E-Paper

ঝড়-দুর্গতেরা দেখা পেলেন না মোদীর, কটাক্ষ শাসকের

বিজেপির পরিকল্পনা ছিল, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত দশটি পরিবারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাক্ষাৎ করানো। সেই মতো ময়নাগুড়ির বার্নিশ থেকে কয়েক জনকে ধূপগুড়িতে আনাও হয়েছিল বলে দাবি।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৫৫
PM Narendra Modi.

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।

ঝড়ে বিধ্বস্ত পরিবারের কয়েক জন প্রতিনিধিকে এনেও মোদী-মঞ্চে ওঠাতে পারল না বিজেপি। ফলে ঝড় নিয়ে তৃণমূলকে ‘জবাব’ দেওয়ার যে পরিকল্পনা করেছিল বিজেপি, তা শেষ পর্যন্ত পণ্ডই হয়ে গেল।

বিজেপির পরিকল্পনা ছিল, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত দশটি পরিবারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাক্ষাৎ করানো। সেই মতো ময়নাগুড়ির বার্নিশ থেকে কয়েক জনকে ধূপগুড়িতে আনাও হয়েছিল বলে দাবি। যদিও জানা গিয়েছে, যাঁদের আনা হয়েছিল, তাঁদের অনেকের সঙ্গেই কোনও পরিচয়পত্র ছিল না। তাই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বলয়ের ঘেরাটোপে তাঁদের যেতে দেওয়া হয়নি বলে দাবি। এ নিয়ে বিজেপিকে বিঁধতে ছাড়েনি তৃণমূল।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অবশ্য জলপাইগুড়ির সভা শুরুই করেছেন ঝড়ের প্রসঙ্গ টেনে। মোদী বলেন, “কিছু দিন আগেই জলপাইগুড়ির অনেক জায়গায় ঝড়ে জীবনের, জীবনযাপনের বড়সড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি সমবেদনা জানাই। আমি আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।’’ সভার শুরুও হয়েছিল ঝড়ে মৃতদের স্মৃতিতে এক মিনিটের নীরবতা পালন দিয়ে। যে দুর্গতদের বিজেপি নিয়ে এসেছিল, তাঁদের কী হল? বিজেপি সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলাতে না পেরে অস্বস্তি এড়াতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে কথা বলানো হয় তাঁদের। সূত্রের দাবি, বিজেপির তরফে নানা ক্ষতিপূরণের আশ্বাসও দেওয়া হয়। সভা শেষে বের হওয়ার মুখে সুকান্ত বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে হঠাৎ করে আমরা জরুরি কোনও কর্মসূচি দিইনি। তবে আমি ও আমাদের দল সব রকম ভাবে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছি।’’

গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী কোচবিহারের সভায় এসে জলপাইগুড়ির ঝড় প্রসঙ্গ কেন তোলেননি, সে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি সূত্রের দাবি, তারই
জবাব দিতে ঝড় দুর্গতদের সঙ্গে মোদীকে কথা বলানোর পরিকল্পনা কষা হয়েছিল। কিন্তু আগে থেকে পরিকল্পনা নিশ্চিত না করে ঝড়় দুর্গতদের নিয়ে আসা হল কেন মোদী-সভায়? এ দিনও পুরুলিয়ায় নির্বাচনী জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে ৫ হাজার মানুষের বাড়ি নষ্ট হয়েছে। সরকার বলল, আমরা বাংলার বাড়ি করে দিতে চাই। নির্বাচন চলছে বলে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নিতে হয়। এখনও অনুমতি দেয়নি।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী আবার বলেন, “যাঁদের সব হারিয়েছে, যাঁরা এখন মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে ব্যস্ত, তাঁদের কাউকে আমরা আনতে চাইনি, আনিওনি। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম থেকে অনেক মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এসেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে আমাদের রাজ্য নেতৃত্বের কথা হয়েছে।”

তৃণমূল নেতা গৌতম দেব বলেন, ‘‘কোচবিহারের সভায় এসে ঝড়ের কথা বলেননি প্রধানমন্ত্রী। যে হেতু সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাই বাধ্য হয়ে আজ এক লাইন বলেছেন।’’

সত্যিই কি সবহারাদের কাউকে আনা হয়নি? ঝড়ে মারা গিয়েছেন সমর রায়। তাঁর ছেলে নারায়ণ রায়ের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল সভাস্থলেই। এখনও অশৌচ চলছে তাঁর। তেমনই পোশাক পরেছিলেন। নারায়ণ বলেন, ‘‘রাস্তায় দাঁড়িয়ে মোদীকে দেখলাম। তবে কথা হয়নি। যদিও মোদীর সঙ্গে দেখা করার আশা ছিল।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 PM Narendra Modi BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy