যথেষ্ট সময় দেওয়া সত্ত্বেও দিল্লিতে সরকার গঠনের বিষয়ে কোনও স্থির সিদ্ধান্তে না আসতে পারায় মঙ্গলবার কেন্দ্রকে রীতিমতো ‘ভর্ত্সনা’ করল সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রকে শীর্ষ আদালত এটাও জানিয়ে দিয়েছে, রাষ্ট্রপতি শাসন বেশি দিন চলতে পারে না। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাজ্যে সরকার গঠনে লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় এ দিন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তুর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন বলে, গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোয় রাষ্টপতি শাসন নয়, মানুষের অধিকার আছে সরকার পাওয়ার।
২০১৩-য় দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৩২টি আসন পেয়ে একক বৃহত্তম দল হিসাবে উঠে এলেও সরকার গঠনের ‘ম্যাজিক সংখ্যা’য় পৌঁছতে দরকার ছিল আরও ৩টি আসন। সরকার গঠন করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় দেখে প্রথম থেকেই বিরোধী দলের আসনে বসার সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি। অন্য দিকে, আম আদমি পার্টি (আপ) ২৮টি এবং কংগ্রেস ৮টি আসন পায়। ফলে সরকার গড়ার পক্ষে যথেষ্ট সংখ্যা কোনও দলের কাছেই ছিল না। সে ক্ষেত্রে একমাত্র রাস্তা খোলা ছিল জোট সরকারের। কিন্তু, যে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে আপ দিল্লিতে নিজেদের ঘাঁটি শক্ত করেছে, সরকার গঠনে সেই কংগ্রেসের হাত ধরতে তারা নারাজ ছিল।
তবে কে গড়বে দিল্লির সরকার? বেশ কিছু দিন এই প্রশ্নই ঘুরে বেড়ায় রাজনৈতিক মহলে। শুধু রাজনীতির কারবারিরাই নন, আপ-এর উত্থান নিয়ে কৌতূহলী দেশবাসীও তাকিয়ে ছিলেন দিল্লির দিকে। কংগ্রেস, বিজেপি এবং আপ— কেউই পরস্পরের সঙ্গে জোট গড়তে উদ্যোগী হয়নি। কংগ্রেস যদিও প্রথমই জানিয়ে দেয় সাম্প্রদায়িক শক্তি বাদে অন্য যে কেউ সরকার গড়লে বাইরে থেকে তাকে সমর্থন করবে দল। অবশেষে কংগ্রেসের সেই সমর্থন নিয়েই দিল্লিতে সরকার গড়েন আপ-প্রধান অরবিন্দ কেজরীবাল। কিন্তু বিধানসভায় কংগ্রেস-বিজেপি-র বিরোধিতায় ‘জন লোকপাল বিল’ পাশ করাতে না পারায় এ বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেন ৪৯ দিনের মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবাল। ফলে আবার সেই অচলাবস্থা ফিরে আসে দিল্লির রাজনীতিকে ঘিরে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি জারি হয় রাষ্ট্রপতি শাসন।
তার পর থেকে কেটে গিয়েছে প্রায় সাড়ে ৮ মাস। কিন্তু স্থায়ী সরকারের মুখ দেখতে পাননি দিল্লিবাসী। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও সুপ্রিম কোর্ট সরকার গঠনের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বলে। কিন্তু সে বিষয়েও কেন্দ্রের ‘ঢিলেমি’তে রীতিমতো ‘ক্ষুব্ধ’ সুপ্রিম কোর্ট এ দিন আরও তত্পর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy