Advertisement
E-Paper

দাদাকে হারান, মানসের তালুকে ডাক দিদির

পুরনো বন্ধু এখন প্রতিপক্ষ। তার দোসর আবার চিরকালের ‘শত্রু’। কংগ্রেসের শক্ত মাটিতে প্রচারে এসে তাই পুরনো বিরোধই উস্কে দিলেন তৃণমূল নেত্রী। এ বারের ভোট প্রচারে গোড়া থেকেই বাম-কংগ্রেস জোটকে বিঁধেছেন মমতা। কিন্তু শুক্রবার সবংয়ের বলপাইয়ের সভায় তা অন্য মাত্রা পায়। এলাকার জোট প্রার্থী কংগ্রেসের মানস ভুঁইয়াকে কেন ভোট দেবেন না তা বোঝাতে গিয়ে বারবার পুরনো দিনে ফিরে যান মমতা।

সুমন ঘোষ

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:০৭
সবংয়ের সভায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

সবংয়ের সভায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

পুরনো বন্ধু এখন প্রতিপক্ষ। তার দোসর আবার চিরকালের ‘শত্রু’। কংগ্রেসের শক্ত মাটিতে প্রচারে এসে তাই পুরনো বিরোধই উস্কে দিলেন তৃণমূল নেত্রী।

এ বারের ভোট প্রচারে গোড়া থেকেই বাম-কংগ্রেস জোটকে বিঁধেছেন মমতা। কিন্তু শুক্রবার সবংয়ের বলপাইয়ের সভায় তা অন্য মাত্রা পায়। এলাকার জোট প্রার্থী কংগ্রেসের মানস ভুঁইয়াকে কেন ভোট দেবেন না তা বোঝাতে গিয়ে বারবার পুরনো দিনে ফিরে যান মমতা। সেই সব দিনে যখন তিনি কংগ্রেসে, আর রাজ্যের ক্ষমতায় সিপিএম।

মমতা এ দিন জানান, আশির দশকের গোড়ায় তিনি সবংয়ে এসেছিলেন কংগ্রেসের সম্মেলনে যোগ দিতে। তখন সিপিএমের লোকজন তাঁকে গুলতি ছুড়ে মেরেছিল। কেটে দেওয়া হয়েছিল রাস্তা। ভয় দেখাতে রাতে বেরিয়েছিল মশাল মিছিল। সারা রাত পেটে দানাপানি পর্যন্ত পড়েনি। মমতার কথায়, “ভাবতে পারছেন এত সবের পরেও দু’টো রাজনৈতিক দল এক হয়ে গেল! এতগুলো কর্মী খুন হয়ে গিয়েছে, একবার তাকানো নেই। ওরা রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা করেছে। আগামী দিনে এর জবাব কংগ্রেসকেও দিতে হবে, সিপিএমকেও দিতে হবে।” বাম ও কংগ্রেসের যে সব কর্মী-সমর্থক জোট মানতে পারেননি, তাঁদেরও কাছে টানার বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর কথায়, “সিপিএম আর কংগ্রেস পরস্পরের কাছে বিকিয়ে গিয়েছে। যে সব বামপন্থী ও কংগ্রেস কর্মীরা এটা মানতে পারছেন না, তাঁরা জোট বাঁধুন। তৃণমূল কংগ্রেস আপনাদের সঙ্গে আছে। জোট বেঁধে এই অনৈতিক ঘোঁটের বিরুদ্ধে ভোট দিন।”

নেত্রীর কথায় তাল মিলিয়ে সভায় উপস্থিত তৃণমূল নেতারা ঘাড় নাড়তে শুরু করেন। তাঁদেরই এক জন বলে ওঠেন, ‘‘দিদি তো ঠিকই বলছেন। তা-ও তো মঙ্গলকোটে সিপিএমের হামলার মুখে মানস ভুঁইয়ার দৌড়ের কথাটা বলতে ভুলে গেলেন।’’

এর কী জবাব দেবেন সবংয়ের বিদায়ী বিধায়ক? ২০১১ সালে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট প্রার্থী হিসেবে লড়াই করা মানসবাবু বলছেন, “বেইমান তো তৃণমূল। মাত্র ৬৫টি আসন নিয়ে জোট করেছিলাম। কিন্তু ওঁরা সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বেইমানি করল। এই বেইমান ও বিধ্বংসী দলের কাছ থেকে বাংলার মা-বোনেদের বাঁচাতে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে নতুন জোট করেছি। মানুষ ঠিক বুঝবেন।” দু’দিন আগেই তৃণমূলের তরফে তাঁর বিরুদ্ধে ছিনতাই শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সে কথা মনে করিয়ে মানসবাবুর সংযোজন, ‘‘এই উপহার কিন্তু তৃণমূল আমলেই পেয়েছি। বাম আমলে যত অত্যাচার হোক না কেন এমন অভিজ্ঞতা হয়নি।’’

মমতা অবশ্য এ দিন বারবার বিঁধেছেন বাম-কংগ্রেস জোটকে। সিপিএম আমলে ৫৫ হাজার কংগ্রেস কর্মী খুন হয়েছে জানিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “যদি আনাচে-কানাচে কোনও কংগ্রেস কর্মী থাকেন যাঁরা সিপিএমের বিরুদ্ধে লাগাতার লড়াই করার জন্য আমাকে একটু হলেও ভালবাসেন, তাঁদের জিজ্ঞাসা করব, কোনওদিন কি চেয়েছিলেন যে চন্দ্র আর সূর্য

দু’টো একই সঙ্গে একই আকাশে উঠবে? এখানে চন্দ্র সূর্য এক সাথে উঠছে। দেখুন কংগ্রেস সিপিএম এক সাথে।” এই পরিস্থিতিতে মানসকে ‘বোল্ড আউট’ করার ডাক দিয়ে সবংবাসীর কাছে মমতার আবেদন, “অনেক দিন জিতিয়েছেন দাদাকে। আপনাদের যদি আমার প্রতি একটুও ভরসা থাকে, আর মানস ভুঁইয়াকে ভোটটা দেবেন না।”

যা শুনে মানসবাবু হাসছেন। বলছেন, ‘‘সবংবাসী জানেন কাকে ভরসা করতে হবে।’’

আরও পড়ুন:
জোটের দায়ে রাহুলের মাঠ ভরাচ্ছে বামেরাই

assembly election 2016 Mamata sabang campaign
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy