Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
PM Narendra Modi

মহারাজা বনাম নবাব, রাজা বনাম বাদশা, শিবাজি বনাম ঔরঙ্গজ়েব! মেরুকরণকে নতুন পোশাক প্রধানমন্ত্রীর

গত কয়েক দিনের প্রচারের মতো মেরুকরণের অন্য সংলাপগুলিকেও আজ ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে মোদীকে। তুলেছেন ‘এক্স রে’ এবং ‘উত্তরাধিকার করের’ প্রসঙ্গ।

PM Narendra Modi.

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৪৩
Share: Save:

মহারাজা বনাম নবাব। রাজা বনাম বাদশা। শিবাজি বনাম ঔরঙ্গজ়েব।

মেরুকরণকে নতুন পোশাকে নিয়ে এলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লোকসভা নির্বাচনে প্রথম দফার ভোটদানের হার কম হওয়ার পর মেরুকরণকে প্রচারের কেন্দ্রে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় দফাতেও ভোটদান পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় আজ কর্নাটকের ভোট প্রচারে হিন্দু-মুসলমান বিভাজনকে নতুন ভাবে এনে রাহুল গান্ধী তথা কংগ্রেসকে নিশানা করলেন তিনি। সেই সঙ্গে আজ কর্নাটকের প্রতিটি জনসভার শেষে তাঁর আহ্বান, ‘‘গরম যতই হোক, আগে ভোটদান পরে জল পান।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

রাহুলকে ‘শাহজ়াদা’ উল্লেখ করে মোদীর বক্তব্য, ‘‘স্বাধীনতার লড়াইয়ের সময়ে থেকে কংগ্রেস ভোটব্যাঙ্ক তোষণের খাতায় নাম লিখিয়েছে। কংগ্রেসের শাহজাদা সেই পাপকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর তাজা বয়ান, ভারতের রাজা মহারাজারা অত্যাচারী ছিলেন। তাঁরা নিজেদের মর্জিমাফিক গরিবের জমি ছিনিয়ে নিতেন। শাহজ়াদার এই বয়ান তোষণের বয়ান। কংগ্রেস এ কথা বলে শিবাজিকে অপমান করেছেন। ভেবে দেখুন, তিনি মহারাজাকে খারাপ বলছেন, অথচ নিজ়াম, বাদশা, সুলতানেরা ভারতবাসীর উপরে যে অত্যাচার করেছেন তা নিয়ে শাহজ়াদার মুখে তালা, কথা বন্ধ।’’ মোদীর বক্তব্য, ‘‘যে ঔরঙ্গজ়েব ভারতের মন্দির ধ্বংস করেছেন, অপবিত্র করেছেন, তাঁর কথা এক বারও শাহজ়াদার মনে পড়ে না। যারা ভারতে এসে লুট চালিয়েছে, গো হত্যা করেছে, ভারতের বিভাজনে বড় ভূমিকা নিয়েছে, তাদের মনে পড়ে না। কেউ ভাবতে পারেন, বারাণসীর রাজা ছাড়া সেখানে বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি হত? মহারানি অহল্যাবাঈ হোলকর মন্দির পুনর্নির্মাণ করে আমাদের বিশ্বাসকে রক্ষা করেছিলেন। বরোদার মহারাজ বাবাসাহেব অম্বেডকরের প্রতিভার পরিচয় পেয়ে তাঁকে বিদেশে পড়তে পাঠান। অথচ কংগ্রেসের শাহজ়াদার এ সব মনেই পড়ে না! নবাব সুলতানদের বিরুদ্ধে একটি শব্দও নেই তাঁর। এই তোষণের মানসিকতা কংগ্রেসের ইস্তাহারেও রয়েছে।’’

প্রকৃতপক্ষে রাহুল তাঁর প্রচারে বলেছেন, ‘‘আগে রাজা মহারাজার শাসনে তাঁরা যা চাইতেন তাই করতেন। জমি জায়গার দরকার হলে মানুষের কাছ থেকে হরণ করতেন। কংগ্রেস দেশবাসীর সঙ্গে মিলে দেশকে স্বাধীনতা দিয়েছে, গণতন্ত্র এনেছে, সংবিধান উপহার দিয়েছে।" আজ মোদীর এই আক্রমণের পরে এআইসিসি-র নেতা মানিকম টেগোর সাম্প্রতিক বাজেট অধিবেশনের একটি ক্লিপ তুলে পোস্ট করেছেন তাঁর সমাজমাধ্যমে যেখানে মোদীকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘এই সংসদে আজ ইংরেজদের কথা বলা হয়েছে। রাজা মহারাজাদের তো এক সময়ে ইংরেজদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক ছিল।’’ কংগ্রেসের বক্তব্য, মোদী যে রাজা-মহারাজাদের ইংরেজ-ঘনিষ্ঠতার সমালোচনা করেছিলেন, এখন তাঁদেরই প্রশংসা করছেন। উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলিতে রাজপুত সম্প্রদায়ের বিজেপি-বিরোধী ক্ষোভের দিকটিকেও সামনে নিয়ে এসেছেন মানিকম। মহারাজাদের বিরুদ্ধে মোদীর পুরনো আক্রমণকে হাতিয়ার করে মানিকম লিখেছেন, ‘মোদীর উচিত রাজপুত সম্প্রদায়ের কাছে অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়া তাঁদের বিরুদ্ধে এই অপমানজনক মন্তব্যের জন্য’। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদী জঘন্যতম স্তরে পৌঁছেছেন। রাহুল গান্ধীর প্রতিটি মন্তব্যকে বিকৃত করে তিনি সাম্প্রদায়িক আবেগে উস্কানি দিতে চাইছেন। প্রস্থান অবশ্যম্ভাবী বুঝেই মোদী আরও মরিয়া হয়ে উঠেছেন।’’

গত কয়েক দিনের প্রচারের মতো মেরুকরণের অন্য সংলাপগুলিকেও আজ ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে মোদীকে। তুলেছেন ‘এক্স রে’ এবং ‘উত্তরাধিকার করের’ প্রসঙ্গ। কর্নাটকবাসীকে সাবধান করার ঢঙে বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসের শাহজ়াদা ও তাঁর বোন দু’জনেই ঘোষণা করেছেন কংগ্রেস জিতলে দেশের মানুষের জমানো সম্পদ, গাড়ি, স্কুটার, স্ত্রীধন, মঙ্গলসূত্র, সোনা সব কিছুতে এক্স রে হবে। ঘরে ঘরে এক্স রে করে তারা সম্পদ লুট করতে চায়। সেই সম্পদ বণ্টন করবে পছন্দের ভোটব্যাঙ্ককে। আপনারা কি কংগ্রেসকে নিজেদের সম্পদ লুটতে দেবেন? কংগ্রসকে সতর্ক করতে চাই, মোদী যত দিন বেঁচে আছে, আপনাদের এই মনস্কামনা পূরণ হবে না।’’ ওভারসিজ় কংগ্রেস নেতা স্যাম পিত্রোদার উত্তরাধিকার কর সংক্রান্ত মন্তব্যটির পরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তাকে আরও উস্কে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘উত্তরাধিকার করের কথা শুনলে আপনাদের ঘুম চলে যাবে। দিল্লিতে কংগ্রেসের সরকার এলে এমন আইন তারা আনবে তাতে আপনার গোটা জীবনের জমানো সঞ্চয়ের ৫৫ শতাংশ সরকার ছিনিয়ে নেবে। সব বাবা মা-ই চান তাঁর সন্তানের জন্য কিছু রেখে যেতে, যাতে তাকে কারও কাছে হাত না পাততে হয়। কিন্তু কংগ্রেস চায় তাদের ভোটব্যাঙ্কের কাছেই দেশের সম্পদ যাক।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE