E-Paper

কোন্দল নিয়ে উষ্মা মুখ্যমন্ত্রীর

বিধানসভা ভোটের পরে রায়নার বিধায়ক শম্পা ধাড়া ও রায়না ১ ব্লকের সভাপতি বামদেব মণ্ডলের গোষ্ঠীর মধ্যে ‘অশান্তির’ ঘটনা ঘটেছে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:২৪
মুখ্যমন্ত্রী  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

গত লোকসভা নির্বাচনে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের তিনটি আসনের দু’টি তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছিল। পরে উপ-নির্বাচনে আসানসোল আসনটি পুনরুদ্ধার করে তারা। এ বার তিনটি আসনই জেতার লক্ষ্যে ঘর গোছানোর বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বিকেলে রেড রোডে তৃণমূলের ধর্নামঞ্চের পিছনে দুই জেলার নেতাদের নিয়ে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সকলকে ‘এক সঙ্গে’ চলার পরামর্শ দেন। বিদ্যুৎমন্ত্রী তথা রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অরূপ বিশ্বাসের নেতৃত্বে দুই জেলার কয়েক জন নেতাকে নিয়ে ‘কোর কমিটি’ গড়ে দেন তৃণমূল নেত্রী।

বিধানসভা ভোটের পরে রায়নার বিধায়ক শম্পা ধাড়া ও রায়না ১ ব্লকের সভাপতি বামদেব মণ্ডলের গোষ্ঠীর মধ্যে ‘অশান্তির’ ঘটনা ঘটেছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বারবার বসলেও সম্পর্কের উন্নতি হয়নি। এ দিন দু’জনকেই কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে হাজির একাধিক নেতার দাবি, ওই দু’জনের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন ‘দল পদ দিয়েছে, কাজের সুযোগ দিয়েছে, প্রয়োজন হলে দল সে পদ কেড়েও নিতে পারে। সেটা মাথায় রাখা উচিত’। পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন করেন, ‘তোমাদের ঝামেলা কবে মিটবে’? শম্পা অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি করেন, তাঁদের মধ্যে ‘অশান্তি’ নেই।

পূর্বস্থলীতেও ‘কোন্দল’ রয়েছে দলে। তৃণমূল সূত্রের খবর, রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথকে তা মেটানোর দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে স্বপন আশ্বাস দেন, গত লোকসভা ভোটে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থী যত ভোটে জিতেছিলেন, এ বার তার দ্বিগুণ ভোটে দলকে জেতানো হবে। দলেরই এক নেতার বিরুদ্ধে ‘অত্যাচারের’ অভিযোগ তুলে কেঁদে ফেলেন মেমারি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ময়না হালদার টুডু। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় মেমারি ২ ব্লক সভাপতি হরিসাধন ঘোষকে। দু’জনকে বৈঠক করে সমস্যা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। হরিসাধনের দাবি, এখন আর কোনও সমস্যা নেই। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে কালনা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিন জনকে ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরপ্রধান আনন্দ দত্ত, উপপুরপ্রধান তপন পোড়েল ও বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ। বিধায়ক সেখানে ছিলেন না। মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, কালনা শহরে এত গন্ডগোল কেন, মারপিট হচ্ছে কেন। গোলমাল না মিটলে বহিষ্কার করা হবে বা পুলিশ দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, জানান তিনি।

কয়েক দিন আগে গলসিতে দলের দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল হয়। বিবাদ মেটাতে দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেছিলেন অরূপ। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী গলসির ব্লক সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করেন, তিনি কি এলাকায় ঘোরেন? এর পরেই সবাইকে এক সঙ্গে চলার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে হাজির তৃণমূলের একাধিক নেতা জানান, জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে জেলায় এবং আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দারকে এলাকায় আরও বেশি সময় দেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পূর্ব বর্ধমানের দায়িত্ব এ দিন ফের অরূপের কাঁধে দেন মুখ্যমন্ত্রী। দলের এক নেতা বলেন, “দুই জেলার ভোটযুদ্ধের সেনাপতি অরূপেই।’’

সহ প্রতিবেদন: কেদারনাথ ভট্টাচার্য

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Mamata Banerjee

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy