Advertisement
E-Paper

বাস ধর্মঘট নিয়ে অব্যাহত জটিলতা

মুকুল রায়ের দৌত্যে শেষ পর্যন্ত বুধবার থেকে ডাকা বাহাত্তর ঘণ্টার বাস ধর্মঘট সম্ভবত তুলতে চলেছেন বাসমালিক সংগঠনগুলি। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠকের পর বাসমালিক সংগঠন বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের নেতা দীপক সরকার সোমবার রাতে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে নেই। এই অবস্থায় মুকুলবাবু অনেক বার ধর্মঘট তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। বাধ্য হয়েই আমরা ধর্মঘট তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৪ ১৩:১৬

মুকুল রায়ের দৌত্যে শেষ পর্যন্ত বুধবার থেকে ডাকা বাহাত্তর ঘণ্টার বাস ধর্মঘট সম্ভবত তুলতে চলেছেন বাসমালিক সংগঠনগুলি। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠকের পর বাসমালিক সংগঠন বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের নেতা দীপক সরকার সোমবার রাতে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে নেই। এই অবস্থায় মুকুলবাবু অনেক বার ধর্মঘট তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। বাধ্য হয়েই আমরা ধর্মঘট তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

কিন্তু মুকুলবাবু এ দিন প্রকাশ্যে ভাড়াবৃদ্ধি সংক্রান্ত কোনও বিবৃতি দেননি। ফলে অন্য সংগঠনগুলি এখনও ধর্মঘটে অটল। মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি-র অবশেষ দাঁ-র কথায়, “সরকারের দিক থেকে ভাড়াবৃদ্ধি সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা না-পেলে ধর্মঘট প্রত্যাহারের প্রশ্ন ওঠে না।” সংগঠন-সূত্রের খবর, নিচুতলার বাস-মালিকদের একাংশও ধর্মঘট করার পক্ষপাতী। এক মালিকের আক্ষেপ, “সরকার বারবার আশ্বাস দিয়েছে, কমিটি বানিয়েছে। কমিটিও ভাড়াবৃদ্ধির পক্ষে রায় দিয়েছে। তবু মুখ্যমন্ত্রী নারাজ! এর পরে ধর্মঘট ছাড়া উপায় কী?”

শাসকদল কী বলছে?

মুকুলবাবুর মুখে এ দিন ভাড়াবৃদ্ধি সংক্রান্ত কিছু শোনা যায়নি। তিনি শুধু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বাইরে। বাংলার উন্নয়নের স্বার্থে শিল্প আনতে গিয়েছেন। বাস ধর্মঘট হলে তো সাধারণ মানুষের হয়রানি হবে! তাই আমি মালিকদের অনুরোধ করেছি, ধর্মঘট স্থগিত রাখুন। মুখ্যমন্ত্রী ফিরলে আলোচনা হবে।” পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের বক্তব্য, “মালিকদের এখনও অনুরোধ করছি, ধর্মঘট তুলে নিন। রাজ্যের উন্নয়নকে সামনে রেখে মুখ্যমন্ত্রী বিদেশ সফরে গিয়েছেন। এখন বাস ধর্মঘট হলে অশোভনীয় হবে।” মুকুলবাবু অবশ্য আশাবাদী, মালিকেরা শেষমেশ ধর্মঘট তুলে নেবেন। “আমার ধারণা, জট খুলবে।” মন্তব্য তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের।

এদিকে সোমবার সকালে থেকেই কলকাতার নানা প্রান্তে ট্যাক্সির সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। এ দিন দুপুরে ধর্মতলায় বেশ কয়েকটি বিরোধী শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে ‘প্রশাসনিক জুলুম’-এর প্রতিবাদে ট্যাক্সিচালকদের সমাবেশ। সেই সমাবেশে যোগ দিতে বেশির ভাগ চালকই এ দিন পথে ট্যাক্সি নামাননি। ধর্মঘটের ডাক না দিয়েও শহরের রাস্তা থেকে কার্যত উধাও হয়ে গিয়েছে ট্যাক্সি। শিয়ালদহ-হাওড়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশনগুলিতেও ট্যাক্সির দেখা মেলেনি। স্টেশন চত্বরে হাতে গোনা যে কয়েকটি ট্যাক্সি দেখা গিয়েছে, গন্তব্যে নিয়ে যেতে তাদের দরও ছিল আকাশছোঁয়া। যে যেমন পেরেছেন ভাড়া হাঁকিয়েছেন। যাত্রীদের অসহায়তার পুরো সুযোগ নিয়েছে অটো এবং ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বেশ কিছু গাড়ি। এমনকী, হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়ার জন্যও ট্যাক্সি মেলেনি বলে অভিযোগ উঠেছে।

ট্যাক্সি কম বলে যাঁরা বাসের উপর ভরসা করেছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতাও খুব একটা ভাল নয়। রাস্তায় দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও পাওয়া যায়নি বিভিন্ন রুটের বাস। এমনিতেই বাসের সংখ্যা দীর্ঘ দিন ধরেই কমকে কমতে প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। বেশির ভাগ মালিকই লোকসানের হাত থেকে বাঁচতে বাস নামাতে চান না। ভাড়া না বাড়ানো পর্যন্ত পরিস্থিতি যে স্বাভাবিক হবে না, সে কথা তাঁরা সরকারের কানে তুলেছেন বহু বার। বাস-মালিকদের সংগঠনের তরফে বেশ কয়েক বার ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। কিন্তু শেষমেশ প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে বা প্রতিশ্রুতিতে তা তুলেও নেওয়া হয়। পরিবহণ ব্যবস্থার বেহাল দশা টের পেয়ে মন্ত্রী থেকে শাসকদলের নেতৃত্ব, কেউই বাদ যাননি সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসতে। কিন্তু কাজের কাজ প্রায় কিছুই হয়নি।

যে দুর্ভোগ দিয়ে সপ্তাহ শুরু হল, সপ্তাহ শেষে তার যে কী হাল হবে, তা ভেবেই কার্যত উদ্বিগ্ন শহরবাসী।

taxi bus kolkata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy