Advertisement
E-Paper

অল্প নিয়ে আছেন, আপাতত এটাই ‘ঢের’

ভোটের প্রচারে দলের ছোট-বড়-মাঝারি সব নেতাই যখন তুমুল ব্যস্ততায়, তখন তাঁর ঘুম ভেঙেছে সকাল সাড়ে দশটায়। লেক গার্ডেন্সের বাড়ির বসার ঘরে দুই অনুগামী ছাড়া আর কেউ নেই। গাড়ির চালক এসে বসে রয়েছেন। কিন্তু তাঁর বিশেষ কোথাও যাওয়ার নেই।

সোমা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০২:২৫
প্রচারে সৌগত রায়। — নিজস্ব চিত্র

প্রচারে সৌগত রায়। — নিজস্ব চিত্র

ভোটের প্রচারে দলের ছোট-বড়-মাঝারি সব নেতাই যখন তুমুল ব্যস্ততায়, তখন তাঁর ঘুম ভেঙেছে সকাল সাড়ে দশটায়। লেক গার্ডেন্সের বাড়ির বসার ঘরে দুই অনুগামী ছাড়া আর কেউ নেই। গাড়ির চালক এসে বসে রয়েছেন। কিন্তু তাঁর বিশেষ কোথাও যাওয়ার নেই। লুঙ্গি, টি-শার্ট, চোখে-মুখে গভীর ক্লান্তি আর কপালে ভাঁজ নিয়ে নিঃসঙ্গ সৌগত রায় বললেন, ‘‘প্রচারে যাচ্ছি না কে বলল? নিজের মতো রয়েছি। যাঁরা ডাকছেন যাচ্ছি। যেখানে যেটুকু বলার, বলছি। যেটুকু সুযোগ পাচ্ছি, তাতেই সন্তুষ্ট থাকার চেষ্টা করছি।’’

প্রচারে একেবারেই বেরোতে হচ্ছে না, তা নয়। কিন্তু ডাক আসছে অনেক কম। নারদ ভিডিও প্রকাশের পরে তাঁকে পাশে নিয়ে প্রচারে যাওয়ার ক্ষেত্রে অস্বস্তি রয়েছে দলের অনেক নেতা-কর্মীরই। তবে তারই মধ্যে কেউ কেউ আসার অনুরোধ জানাচ্ছেন। যেমন জানিয়েছিলেন ব্রাত্য বসু। সৌগত বললেন, ‘‘বহু মানুষ তো হাজির ছিলেন ওই প্রচারে। কেউ কোনও প্রশ্ন তুলেছেন? কেউ না। আমি বিশ্বাস করি, মানুষের মনে এ সব নিয়ে কোনও প্রভাব পড়েনি।’’

কিন্তু খোদ মুখ্যমন্ত্রী তো রবিবার জনসভায় স্বীকার করেছেন, নারদে নাম জড়িয়েছে যাঁদের, আগে জানলে তাঁদের টিকিটই দিতেন না তিনি। যেখানে দলনেত্রীই এটা স্বীকার করে নেন, সেখানে সাধারণ ভোটারের উপরে এর কোনও প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন তিনি? সৌগতর জবাব, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী একাই গোটা নির্বাচনের প্রচারের দায়িত্ব নিয়েছেন। সেই তিনিই বিভিন্ন জেলা চষে বেড়ানোর পরে যখন ভোটপর্বের মাঝখানে এসে মনে করছেন, এটাই ওই কথাগুলো বলার আদর্শ সময়, তখন নিশ্চয় কিছু ভাবনাচিন্তা করেই বলেছেন।’’

সেই ‘ভাবনাচিন্তা’ কি আদতে অন্যদের দায় ঝেড়ে ফেলে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা? সরাসরি কোনও জবাব দেননি সৌগত। বলেছেন, ‘‘আমি বাচ্চা ছেলে নই। সব জানি। সব বুঝি। এ নিয়ে কিছু বলব না।’’

এর আগে দলের ‘সঙ্গে থেকে’ও বারবার বহু ‘অপ্রিয় সত্য’ বলে বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। কিছু দিন আগেই দমদমে দলের কর্মিসভায় বলেছিলেন, ‘‘দেখবেন, বিধানসভা ভোটে যেন জল মেশানোর অভিযোগ না ওঠে। এর আগে কোনও কাউন্সিলরের ভোটে যদি জল মিশে থাকে, তা হলে এ বার সেই প্রলোভন ছাড়তে হবে।’’ বলেছিলেন, ‘‘ক্ষুব্ধ মানুষের কাছে যান, বলুন ভুল হয়েছে।’’

এখনও কি সেই অবস্থানেই রয়েছেন তিনি? সৌগত বলেন, ‘‘একটা ‘সেট মেশিনারি’ এখন ভোট করাচ্ছে। তারা সর্বশক্তি দিয়ে লড়ছে। এখন ঠিক-ভুল বিচারের কথা মনে করিয়ে দিলেও আর কিছু হওয়ার নয়। এখন আমি কিছু বললে ওঁদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে। অনেক কিছু বলার আছে। তবে এটা বলার সময় নয়। ভোটের পরে বলব।’’

নারদ-কাণ্ডে যাঁরা তৃণমূলকে সরাসরি অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন, তাঁদের মধ্যে তাঁর নামটা বিশেষভাবে উল্লেখ্যযোগ্য। কারণ, বিরোধী দলের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে তাঁর প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীরা পর্যন্ত সকলেই এক বাক্যে জানিয়েছিলেন, সৌগত রায়কে টাকা নিতে দেখা তাঁদের কাছে একটা বড়সড় ধাক্কা। এই পরিস্থিতিতে দলীয় কর্মীদের নীতিবাক্য শেখানোর মতো মুখ কি রয়েছে তাঁর? সরাসরি এই প্রশ্নের কোনও উত্তর দেননি অধ্যাপক সৌগত রায়।

assembly election 2016 busy election campaign
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy