবঙ্গে চটকলের সংখ্যা ৬২। তার মধ্যে অনেক চটকল বন্ধ, বাকিগুলিরও কাজের অভাবে নাভিশ্বাস উঠছে। কাজ এবং পাওনা না পেয়ে শ্রমিক অসন্তোষ মাঝেমধ্যেই হিংসাত্মক চেহারা নিচ্ছে। সরকারি মুখ্য সচেতক শোভনদেবের কথায়, “কেন্দ্রের এই নতুন উদ্যোগ চটকলের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতবে! আমাদের রাজ্যে বহু মানুষ বিপদে পড়বেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই নিয়েই আলোচনা করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy