Advertisement
০৬ মে ২০২৪

হারব? না-না-না

যদি আপনারা হেরে যান? কথার ফাঁকে প্রশ্নটা উঠতেই কয়েক সেকেন্ডের স্তব্ধতা। তার পর তিন জনেই একসঙ্গে বলে উঠলেন, ‘‘ইমপসিব্‌ল! তিন জনেই জিতছি। মানুষই আমাদের জেতাবে।’’

কৌস্তুভ চট্টোপাধ্যায়, মধুজা সেনরায় এবং শতরূপ ঘোষ

কৌস্তুভ চট্টোপাধ্যায়, মধুজা সেনরায় এবং শতরূপ ঘোষ

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৬ ০০:৩৮
Share: Save:

যদি আপনারা হেরে যান? কথার ফাঁকে প্রশ্নটা উঠতেই কয়েক সেকেন্ডের স্তব্ধতা। তার পর তিন জনেই একসঙ্গে বলে উঠলেন, ‘‘ইমপসিব্‌ল! তিন জনেই জিতছি। মানুষই আমাদের জেতাবে।’’

ভেবে বলছেন তো? হাসিমুখে ফের প্রকাশ পেল আত্মবিশ্বাস, ‘‘আমাদের হারার কোনও কারণ নেই।’’

বুধবার পার্ক সার্কাস ময়দানে তখন সবে মাত্র রাহুল গাঁধীর সভা শেষ হয়েছে। জোট প্রার্থীদের সমর্থনে সভা সেরে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও তখন বাড়ির পথে। লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের উল্টোদিকের গেটে তখন তিন তরুণ প্রার্থী কৌস্তুভ চট্টোপাধ্যায়, মধুজা সেনরায় ও শতরূপ ঘোষের মুখোমুখি আনন্দবাজার।

এই বিধানসভা নির্বাচনে তাঁদের লড়াই তৃণমূলের তিন হেভিওয়েট প্রার্থীর সঙ্গে। যাঁরা ভোটের ময়দানে অনেক বেশি শক্তিশালী। লোকবলে, অভিজ্ঞতায় কৌস্তুভ-মধুজা-শতরূপের থেকে অনেকটাই এগিয়ে। বেহালা (পশ্চিম), টালিগঞ্জ ও কসবা কেন্দ্রে ওঁদের টক্কর তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দফতরের তিন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস এবং জাভেদ খানের সঙ্গে। তবু আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি নেই কোথাও। ‘হার’ শব্দটি যেন কানেও ওঠে না তাঁদের।

তিন জনেরই ‘ইউএসপি’, রাজনীতিতে নতুন মুখ ওঁরা। কলেজ ক্যাম্পাসে এসএফআই করতে করতে ছাত্র রাজনীতিতে খুব দ্রুত উত্থান এবং এখন সিপিএমের হোলটাইমার। দলের নির্দেশে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। তৃণমূলের ‘দুর্নীতি’কে হাতিয়ার করে নিজেদের কেন্দ্রে প্রচার করছেন। মানুষের দরজায় দরজায় ঘুরছেন। বোঝাচ্ছেন, পরিবর্তনের কুফল। হারের কথা মনে আনতেও নারাজ ওঁরা। তরুণ ভোটারদের কাছে পৌঁছতে প্রচার চালাচ্ছেন ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটস্‌অ্যাপেও।

রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ইতিহাসে একসঙ্গে এমন তিনটি তরুণ মুখকে সিপিএম প্রার্থী হিসেবে দেখার অভি়জ্ঞতা পশ্চিমবঙ্গের বিশেষ নেই। এ বারের নির্বাচন সিপিএমের কাছে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। তরুণদের কাছে পাওয়ার লড়াই। দল যে সত্যিই তরুণ প্রজন্মকে সামনের সারিতে নিয়ে আসতে চাইছে, কৌস্তুভ-মধুজা-শতরূপ যেন সেই বার্তাই বহন করছে। যেন নিজেই নিজের কাছে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে সিপিএম। আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর তরুণ ব্রিগেড লড়ে চলেছে সে চ্যালেঞ্জকে ভরসা করেই।

কিন্তু তাঁরা হেরে গেলে কী বার্তা যাবে মানুষের কাছে? তরুণ প্রজন্ম কি হতাশ হবে? মধুজার উত্তর, ‘‘আবারও বলছি হারছি না। মানুষকে যা বার্তা দেওয়ার, ইতিমধ্যেই দিয়েছি। কলেজ পড়ুয়া নতুন ভোটার থেকে তরুণ প্রজন্ম, সবার থেকেই সমর্থন পাচ্ছি।’’

সমর্থকদের নিয়ে পায়ে পায়ে কেন্দ্রে ঘুরছেন ওঁরা। আবাসনের প্রতিটি ফ্ল্যাটের কলিংবেল টিপছেন। বস্তির ঘরে ঘরে যাচ্ছেন। মাসিমা-পিসিমাদের আর্শীবাদ চাইছেন। ভোটারদের মুখে এমনও শোনা যাচ্ছে, ‘‘বাচ্চা ছেলে-মেয়েগুলো ভোটে দাঁড়িয়েছে। এক দিকে ভাল।’’ পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ওঁরাও বলছেন, ‘জিতবই’। আর ঘনিষ্ঠ মহলে পার্থবাবুরা বলছেন, ১৯ মে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPM candidates assembly election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE