Advertisement
E-Paper

সিএএ: কেন্দ্রের পোর্টালে আবেদন করবেন না! তা হলেই নাগরিকত্ব যাবে, সতর্ক করে দিলেন মমতা

কেন্দ্রের আইন বাস্তবায়িত হওয়া কোনও রাজ্য সরকার রুখতে পারে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তবে মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি বাংলার কারও নাগরিকত্ব যেতে দেবেন না। সবাইকে তিনি আশ্রয় দেবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৪ ১৪:৫৯
Mamata Banerjee

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।

কেন্দ্রের চালু-করা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে নাগরিকদের সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার হাবড়ার প্রশাসনিক সভা থেকে মমতা বলেন, ‘‘একটা কথা মন দিয়ে শুনে নিন! আপনারা কেউ নাগরিকত্বের জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন করবেন না। করলেই আপনাদের নাগরিকত্ব চলে যাবে। আপনাকে বেআইনি অনুপ্রবেশকারী বলবে। আপনার সম্পত্তি কেড়ে নেবে। ওই ফাঁদে খবরদার পা দেবেন না!’’

আইন তৈরি হয়েছিল ২০২০ সালে। তার পর সোমবার নাগরিকত্ব সংশোধনী সিএএ রুল জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সোমবারেই নবান্ন থেকে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। মঙ্গলবার হাবড়ার সরকারি কর্মসূচি থেকে কার্যত গর্জে উঠেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রের এই আইন আদৌ বৈধ কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন মমতা। তাঁর ক‌থায়, ‘‘এটা বৈধ কি না, তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কোনও ক্ল্যারিটি (স্বচ্ছতা) নেই। টোটাল ভাঁওতা।’’

বস্তুত, কেন্দ্রের আইন বাস্তবায়িত হওয়া কোনও রাজ্য সরকার রুখতে পারে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তবে মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি বাংলার কারও নাগরিকত্ব যেতে দেবেন না। সবাইকে তিনি আশ্রয় দেবেন। মমতা ছাড়া সিএএ বলবৎ করার ক্ষেত্রে বামশাসিত কেরলও একই ভাবে ‘কট্টর’ অবস্থান নিয়েছে। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও বলেছেন, তাঁদের রাজ্যে সিএএ বাস্তবায়িত হতে দেবেন না। এ বিষয়ে বিজেপির বক্তব্য, কেরল ও বাংলা যে এই অবস্থান নিতে পারে, তা কেন্দ্রীয় সরকরারের ধারণার মধ্যেই ছিল। সে কারণেই এই আইন বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের বিশেষ ভূমিকার সুযোগ রাখা হয়নি।

হাবড়ার সভা থেকে মমতা বলেন, ‘‘ভোটের আগে বিজেপি বিভাজনের খেলা খেলতেই এটা করেছে। তা হলে চার বছর বসে রইল কেন? ওরা আবার বাংলাটাকে ভাগ করতে চায়। বাঙালিকে তাড়াতে চায়।’’ এই প্রসঙ্গেই মমতা ২০১৯ সালে অসমের ঘটনার উল্লেখ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘২০১৯ সালে অসমে এনআরসির নামে ১৯ লক্ষ মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ১৩ লক্ষ বাঙালি হিন্দু।’’

রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, বিজেপি ‘মেরুকরণ’-এর লক্ষ্যেই সিএএ কার্যকর করার জন্য ভোটের আগের সময়কে বেছে নিয়েছে। আবার তাঁদের এ-ও বক্তব্য, পাল্টা ‘মেরুকরণ’-এর লক্ষ্যেই বাংলায় তৃণমূল এবং কেরলে সিপিএম তথা বামেরা তার কট্টর বিরোধিতা করছে। তাঁদের মতে, বঙ্গে তৃণমূল এবং কেরলে সিপিএমের উদ্দেশ্য অভিন্ন— সংখ্যালঘু ভোটকে তাদের দিকে ধরে রাখা। বাংলায় যেমন সংখ্যালঘু বলতে মুসলিমেরাই বেশি, কেরলে মুসলিমদের পাশাপাশি খ্রিস্টানেরাও রয়েছেন।

মঙ্গলবার হাবড়ার সভা থেকে মমতা এ-ও জানিয়েছেন, এই আইন নিয়ে তিনি আইনজ্ঞদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এটা করা হয়েছে মানুষকে হয়রান করার জন্য। আর দুটো-তিনটে সিট জেতার জন্য।’’ পাশাপাশি, ‘অভয়’ও দিতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেছেন, ‘‘ওদের আইনটাকে সরিয়ে ফেলে দিন। এখানে বহাল তবিয়তে থাকবেন। কোনও ভাঁওতায় পা দেবেন না। তা হলে এ কূল-ও কূল দু’কূল যাবে। জমিদারদের বিরুদ্ধে আমি আপনাদের পাহারাদার।’’

সিএএ-এর ‘ফর্ম’ নিয়েও মন্তব্য করেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘ফর্মে এক জায়গায় লেখা আছে, বাবার বার্থ সার্টিফিকেটের কথা। যাঁদের এখন ৫০-৬০ বছর বয়স, তাঁদের সবার বাবার বার্থ সার্টিফিকেট আছে? আমি তো আমার বাবা-মায়ের জন্মদিনই জানি না।’’

Lok Sabha Election 2024 CAA Mamata Banerjee BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy