Advertisement
E-Paper

ভোটের লাইনে দহনের হানা থেকে সাবধান

আধাসেনা আর ভোটকর্মীদের সদা সতর্ক থাকার জন্য নিরন্তর নির্দেশ দিয়ে চলেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। আর আজ, সোমবারের ভোটে ভোটার-সহ সকলের জন্যই রবিবার আগাম সতর্কতা জারি করে দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:১২
রবিবার বাবুঘাটে শুভাশিস ভট্টাচার্যের তোলা ছবি।

রবিবার বাবুঘাটে শুভাশিস ভট্টাচার্যের তোলা ছবি।

আধাসেনা আর ভোটকর্মীদের সদা সতর্ক থাকার জন্য নিরন্তর নির্দেশ দিয়ে চলেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন।

আর আজ, সোমবারের ভোটে ভোটার-সহ সকলের জন্যই রবিবার আগাম সতর্কতা জারি করে দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।

কীসের সতর্কতা?

দুরন্ত দহন থেকে আত্মরক্ষার সতর্কতা। রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে চার দিন ধরে তাপপ্রবাহ চলছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করছে ৪১ থেকে ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়ে দিয়েছে, সোমবার যে-একত্রিশটি আসনে ভোট হওয়ার কথা, সেই সব অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকাতেই তাপমাত্রা পৌঁছে যেতে পারে ৪৫ ডিগ্রিতে। এবং সোমবার থেকেই ‘তীব্র’ তাপপ্রবাহের কবলে পড়তে চলেছে বাঁকুড়া, বর্ধমানের শিল্পাঞ্চল এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের বড় একটি অংশ। জঙ্গলমহলের কিছু অংশে ৪ এপ্রিলই ভোট হয়ে গিয়েছে। আবহাওয়ার মেজাজ যে-ভাবে গরম হয়ে উঠছে, তাতে ওই সব এলাকার বাসিন্দা এবং ভোটকর্মীরা নিজেদের ভাগ্যবান মনে করতে পারেন।

গ্রীষ্মে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সেই সময়ের স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রার চেয়ে পাঁচ ডিগ্রি বেশি হলেই সেই পরিস্থিতিকে তাপপ্রবাহ বলা হয় (সূত্র: হাওয়া অফিস)। এই বিচারে শুধু পশ্চিমের জেলাগুলিই নয়, রবিবার তাপপ্রবাহের তালিকায় ঢুকে পড়েছে খাস কলকাতাও। মহানগরে এ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০.৫ ডিগ্রি। স্বাভাবিকের তুলনায় পাঁচ ডিগ্রি বেশি। দক্ষিণবঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলি ছাড়া অন্য সব জেলাতেই এ দিন তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বাদ পড়ছে না উত্তরবঙ্গও। সেখানকার মালদহেও এ দিন শুরু হয়ে গিয়েছে তাপপ্রবাহ।

বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা থেকে গরম বাতাস ঢুকে পড়ায় পশ্চিমবঙ্গে এখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। এর মধ্যেই আলিপুর হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, দক্ষিণবঙ্গের যে-সব জেলা বাকি ছিল অর্থাৎ পূর্ব মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলিতেও সোমবার থেকে তাপপ্রবাহ বইতে শুরু করবে। বুধবার পর্যন্ত এই অবস্থা চলবে বলেই মনে করছেন আবহবিদেরা। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের মতো তাপপ্রবাহের গ্রাসে পড়েছে প্রতিবেশী তিন রাজ্য ওড়িশা, বিহার এবং ঝাড়খণ্ডও। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, ওই তিন রাজ্যের পরিস্থিতির উপরেই নির্ভর করবে তাপপ্রবাহের মেজাজমর্জি।

উপকূল থেকে জলীয় বাষ্প ঢুকতে থাকায় গত দু’দিন মহানগরীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির নীচে আটকে ছিল। কিন্তু তীব্র গরম হাওয়া সেই জলীয় বাষ্প শুষে নিতেই রবিবার কলকাতার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির মাত্রা ছাড়িয়ে গেল। হাওয়া অফিস জানিয়ে দিয়েছে, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, নদিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, বর্ধমান, বীরভূমের সঙ্গে সঙ্গে কলকাতাতেও রুদ্র মহিমায় হাজির তাপপ্রবাহ।

তাপপ্রবাহের এই দাপট কেন?

এ বার মার্চের গোড়া থেকেই গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে শুকনো বাতাস যে-ভাবে ঘোরাফেরা করছে, সেটাই এই চৈত্রেই তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরির পদ্ধতিকে ত্বরান্বিত করেছে বলে মনে করছেন আবহবিদেরা। আর তারই ফল ভুগতে হচ্ছে মানুষকে। চৈত্রের সব ধুলো উড়িয়ে প্রকৃতিকে ঠান্ডা করতে এই সময়টায় দক্ষিণবঙ্গে কালবৈশাখী হয়। সাধারণত এপ্রিলের ১০ তারিখের মধ্যে অন্তত তিনটি কালবৈশাখী হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু কলকাতা এ বার কালবৈশাখী পেয়েছে মাত্র একটি, ১৯ মার্চ। সেটাও নিতান্ত নমো নমো করে। সে-দিন ঝড়বৃষ্টির দাপট তেমন ছিল না। ঝাড়খণ্ডের নিকটবর্তী জেলাগুলিতে অবশ্য ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি কালবৈশাখী হয়ে গিয়েছে। তবে তার সব ক’টিই ছিল দুর্বল। যার ঝটিকা-হানায় তাপমাত্রা পিছু হটতে বাধ্য হয়, সেই কালবৈশাখীর কৃপণতার সুযোগে করাল হয়ে উঠছে তাপপ্রবাহ।

অথচ আবহাওয়ার মেজাজে বৈচিত্রের কোনও ঘাটতি নেই। কাশ্মীরে বরফ পড়ছে। উত্তর ভারতের পাহাড়ি রাজ্যগুলির কোথাও কোথাও বৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি পুড়ছে। একটু দূরেই উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কোথাও কোথাও বৃষ্টি হয়েছে। কালবৈশাখীর দাপটে বাংলাদেশের সিলেটে জীবনযাত্রা ব্যাহত। কিন্তু ছিটেফোঁটা বৃষ্টিরও দেখা নেই এই তল্লাটে। কবে নামবে বৃষ্টি?

‘‘আপাতত দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। যে-ভাবে তাপমাত্রা বাড়ছে এবং শুকনো বাতাস ঢুকছে, তাতে বাড়ির বাইরে বেরোলে সতর্ক থাকতেই হবে,’’ বলছেন কেন্দ্রের আবহবিজ্ঞান মন্ত্রকের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গোকুলচন্দ্র দেবনাথ।

assembly election 2016 election campaign hot weather
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy