জ্যের ২৯৪টি আসনে দিদিই প্রার্থী ছিলেন। জয় হয়েছে তাঁরই। তবু ২০১৬-র সাফল্য স্বীকৃতি দিয়ে গেল তৃণমূলের দুই অর্জুন-কে! তার এক জন যদি হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক, তা হলে অন্য জন অবশ্যই নন্দীগ্রামের নতুন বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। সংগঠনের খুঁটিনাটি থেকে প্রচারে তাঁরাই যোগ্য সঙ্গত দিয়ে গেলেন দিদিকে!
সাংগঠনিক শক্তির নিরিখে শাসক দলের তুলনায় বামেদের দুর্বলতা এ বার আগাগোড়া নজরে পড়েছে। সিপিএমে অনিল বিশ্বাসের জমানায় দলের নিচুতলার সঙ্গে ওপরের যে যোগাযোগ ও সমন্বয় ছিল সেই মেকানিজম গত ভোটের সময় থেকেই নড়বড়ে হয়ে গিয়েছিল। বিপরীতে তৃণমূলে সেই ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে সফল হয়েছিলেন মুকুল রায়। লোকসভা ভোটের পর টানা এগারো মাস তিনি দিদির থেকে দূরে দূরে ছিলেন। তৃণমূলে তাই মুকুল-মাহাত্ম্যও আগের মতো নেই। কিন্তু দেখা গেল, সেই স্থানটাও শূন্য রইল না। বরং সেই স্থানেই উঠে এলেন অভিষেক-শুভেন্দু!
কী ভাবে? তৃণমূল সূত্রের মতে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচারের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন গত নভেম্বর থেকে। প্রচারের থিম সঙ্গীত বেছে নেওয়া, খবরের কাগজ ও বৈদ্যুতিন মাধ্যমে দেওয়া বিজ্ঞাপনের বিষয়বস্তু নির্ধারণ থেকে শুরু করে পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে সেই সব তৈরি করা সবই তাঁর তত্ত্বাবধানে হয়। ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর গোটা রাজ্য জুড়ে পুরোদমে প্রচারে নেমে পড়েন তিনি। ১২৫টিরও বেশি সভা করেন উত্তর থেকে দক্ষিণে। জেলায় জেলায় দলীয় প্রার্থীদের অভাব-অভিযোগ মেটানোর ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন, তখন নির্বাচন কমিশনের উত্থাপন করা বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য আইনজীবীদের একটি টিমের সঙ্গেও তিনিই সমন্বয় রাখেন।
অন্য দিকে সাংগঠনিক ভাবে শুভেন্দুকে আগেই বড় দায়িত্ব দিয়ে রেখেছিলেন দিদি। উত্তরবঙ্গে তৃণমূল বরাবরই দুর্বল। লোকসভা ভোটের পরই শুভেন্দুর ওপর উত্তরবঙ্গের সাংগঠনিক দায়িত্ব দিয়েছিলেন। দেখা গেল, দিদিকে তিনি হতাশ করেননি। অধীর চৌধুরীর সঙ্গে লড়ে মুর্শিদাবাদ থেকে ৪টি আসন এনে দিয়েছেন দলকে। উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়িতেও তৃণমূলের ফল ভাল হয়েছে। তা ছাড়া উত্তরবঙ্গের সাংগঠনিক দায়িত্বের পাশাপাশি দুই মেদিনীপুর তথা জঙ্গলমহলে সাংগঠনিক বিষয়আশয়ও বকলমে ছিল শুভেন্দুরই উপর। সেখানেও ‘স্যুইপ’ করেছে তৃণমূল। তা ছাড়া নিজের এলাকার বাইরে গিয়ে এ বার রাজ্য জুড়ে প্রায় দেড়শটি সভা করেন দলের এই তরুণ তুর্কি।
তৃণমূল সূত্রের মতে, দলে এই তরুণের আনুষ্ঠানিক উত্থান এখন সময়ের অপেক্ষা। সংশয়াতীত ভাবেই উভয়ের গুরুত্ব আরও বাড়বে দলে। শুভেন্দুকে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী করবেন বলে ভোটের আগেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন দিদি। সে ক্ষেত্রে সংগঠনে ওজন ও পদোন্নতির ষোলো আনা সম্ভাবনা রয়েছে অভিষেকের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy