E-Paper

বার্ধক্য ভাতা মিলবে কবে? প্রচারে গিয়ে প্রশ্নের মুখে তৃণমূল

আগে মাসিক ১০০০ টাকার ওই ভাতার জন্য সাধারণ শ্রেণিভুক্ত উপভোক্তার পরিবারের মাসিক আয় এক হাজার টাকার কম হতে হবে, এমন শর্ত ছিল।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:২৫
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশমতো ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ নিয়ে ভোটের প্রচার তো চলছেই। এ ছাড়া, কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী-সহ রাজ্য সরকারের জনপ্রিয় প্রকল্পগুলির কথা প্রচারে বেরিয়ে তুলছেন আরামবাগের তৃণমূল প্রার্থী মিতালি বাগ। কিন্তু তাঁকে বেশি শুনতে হচ্ছে, বার্ধক্য ভাতা (সাধারণ শ্রেণিভুক্তদের জন্য) নিয়ে প্রশ্ন। ওই ভাতা মিলছে না বলে অভিযোগ। পাড়াঘরে তৃণমূলের অন্য নেতারাও প্রচারে বেরিয়ে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বিব্রত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

আরামবাগের বাতালনের প্রধান দিলীপ রায়ের কথাই ধরা যাক। কী বলছেন তিনি? দিলীপের কথায়, ‘‘প্রচারে গেলে মানুষজন বার্ধক্য ভাতা কবে পাবেন, জানতে চাইছেন। কিছু মানুষের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে বলে জেনেছি। দফায় দফায় সকলের অ্যাকাউন্টেই টাকা ঢুকে যাবে বলছি।” প্রচারে গিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়া গোঘাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ তথা আরমবাগ সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য প্রদীপ রায় বলেন, “সাধারণ শ্রেণিভুক্তদের বার্ধক্য ভাতাই প্রধানত দাবি দেখছি। মানুষকে জুতসই উত্তর দিতে পারছি না।”

প্রার্থী মিতালি সকলকে আশ্বস্ত করলেও কবে ভাতা মিলবে, সে উত্তর দিতে পারছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘ওটা মানুষের ক্ষোভ নয়, আবদার। কিছু মানুষের ভাতা তাঁদের অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। সবারই চলে আসবে।” গ্রামবাসীদের এত প্রশ্নের প্রভাব ভোটে পড়বে না দাবি করে দলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার যুব সভাপতি পলাশ রায় বলেন, “দিদির গ্যারান্টি নিয়ে মানুষের কোনও সন্দেহ নেই। প্রত্যেক মানুষই বার্ধক্য ভাতা পাবেন।”

রাজ্যের সমাজকল্যাণ দফতরের অধীন প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্লক এবং জেলা প্রশাসনের কর্তারা কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। তবে, প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলি জেলার মোট ১৮টি ব্লকপিছু ৮-১২ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। কিন্তু কত জনের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে, সেই হিসাব মেলেনি।

আগে মাসিক ১০০০ টাকার ওই ভাতার জন্য সাধারণ শ্রেণিভুক্ত উপভোক্তার পরিবারের মাসিক আয় এক হাজার টাকার কম হতে হবে, এমন শর্ত ছিল। ২০২৩ সালের ৩১ অগস্ট চালু হওয়া সপ্তম দফার ‘দুয়ারে সরকার’ থেকে আয়ের শর্ত তুলে দিয়ে প্রকল্পটি নতুন করে চালু হয়। কিন্তু বেশির ভাগ উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে টাকা না আসায় ভাতার ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান দলের নেতা এবং পঞ্চায়েত
প্রধানদের একাংশ।

উপভোক্তা হিসেবে আবেদনকারীদের মধ্যে ঘোষপুরের শেখ জহুর আলি, তিরোলের সুশান্ত নন্দী প্রমুখের ক্ষোভ, মাস আটেক ধরে ব্লক অফিস এবং পঞ্চায়েতে খোঁজ নিতে গেলে শুধু পোর্টাল খুলে নাম অনুমোদন হয়েছে বলে দেখানো হচ্ছে। খানাকুলের ঘোষপুর পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলার সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি হায়দার আলির বক্তব্য, “অধিকাংশের ভাতা আসেনি। শীঘ্রই চলে যাবে।”

বার্ধক্য ভাতা নিয়ে মানুষের ক্ষোভকে হাতিয়ার করতে চাইছে বিরোধীরা। বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, ‘‘শাসকদলের প্রকল্পগুলির সিংহভাগই যে ভাঁওতা, তা মানুষ জানেন।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খালি পোর্টালে নাম তুলে মানুষকে আশায় রেখে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে বলে আমাদের মনে হয়েছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Arambagh TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy