Advertisement
E-Paper

মানিকতলায় বিধায়ক নেই কেন? বিক্ষোভ তাপসকে ঘিরে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ

রবিবার মানিকতলা এলাকায় প্রচারে বেরিয়েছিলেন উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয় বলে অভিযোগ। দেখানো হয় কালো পতাকাও।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:২২
মানিকতলায় বিজেপি প্রার্থী তাপস রায় (ডান দিকে)-কে ঘিরে বিক্ষোভ।

মানিকতলায় বিজেপি প্রার্থী তাপস রায় (ডান দিকে)-কে ঘিরে বিক্ষোভ। — নিজস্ব চিত্র।

মানিকতলা বিধানসভা এলাকায় কেন বিধায়ক নেই? প্রশ্ন তুলে উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়ের সামনে বিক্ষোভ। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীরা ওই বিক্ষোভ সংগঠিত করেছেন। কালো পতাকাও দেখানো হয়েছে তাপসকে। সেই সঙ্গে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে গালিগালাজ এবং দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন বর্ষীয়ান নেতা। থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। তাপসের অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক সাধন পাণ্ডের কন্যা তথা তৃণমূল নেত্রী শ্রেয়া পাণ্ডে।

মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রে দীর্ঘ দিন বিধায়কের দায়িত্ব সামলেছেন তৃণমূলের সাধন পাণ্ডে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর মৃত্যু হলে মানিকতলা বিধায়কহীন হয়ে পড়ে। এখনও ওই কেন্দ্রে কোনও উপনির্বাচন হয়নি। ২০২১ সালে মানিকতলায় বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন সাধন। কিন্তু সেই ফলাফলের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে আদালতে মামলা করেন। এই সংক্রান্ত মামলা আদালতে ঝুলে আছে।

রবিবার মানিকতলায় উত্তর কলকাতা বিজেপির তরফে তাপসের প্রচারের উদ্দেশ্যে রোড-শো-এর আয়োজন করা হয়েছিল। অভিযোগ, রোড-শো চলাকালীন তৃণমূলের লোকজন প্ল্যাকার্ড হাতে তাপসের সামনে বিক্ষোভ দেখান। কেন মানিকতলায় ভোট হচ্ছে না, জানতে চান তাপসের কাছে। তাঁকে কালো পতাকাও দেখানো হয়। অভিযোগ, তাপসের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন তাঁর থেকে বয়সে অনেক ছোট তৃণমূল কর্মীরা। গালাগালিও করা হয়। মানিকতলা থানায় গোটা ঘটনাটি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাপস। তাঁর অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছে সাধন-কন্যা শ্রেয়ার নাম।

এ প্রসঙ্গে তাপস বলেন, ‘‘উত্তর কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শ্রেয়া পাণ্ডে পরিকল্পনা করে আমার প্রচার বানচাল করতে এই ষড়যন্ত্র করেছিলেন। আমার কাছে দাবি জানানো হচ্ছে মানিকতলা উপনির্বাচনের। এখন বিষয়টি হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। তাই এ ক্ষেত্রে আমি কেন, কোনও রাজনীতিকের কিছু করার নেই। নিশ্চিত পরাজয় জেনেই তৃণমূল এ ভাবে আমাদের প্রচারের উপর হামলা চালিয়েছে। পুলিশের সামনে যে ভাবে আমার প্রচারে হামলা চালানো হয়েছে, তাতে আমি স্তম্ভিত। এ ভাবে তৃণমূলের প্রকৃত স্বরূপ প্রকাশ পাচ্ছে। এতে আমাদের সুবিধাই হচ্ছে। এমন সব কাজের ফলে আমার জয়ের ব্যবধান বাড়বে বলেই মনে করছি।’’

বিজেপির উত্তর কলকাতার জেলা সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ বলেন, ‘‘কেন উপনির্বাচন হচ্ছে না, তার জবাব তো আদালত দেবে। ওখানকার তৃণমূল কর্মীরা আমাদের প্রার্থীকে আক্রমণ করেছেন, অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও আক্রমণ করেছেন। পুলিশ প্রথমে নীরব দর্শকের ভূমিকা নিয়েছিল। পরে আমাদের কর্মীরা রুখে দাঁড়ালে পুলিশ হস্তক্ষেপ করে।’’ তমোঘ্ন পৃথক ভাবে থানায় আরও একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিজেপির বক্তব্য, হেরে যাওয়ার ভয়ে ছন্নছাড়া আক্রমণ করছে তৃণমূল। রবিবার বিক্ষোভকারীদের হাতে তৃণমূলের পতাকাও ছিল না বলে দাবি করেছে বিজেপি।

বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের একাংশের দাবি, দল নয়, এলাকার সাধারণ মানুষ তাপসের সামনে এই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। সেই কারণেই তাঁদের কারও কাছে তৃণমূলের পতাকা ছিল না। দীর্ঘ দিন এলাকায় বিধায়ক না থাকায় সেখানকার মানুষ ক্ষিপ্ত। বিজেপির এক নেতার মামলার কারণেই মানিকতলার উপনির্বাচন ঝুলে রয়েছে। তাই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তাপসের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়ে থাকতে পারে।

এলাকার তৃণমূল নেত্রী শ্রেয়া বলেন, ‘‘যখন এই বিক্ষোভ হচ্ছিল, আমি কুণাল ঘোষের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে ছিলাম। কোথাও অনুপস্থিত থেকে আমি কী ভাবে বিক্ষোভ সংগঠিত করব? শুনলাম, বিজেপি প্রার্থী আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন। আমি তা করব না। বিধায়ক না থাকায় এলাকার মানুষের অনেক সমস্যা হচ্ছে। তাই ওঁর কাছে মানুষ অসুবিধার কথা জানাতে গিয়েছিলেন। তিনি তো প্রার্থী হিসাবে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিতে পারতেন। তা না করে উনি আমাকে আক্রমণ করছেন। এমন হলে কী ভাবে উনি ভোট পাওয়ার আশা করছেন? আমাদের এলাকায় বিজেপির প্রতি জনসমর্থন নেই। বিজেপির ওয়াশিং মেশিনে ঢুকে সাদা হয়েছেন তাপসবাবু। তাঁর কাছ থেকে এর থেকে বেশি কিছু প্রত্যাশিত নয়।’’

Lok Sabha Election 2024 Tapas Roy BJP Maniktala
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy