Advertisement
০৩ মে ২০২৪

ন্যানোস্কোপের পথ দেখিয়ে রসায়নে মিলল নোবেল

মাইক্রোস্কোপ থেকে ন্যানোস্কোপ। যা ছিল চোখের বহু দূরে তাও ধরা দিল। খুলে গেল অনেক গবেষণার পথ। এই পথ খুলে দেওয়ায় জন্য এ বার রসায়নে নোবেল পুরস্কারের দেওয়া হল এরিক বেটজিগ, স্টেফান ডব্লিউ হেল এবং উইলিয়াম ই মোয়েরনার-কে। এই তিন বিজ্ঞানীর আবিষ্কৃত পথে এখন জীবকোষের মধ্যে প্রতিটি অণুকে দেখা সম্ভব হচ্ছে।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৪ ১৭:৫৮
Share: Save:

মাইক্রোস্কোপ থেকে ন্যানোস্কোপ। যা ছিল চোখের বহু দূরে তাও ধরা দিল। খুলে গেল অনেক গবেষণার পথ। এই পথ খুলে দেওয়ায় জন্য এ বার রসায়নে নোবেল পুরস্কারের দেওয়া হল এরিক বেটজিগ, স্টেফান ডব্লিউ হেল এবং উইলিয়াম ই মোয়েরনার-কে।

এই তিন বিজ্ঞানীর আবিষ্কৃত পথে এখন জীবকোষের মধ্যে প্রতিটি অণুকে দেখা সম্ভব হচ্ছে। কী ভাবে অণুগুলি মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষের মধ্যে সংযোগ তৈরি করছে, কী ভাবে পারকিনসন্স, অ্যালঝাইমার্স, হান্টটিংটন রোগের জন্য দায়ী প্রোটিনেরা কী ভাবে জমে উঠছে বা নিষিক্ত ডিম্বানু থেকে ভ্রূণ তৈরির সময় প্রোটিনেরা কী ভাবে তৈরি হচ্ছে তা নজরে রাখা সম্ভব হচ্ছে এই বিজ্ঞানীদের দেখানো পথেই।

উইলিয়াম ই মোয়েরনার। ছবি: রয়টার্স

স্টেফান ডব্লিউ হেল। ছবি: এএফপি

এরিক বেটজিগ। ছবি: এএফপি

সেই ১৮৭৩-এ মাইক্রোস্কোপ বিশেষজ্ঞ আর্নেস্ট আবে জানিয়েছিলেন, প্রচলিত মাইক্রোস্কোপের সীমাবদ্ধ ক্ষমতার কথা। বলেছিলেন, মাইক্রোস্কোপের রেজলিউশন কখনই আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অর্ধেকের বেশি হতে পারে না। অর্থাৎ, তা কখনই ০.২ মাইক্রোমিটারের (এক মিলিমিটারের ৫০ লক্ষ ভাগের এক ভাগ) বেশি হতে পারে না। এই সীমাবদ্ধতাকেই টপকে গেলেন এরিক বেটজিগ, স্টেফান ডব্লিউ হেল এবং উইলিয়াম ই মোয়েরনার। এঁরা তিন জনে আলাদা আলাদা ভাবে দু’টি নীতি বার করেন।

জার্মানির গোয়েটিংগেন-এর ‘ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইন্সস্টিটিউট অফ বায়োফিজিক্যাল কেমিস্ট্রি’-এ অধ্যাপনার সময়ে স্টেফান তৈরি করলেন ‘স্টিমুলেটেড এমিশন ডেপ্লিশন মাইক্রোস্কোপি’ (এসটিএডি)। এটি তাঁর ১৯৯৪-এ প্রকাশিত পেপারের ব্যবহারিক প্রয়োগ। তখন তিনি আমেরিকার টার্কু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। ন্যানোস্কোপির জন্য তিনি দু’টি লেজার বিম ব্যবহার করলেন। একটি বিম আলোকিত অণুগুলিকে উজ্জ্বল করে তুলবে। অন্য লেজার বিমটি শুধু ওই ন্যানোমিটার অঞ্চল ছাড়া বাকি সব জায়গার আলোকিত অণুগুলির ঔজ্জ্বল্য কমাবে। এই ভাবে ন্যানোমিটার ধরে ধরে কোষের যে ছবি পাওয়া যায় তা আবে-র পদ্ধতিতে পাওয়া ছবির চেয়ে অনেক বেশি স্পষ্ট।

এই ন্যানোস্কোপিরই অন্য পথ দেখালেন এরিক বেটজিগ এবং উইলিয়াম ই মোয়েরনার। আলাদা আলাদা ভাবে কাজ করে তাঁরা আবিষ্কার করেন ‘সিঙ্গল মলিকিউল মাইক্রোস্কোপি’। এই পদ্ধতি একটি অলোকিত অণুগুলির ঔজ্জ্বল্য ইচ্ছে মতো বাড়ানো-কমানোর উপরে দাঁড়িয়ে আছে। বিজ্ঞানীরা এই পদ্ধতিতে একই জায়গার ছবি বার বার তোলেন। প্রতি বার পাশাপাশি থাকা কয়েকটি আলোকিত অণুর ঔজ্জ্বল্য বাড়ানো হয়। তার পরে ছবিগুলিকে সুপারইম্পোজ করে তৈরি হয় চূড়ান্ত ছবি। যা আবার আবে-র সীমাবদ্ধতাকে টপকে যায়। ২০০৬-এ এরিক বেটজিগ প্রথম এই পদ্ধতি ব্যবহার করেন। মার্কিনি এরিক এখন আমেরিকার অ্যাশবার্ন-এ ‘হাওয়ার্ড হিউজেস মেডিক্যাল ইন্সস্টিটিউট’-এর সঙ্গে যুক্ত। তাঁর এই কাজের সঙ্গে ১৯৯৭-এ ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত উইলিয়াম ই মোয়েরনারের পেপারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। উইলিয়াম ই মোয়েরনার এখন আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। এ বারে রসায়নে নোবেলের অর্থ তাই তিন ভাগে ভাগ হয়ে গেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

nobel chemistry
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE