গত বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত ভাঁড়ার প্রায় শূন্য ছিল। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তা ভরে উঠেছিল অনেকটাই। রাতারাতি ভোট বেড়ে গিয়েছিল বিজেপির।
এই বাড়তি ভোট নিয়ে দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে জোট এবং বিজেপির মধ্যে। বিজেপির দাবি, এবারের বিধানসভা ভোট তাদের কাছেই থাকবে। অন্য দিকে বাম-কংগ্রেস জোট পাল্টা দাবি, সিপিএম ছেড়ে ২০১৪ সালের নির্বাচনে অনেকে বিজেপিতে ভোট দিয়েছিলেন। তাঁরা আবার ফিরে আসবেন। তাই এই ভোট তাদের বাক্সে পড়বে বলে জোটের দাবি।
হাওড়া জেলার রাজনৈতিক মহল অবশ্য বলছে, ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজেপির বাড়তি ভোটের সিংহভাগ বামফ্রন্ট থেকে চলে যাওয়া। দেখা গিয়েছে, জেলার ১৬টি বিধানসভাকেন্দ্রেই বিজেপি ওই বছর বেশ ভালো ভোট পেয়েছে। বিপরীতে ভোট কমেছে বামফ্রন্টের। সেই বাড়তি ভোট যদি বামফ্রন্টে ফিরে আসে তা হলে জেলার গ্রামীণ এলাকার অন্তত পাঁচটি বিধানসভা আসনে শাসকদলকে কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়তে হতে পারে। এই বিধানসভাকেন্দ্রগুলি হল— সাঁকরাইল, উলুবেড়িয়া পূর্ব, উলুবেড়িয়া দক্ষিণ, বাগনান, জগৎবল্লভপুর।
সাঁকরাইলে ২০১১ সালের নির্বাচনে বিজেপি পেয়েছিল ৮হাজার ১৮৪টি ভোট। ২০১৪ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৩৪ হাজার ৩৯৪টি। অন্য দিকে, বামফ্রন্ট ২০১১ সালে পেয়েছিল ৭০ হাজার ১৭২টি ভোট। অথচ ২০১৪ সালে তাদের ভোট কমে গিয়ে দাঁড়ায় ৫৫ হাজারে। আর উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্র বরাবর বিজেপির শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। ২০১১ সালে এখানে বিজেপি ভোট পেয়েছিল ২১ হাজার ৫৩০টি ভোট। ২০১৪ সালে বেড়ে গিয়ে হয় ৩৮ হাজার ৩৫৯টি। বামফ্রন্ট ২০১১ সালে যেখানে ৪৯ হাজার ভোট, ২০১৪ সালে তারা পায় ৪৩ হাজার ৯৩৫টি ভোট। একই ছবি উলুবেড়িয়া দক্ষিণ, বাগনান, জগৎবল্লভপুরেও।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরীখে দেখা গিয়েছে, এই পাঁচটি আসনে বিজেপির পাওয়া ভোট যদি বাম-কংগ্রেস জোটের সঙ্গে যোগ হয় তা হলে তা তৃণমূল প্রার্থীর ঘাড়ের কাছে নিশ্বাস ফেলবে। জেলা সিপিএম নেতৃত্ব এই পাঁচটি আসনকে পাখির চোখ করেছেন। বিজেপিতে চলে যাওয়া নিজেদের ভোট ফের যদি ফিরিয়ে আনা যায় সেই চেষ্টা করছেন তাঁরা। জেলা সিপিএম নেতৃত্বের একটি অংশের দাবি, নরেন্দ্র মোদীর প্রতি মোহগ্রস্ত হয়ে তাঁদের দলের অনেকেই বিজেপিতে ভোট দিয়েছিলেন। তাঁরা এটাও ভেবেছিলেন যে, সিপিএম হয়তো তৃণমূলের অত্যাচারের হাত থেকে তাঁদের বাঁচাতে পারবেন না। কিন্তু তাঁদের বেশিরভাগের মোহভঙ্গ হয়েছে। জেলা সিপিএমের এক নেতা জানান, বিজেপিতে চলে যাওয়া অনেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
বিজেপি নেতারা অবশ্য দাবি করেছেন, নরেন্দ্র মোদীর উন্নয়নের রাজনীতিতে আকৃষ্ট হয়েই যাঁরা তাঁদের দলে এসেছেন। তঁদের ফিরে যাওয়ার প্রশ্নই নেই। তৃণমূল অবশ্য বিজেপি এবং জোটের এই জল্পনাকে গ্রাহ্যের মধ্যে আনছেন না। জেলা তৃণমূলের সভাপতি (গ্রামীণ) পুলক রায় বলেন, ‘‘কোনও জটিল অঙ্ক নয়। উন্নয়নের সহজ রাজনীতিই আমাদের জেতাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy