Advertisement
E-Paper

আবিরে স্বাগত লক্ষ্মী-বৈশালী

এক জনের ছোট থেকেই গ্যালারিতে বসে খেলা দেখা অভ্যাস। অন্য জন প্রাক্তন খেলোয়াড়। ভোটের ময়দানে দু’জনেই আনকোরা। তাই ব্যাটে-বলে ছক্কা কতটা হবে, বোধহয় কিছুটা সন্দিহানই ছিলেন। সকাল থেকে গণনা কেন্দ্রে দেখাও যায়নি। ওঁরা বালি ও হাওড়ার তৃণমূল প্রার্থী বৈশালী ডালমিয়া এবং লক্ষ্মীরতন শুক্ল ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৬ ০০:৫২
লক্ষ্মীরতন-বৈশালী। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

লক্ষ্মীরতন-বৈশালী। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

এক জনের ছোট থেকেই গ্যালারিতে বসে খেলা দেখা অভ্যাস। অন্য জন প্রাক্তন খেলোয়াড়। ভোটের ময়দানে দু’জনেই আনকোরা। তাই ব্যাটে-বলে ছক্কা কতটা হবে, বোধহয় কিছুটা সন্দিহানই ছিলেন। সকাল থেকে গণনা কেন্দ্রে দেখাও যায়নি। ওঁরা বালি ও হাওড়ার তৃণমূল প্রার্থী বৈশালী ডালমিয়া এবং লক্ষ্মীরতন শুক্ল ।

বৃহস্পতিবার বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন শিক্ষণ মন্দিরে দুই কেন্দ্রের ভোট গণনা শুরুর বহু আগেই পৌঁছে যান বিজেপি-র রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, কৌশিক চক্রবর্তী, সিপিএমের সৌমেন্দ্রনাথ বেরা। ছিলেন না নবাগত দুই প্রার্থীই। তবে পরপর রাউন্ডে ব্যাটে-বলে ছক্কার আসছিলই।

বেলা বাড়তে জয় যখন প্রায় নিশ্চিত, তখন প্রথমে এলেন সবুজ পাঞ্জাবীর লক্ষ্মীরতন। কিছু পরে সবুজ সালোয়ার-কামিজে প্রয়াত সিএবি কর্তা জগমোহন ডালমিয়ার কন্যা বৈশালী। চোখমুখে উৎকণ্ঠা। জয়ের নিশ্চয়তা পেয়ে অবশ্য হাসি ফুটল। একসঙ্গে দাঁড়িয়ে ক্যামেরার সামনে পোজও দিলেন। জয়ের পুরো কৃতিত্ব তুলে দিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

গণনা কেন্দ্রের সামনে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ছিল সকাল থেকেই। প্রায় দুশো মিটার দূরে বেলুড় মঠের মেন গেট ও বেলুড় বাজারের দিকে আটকে দেওয়া হয় রাজনৈতিক দলের কর্মীদের। সওয়া ৯টা নাগাদ আচমকা দেখা গেল, হনহনিয়ে গণনা কেন্দ্রের বাইরে এসে গাড়িচালককে ফোন করছেন উত্তর হাওড়ার বিজেপি প্রার্থী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘ভিতরে সব আজেবাজে কথা বলছে।’’ কারা? রূপার জবাব, ‘‘যাঁরা করার, তাঁরাই।’’ এর পরেই ব্যক্তিগত কাজ সেরে ফেরার কথা বলে মেন গেটের দিকে এগোলেন অভিনেত্রী-প্রার্থী।

এর মধ্যে এক-একটি রাউন্ড শেষে দু’টি কেন্দ্রেই তৃণমূলের এগিয়ে থাকার খবর। ততই পাল্লা দিয়ে পুলিশি ব্যারিকেডের ওপারে উল্লাসে ফেটে পড়া। কার্যালয়ে মজুত বস্তা বেরোতে থাকে বাইরে। উড়তে থাকে সবুজ আবির। ১২টা নাগাদ বালির সিপিএম প্রার্থী সৌমেন্দ্রনাথ (অঞ্জন) বেরার অভিযোগ, ‘‘আমাদের কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। কমিশনকে বলে কিছু হচ্ছে না।’’ পিছনে তখন শাসক দলের টিপ্পনি — ‘সূর্য অস্ত গিয়েছে। আপনারাও ফিরে যান।’

দুপুর সাড়ে ১২টা। গণনা কেন্দ্রের বাইরে তৃণমূল কাউন্সিলর, এজেন্টদের ভিড়। বেরিয়ে এলেন বালির বিজেপি প্রার্থী কৌশিক চক্রবর্তী। গেটের দিকে যেতে গিয়েও থমকালেন। কাউন্সিলর ও কর্মীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বললেন, ‘‘এটা মানুষের রায়। এই জনমত মাথা পেতে নিতে হবে। বালির মানুষের কাছে আবারও আসব।’’ এর কিছুক্ষণ পরেই হাজির বৈশালী ও লক্ষ্মীরতন। গণনা কেন্দ্র ছেড়ে বেরিয়ে যান দুই কেন্দ্রেরই প্রতিপক্ষেরা। গেট আটকে তৃণমূল কর্মীদের আটকাতে চেষ্টা করছিল পুলিশ। সবুজ আবির, বাজি, ব্যান্ডে তখন বিজয়োল্লাস। বিশাল একটি মালা-ই দুই প্রার্থীর গলায় পরিয়ে দেন কর্মীরা।

দুই গালে সবুজ আবির। বৈশালী বললেন, ‘‘আজ বাবার কথা খুব মনে পড়ছে। তবে ভগবান, বাবা এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদ ছাড়া এই জয় সম্ভব হত না।’’ আর লক্ষ্মীরতনের কথায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাংলার মানুষ উজাড় করে ভোট দিয়েছেন। তারই একটা অংশ মাত্র আমি। চেষ্টা করব মন দিয়ে এলাকার কাজ করতে।’’

assembly election 2016 Vaishali Dalmiya Lakhi Ratan sukhla TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy