E-Paper

ভোটের খরচ তুলতে মানুষের দুয়ারে সিপিএম

অন্য দিকে অন্যান্য দল এ সবের তোয়াক্কা করে না। তবে অনেক বিরোধী দলের কটাক্ষ, ২০১১-এর আগে তো এ ভাবে তেমন দেখা যেত না।

সন্দীপ পাল

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৪ ০৯:১৬
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নির্বাচনী বন্ড নিয়ে সারা দেশ তোলপাড়। নির্বাচনী বন্ডের টাকা বাজেয়াপ্ত করার দাবি তুলেছে সিপিএম। এবার সেই সিপিএমই নির্বাচনের খরচ তুলতে প্রতিটি বুথ থেকে অন্তত আট থেকে দশহাজার টাকা তোলার লক্ষমাত্রা রাখল। যাতে বুথের দেওয়াল চুনকাম করা থেকে দেওয়াল লেখা, ঝান্ডা-ফেস্টুন, মাইক, ভোটের দিনের বুথ খরচ সবই উঠে আসে।

শুধু কৌটো হাতেই নয়, এবার রীতিমত ‘খোলা চিঠি’ দিয়ে সিপিএম ভোটারদের কাছ থেকে নির্বাচনী তহবিলের অর্থ সংগ্রহ শুরু করেছে। ওই খোলা চিঠিতে যেমন টাকা চাওয়ার আবেদন আছে। তেমনি নির্বাচনী বন্ড থেকে তৃণমূল, বিজেপির আয়ের হিসেবেরও উল্লেখ আছে। নির্বাচনের জন্য সিপিএম পার্টির অর্থ সংগ্রহ করার বিষয়টি নতুন নয়। তা ছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও যথারীতি দলীয় কর্মীদের এক দিনের রোজগার নির্বাচনী তহবিলে দিতে বলা হয়েছে।

আপাতত জেলার বিভিন্ন প্রান্তে—কালীগঞ্জ হোক বা কৃষ্ণনগর, সিপিএম কর্মীরা লাল ঝান্ডা, কৌটো, রসিদ, হাতে নিয়ে পথে নামছেন। আবার কালীগঞ্জের বুথে বুথে দেখা গেল অভিনব পদ্ধতিতে ভোটারদের কাছে খোলা চিঠি ছাপিয়ে নির্বাচনে আর্থিক সহায়তা চাওয়া হয়েছে। সিপিএমের এক বুথ কর্মীর কথায়, “অন্য দলের মতো তাদের কাছে প্রার্থী বা পার্টি ফান্ড থেকে নির্বাচনের খরচ বাবদ টাকা আসে না। তাঁদেরকেই টাকা তুলতে হয়। সেই টাকা দিয়ে দেওয়ালে চুনকাম থেকে বুথে খরচ করতে হয়। তাই অনেক বুথেই অদক্ষ হাতে দেওয়াল লিখতেও হয়।”

অন্য দিকে অন্যান্য দল এ সবের তোয়াক্কা করে না। তবে অনেক বিরোধী দলের কটাক্ষ, ২০১১-এর আগে তো এ ভাবে তেমন দেখা যেত না। ভাঁড়ায় টান পরেছে নাকি! বর্তমানে পার্টি সদস্য কমেছে, তাই কর্মীদের থেকে লেভি আদায়ও কমেছে। আবার ক্ষমতায় না থাকায় দলের তহবিলে ‘দান’ ও কমে গিয়েছে। তাই এখন বাধ্য হয়েই রাস্তায় নামতে হয়েছে।

সিপিএম নেতাদের অবশ্য দাবি, আগেও নির্বাচনের জন্য রাস্তায় ঘুরে মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলা হত। অন্য রাজনৈতিক দলের থেকে বামেদের খরচও কম। কারণ কর্মীরা নিজেরা দেওয়াল লেখেন, নিজেরাই পোস্টার লেখেন।

বৃহস্পতিবার সকালে কালীগঞ্জ এলাকায় দেখা গেল সিপিএমের জেলা কমিটির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস আচার্যের নেতৃত্বে অর্থ সংগ্রহ অভিযান। নাকাশিপাড়া সহ অন্যান্য ব্লকেও দেখা গেল সেই ছবি। এক বাম সদস্যের কথায়, “প্রতি বিধানসভা পিছু ১০ লক্ষ টাকা তোলার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।” দেবাশিস আচার্য কার্যত চিঠি দিয়ে বাড়ি বাড়ি অর্থ সংগ্রহের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “সারা দেশে নির্বাচনী বন্ডের বিরুদ্ধে সিপিএমই একমাত্র সোচ্চার হয়েছে। সুপ্রিয় কোর্টের রায়ে প্রমাণ হয়েছে এ কাজ বেআইনি ও অসাংবিধানিক। তাই বরাবরের মতো এবারও সাধারণ মানুষের দানেই নির্বাচনে লড়াই করবে সিপিএম।”

যদিও বিজেপির মিডিয়া কনভেনার সন্দীপ মজুমদারের কথায়, ‘‘সিপিএমের এটা সম্পূর্ণ লোকদেখানো। ৩৪ বছর ওরা রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল। কোটি-কোটি টাকা তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে আমদানি করেছে। এটা সম্পূর্ণ ‘আইওয়াশ’। দু’পাঁচ টাকা তুলে নির্বাচন চালানো সম্ভব! সবাই বোঝে। ওদের টাকাও আলিমুদ্দিন বা বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে আসে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 CPIM Ranaghat

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy