গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
হুগলির রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কৃষ্ণনগরের মহুয়া মৈত্র— এই দুই তৃণমূল প্রার্থীর জন্য ‘চিন্তায়’ ছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার দলের বৈঠকে সে কথা গোপন করলেন না তিনি। দু’জনকেই জয়ের জন্য ‘শাবাশি’ দিয়েছেন মমতা। পাশাপাশি, বিষ্ণুপুরের পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলকে নথিপত্র তৈরি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী।
তৃণমূল সূত্রের খবর, শনিবার কালীঘাটে তাঁর বাড়ির লাগোয়া দফতরে আহূত বৈঠকে মমতা বলেছেন, রচনা আর মহুয়াকে নিয়ে তিনি চিন্তায় ছিলেন। কারণ, রচনা রাজনীতিতে নতুন এসেছেন। আর মহুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দু’বার সভা করতে গিয়েছিলেন। সূত্রের খবর, কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মমতা এ-ও বলেছেন, মহুয়া শুরু থেকেই ‘কনফিডেন্ট’ (আত্মবিশ্বাসী) ছিলেন। তিনি মমতাকে বলেছিলেন, জিতবেনই। এবং জিতে দেখিয়েছেন।
গত বার হুগলি লোকসভায় বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কাছে হেরে গিয়েছিলেন তৃণমূলের পোড়খাওয়া রাজনীতিক রত্না দে নাগ। এ বার হুগলি ‘পুনরুদ্ধারে’ দিদি মমতা নামিয়েছিলেন টেলিভিশনের ‘দিদি নম্বর ওয়ান’কে। রচনা যে হেতু রাজনীতিতে নবাগতা, তাই অনেকেই ‘চাপে’ ছিলেন। শনিবার মমতা জানিয়েছেন, তাঁরও ‘উদ্বেগ’ কাজ করেছিল। তবে রচনার জয় সুনিশ্চিত করার জন্য সিঙ্গুরের বেচারাম মান্না, ধনেখালির অসীমা পাত্র এবং পান্ডুয়ার নেতাদের প্রশংসা করেছেন তৃণমূলনেত্রী। রচনাকে ভাল করে কাজ করার পরামর্শও দিয়েছেন মমতা।
তবে মহুয়াকে নিয়ে তৃণমূলের অনেক নেতাই ঘরোয়া আলোচনায় সংশয় প্রকাশ করতেন। সম্ভবত তাঁদের কথা শুনে নেত্রী মমতার চিন্তা বেড়েছিল মহুয়াকে নিয়ে। ভোটঘোষণার আগে-পরে মোদীর দু’বার কৃষ্ণনগরে যাওয়া দেখে রাজনৈতিক মহলের অনেকেই বলেছিলেন, সংসদ থেকে বহিষ্কৃত মহুয়া যাতে সংসদে আর যেতে না পারেন, তার জন্য সব রকম চেষ্টা করছে বিজেপি।
উল্লেখ্য, এ বারের লোকসভায় তৃণমূলের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হয়েছিল গত ১০ মার্চ ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে। তবে মহুয়া যে কৃষ্ণনগরে প্রার্থী হচ্ছেন, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল গত বছর নভেম্বর মাসেই। যখন নেতাজি ইন্ডোরের মঞ্চ থেকে মমতা বলেছিলেন, ‘‘আর কয়েক মাস পর নির্বাচন। এখন ওরা মহুয়াকে তাড়াতে চাইছে। এরা কি পাগল? মহুয়া তো আবার জিতে সংসদে যাবে।’’
গণনায় দীর্ঘ টানাপড়েনের পর বিষ্ণুপুর লোকসভা আসনে হেরে গিয়েছেন তৃণমূলের সুজাতা মণ্ডল। জিতেছেন বিজেপির সৌমিত্র খাঁ। ভোটের ব্যবধান সাড়ে পাঁচ হাজার। সৌমিত্রের প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতাকে সেখানে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। সূত্রের খবর, বৈঠকে সুজাতার উদ্দেশে মমতা বলেছেন, তিনি যেন নথিপত্র তৈরি রাখেন। দরকারে বিষ্ণুপুর নিয়ে তৃণমূল মামলাও করতে পারে। সুজাতা যাতে মানসিক ভাবে ‘শক্ত’ থাকেন, সেই বার্তাও দিয়েছেন দলনেত্রী। এ বার বাঁকুড়া লোকসভা আসনটি বিজেপির হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। তবে বিষ্ণুপুর পারেনি। মমতা ওই বিষয়ে বাঁকুড়া জেলার নেতাদের একাংশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। বৈঠকের পর সুজাতাও বলেছিলেন, তাঁর হারের নেপথ্যে দলেরই কয়েক জন বিধায়কের ভূমিকা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy