ন’দিন নিজেদের হেফাজতে রাখার পর বুধবার বর্ধমান বিস্ফোরণ কাণ্ডে ধৃতদের আদালতে পেশ করল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)।
এ দিন দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ কলকাতা নগর দায়রা আদালতের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারক মধুমিতা রায়ের এজলাসে তোলা হয় বিস্ফোরণ কাণ্ডের তিন অভিযুক্ত রাজিয়া বিবি, আলিমা বিবি এবং হাসেম মোল্লাকে। এ দিন রাজিয়া ও আলিমা বিবির চোদ্দো দিনের জেল হেফাজত চেয়ে বিচারকের কাছে আবেদন জানান এনআইএ পক্ষের আইনজীবী শ্যামল ঘোষ। পাশাপাশি, হাসেম মোল্লাকে আরও এক বার এনআইএ নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়েও আবেদন জানিয়েছে। বিচারক হাসেম মোল্লাকে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত এবং রাজিয়া ও আলিমাকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
২ অক্টোবর বর্ধমানের খাগরাগড়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় মারা গিয়েছে দু’জন। ঘটনাস্থল থেকে ধরা পড়েছিল রাজিয়া বিবি, আলিমা বিবি এবং হাসেম মোল্লা। প্রথমে ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নেয় সিআইডি। ন’দিন ধরে জেরা করার পর সিআইডি ধৃতদের ১৩ অক্টোবর নগর দায়রা আদালতের মুখ্য ভারপ্রাপ্ত বিচারক গোপালচন্দ্র কর্মকারের এজলাসে তোলে। ওই দিন বিচারক ধৃতদের তিন জনকেই ২২ অক্টোবর পর্যন্ত এনআইএ-র হেফাজতে থাকার নির্দেশ দেন। এ দিন ফের ধৃতদের নগর দায়রা আদালতে তোলা হয়।
এ দিন এনআইএ পক্ষের আইনজীবী শ্যামলবাবু আদালতে জানান, এনআইএ গত ন’দিন ধরে রাজিয়া ও আলিমা বিবিকে জেরা করেছে। তাদের কাছ থেকে বিস্ফোরণ সংক্রান্ত আর কোনও নতুন তথ্য জানার নেই সংস্থার। ফলে, আরও এক বার তাদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করার প্রয়োজন নেই বলে এ দিন আদালতে জানিয়েছেন এনআইএ অফিসারেরা। সেই মতো রাজিয়া ও আলিমার চোদ্দো দিনের জেল হেফাজত চেয়ে বিচারকের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। অন্য দিকে, এনআইএ-র অফিসারেরা মনে করছেন, হাসেম মোল্লাকে জেরা করলে তার কাছ থেকে বিস্ফোরণ সংক্রান্ত আরও অনেক গুরুত্বর্পূণ তথ্য জানা যেতে পারে। তাই হাসেনকে আরও দশ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানিয়েছে এনআইএ।
বিস্ফোরণ কাণ্ডে নিহতদের পাশাপাশি আহত হয়েছিল আব্দুল হাকিম নামে আরও এক জঙ্গি। ঘটনার পর থেকে সে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সূত্রের খবর, হাসপাতালে ভর্তি থাকার জন্য হাকিমকে সেখানে গিয়ে জেরা করতে পারলেও নিজেদের হেফাজতে নিতে পারেনি এনআইএ। এ দিন আদালতে শ্যামলবাবু বিচারককে জানান, হাকিমের স্বাস্থ্য রিপোর্ট হাতে পেলে এনআইএ অফিসারেরা সিদ্ধান্ত নেবেন তাকে হেফাজতে নেওয়া হবে কি না। এই পরিস্থিতিতে এসএসকেএমের তরফে হাকিমের শারীরিক অবস্থা সংক্রান্ত কোনও তথ্যই সঠিক ভাবে দিচ্ছেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সুপারের কাছ থেকে অবিলম্বে হাকিমের স্বাস্থ্য রিপোর্ট চেয়ে পাঠানোর জন্যও এ দিন আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে।
এনআইএ-র তোলা এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসএসকেএম-এর অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র বলেন, ‘‘এনআইএ আমাদের কাছে রিপোর্ট না চাইলে আমরা তা দেব কী ভাবে? ওঁরা আসেন, নিজেদের মতো জেরা করে চলে যান, আমাদের কোনও কিছু জানানও না। রিপোর্ট দিতে আমাদের কোনও অসুবিধে নেই। ওঁরা চাইলেই আমরা রিপোর্ট দিয়ে দেব।” এসএসকেএম-এর সুপারকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে হাকিমের পূর্ণ স্বাস্থ্য রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy