Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

অরাজনৈতিক না ফাঁপা প্রতিশ্রুতি, ভোটে অনীহা শহরে

দিল্লির সাতটি আসনেই শনিবার ভোট হয়েছে। প্রাথমিক হিসাবে নির্বাচন কমিশন জানাচ্ছে, ভোট পড়েছে ৫৮ শতাংশ। তার মধ্যে অভিজাত নয়াদিল্লি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটদানের হার মাত্র ৫২.৯৩ শতাংশ।

—প্রতীকী ছবি।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৪ ০৯:৫২
Share: Save:

ছয় পর্বের ভোটদান শেষ। গোটা দেশ জুড়েই শহুরে মানুষের ভোটদানের অনীহা অব্যাহত ষষ্ঠ পর্যায়েও। বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, হায়দরাবাদ, মু্ম্বই এবং দিল্লিতে এই প্রবণতা উনিশ-বিশ একই। পরিসংখ্যান বলছে, গত লোকসভা ভোটের তুলনায় এ বার মেট্রো-শহরের মানুষের ভোটদানের হার কম।

দিল্লির সাতটি আসনেই শনিবার ভোট হয়েছে। প্রাথমিক হিসাবে নির্বাচন কমিশন জানাচ্ছে, ভোট পড়েছে ৫৮ শতাংশ। তার মধ্যে অভিজাত নয়াদিল্লি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটদানের হার মাত্র ৫২.৯৩ শতাংশ। আরও একটি উচ্চবিত্ত এলাকা দক্ষিণ দিল্লিও তথৈবচ, ভোটদানের গড় ৫৫ শতাংশ।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য দিকে, প্রথম পর্বের ভোটদানের (১৯ এপ্রিল) পর চেন্নাইয়ের তিনটি লোকসভা কেন্দ্রে গত তিনটি লোকসভার তুলনায় ভোটদানের গড় হার কম। চেন্নাইয়ের গড় ভোটদানের হার ৫৫.৯৪ শতাংশ।

একই পরিস্থিতি বেঙ্গালুরুতেও। অর্ধেক ভোটার রাস্তাতেই নামেননি ভোটের দিন। কর্নাটকের গড় ভোটের হার যেখানে প্রায় ৭০ শতাংশ, সেখানে বেঙ্গালুরু শহরের ৫৪ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছেন। মুম্বইয়েও ২০১৯-এর তুলনায় কম ভোট পড়েছে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে মুম্বইয়ের ছ’টি আসনে ভোট পড়েছিল ৫৫,৩৮ শতাংশ। এ বার তা নেমে এসেছে ৫২.২৭ শতাংশে। জয়পুর শহরে ভোট পড়েছে ৬৩.৩৮ শতাংশ (২০১৯-এ যা ছিল ৬৮.৪৮ শতাংশ) জব্বলপুরে ৬১ শতাংশ (২০১৯-এ যা ছিল ৬৯.৪৬ শতাংশ)। একই ভাবে নয়ডা, গাজিয়াবাদে ভোট পড়েছে গত বারের তুলনায় ৬ থেকে ৮ শতাংশ কম। আগরায় গত বারের ভোটদানের হার ছিল ৫৯.১২ শতংশ। এ বারে ভোট পড়ছে ৫৪.০৮ শতাংশ। খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্বাচনী কেন্দ্র গান্ধীনগরে গত বারের তুলনায়
৬ শতাংশ ভোট কম পড়েছে। আমদাবাদ পূর্ব এবং পশ্চিমেও একই প্রবণতা।

নাগরিক সমাজের ভোটদানে অনীহার বিষয়টিকে এ বারের লোকসভা ভোটের বিশেষ প্রবণতা হিসাবে চিহ্নিত করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর প্রতিটি বক্তৃতাতেই ভোটারদের কাছে নিজস্ব ঢংয়ে আবেদন রাখছেন। কখনও বলছেন, ‘আগে ভোটদান পরে জলপান’। আবার গ্রামের দিকে তাঁর পরামর্শ, ‘লোকলস্কর, বাজনদারদের নিয়ে গান গাইতে গাইতে বুথে যান। ভোটদানকে গণতন্ত্রের উৎসবে পরিণত করুন।’ অনেকে বলছেন, গ্রামে মোদীর কথা কিছুটা খাটলেও শহুরে মানুষ এই তাপপ্রবাহকে অগ্রাহ্য করে ভোট দিতে যাচ্ছেন না।

আবার রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, তাপপ্রবাহের ব্যাখ্যাটি পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, প্রত্যেক বছর প্রখর গ্রীষ্মেই লোকসভা ভোট হয়। তা ছাড়া শহরে তাপ এড়ানোর অনেক উপায় থাকলেও গ্রামে রোদ আরও বেশি গায়ে লাগে। কিন্তু গ্রামে ভোটদানের হার তো কমছে না শহরের মতো।

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, নির্বাচনে ঘিরে প্রতি বছর নেতাদের প্রতিশ্রুতির বন্যা এবং শেষ পর্যন্ত তার বেশির ভাগটাই পূর্ণ না হওয়ার অভিযোগ নাগরিক সমাজের বেশি। তাদের কাছে বিশ্বের অন্যান্য গণতন্ত্রের সঙ্গে নিজের দেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার সুযোগও বেশি। দুর্নীতির পাহাড়প্রমাণ অভিযোগ, গত কয়েক বছরে বেকারত্বের ভয়ঙ্কর বাড়বৃদ্ধি শহরের মানুষকে রাজনৈতিক দলগুলি সম্পর্কে বীতশ্রদ্ধ করে, বুথমুখী হওয়া থেকে বিরত করেছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে।

এটাও অনেকে বলছেন, হিন্দু-মুসলমান মেরুকরণের রাজনীতি গ্রামে যে ভাবে প্রভাব ফেলে, শহরে তার তুলনায় কম। বরং কিছু ক্ষেত্রে উল্টো ফলও হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষ হিন্দু মনে। তা ছাড়া, বড় শহরে ভোটারেরা তুলনামূলকভাবে ‘অরাজনৈতিক’ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। পাশাপাশি রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিসরে গোষ্ঠীচেতনাও শহরে ক্রমশ কমছে। গ্রামে যে ভাবে ভোট দিতে যাওয়া একটি গ্রাম বা মহল্লার যৌথ কর্মসূচির মধ্যে পড়ে, তেমন দেখা যায় না নিজেদের ছোট্ট পরিধি ও পেশা নিয়ে ফ্ল্যাটে ডুবে থাকা নাগরিক মনের পরিসরে।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 ECI India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE