Advertisement
০২ মে ২০২৪
CPM

Bengal Polls: বাংলাকে বিপদ থেকে বাঁচান, অডিয়োয় বুদ্ধ

সরকারে থাকার সময়ে বুদ্ধবাবুর কাছে অগ্রাধিকার ছিল শিল্প ও কর্মসংস্থান। ভোটের মুখে তাঁর বার্তাতেও উঠে এসেছে শিল্পে বেহাল দশার প্রসঙ্গ।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২১ ০৭:৩৬
Share: Save:

রাজ্যে দ্বিতীয় দফার বিধানসভা ভোটের আগে এ বার সংযুক্ত মোর্চার জোটের পক্ষে অডিয়ো-বার্তা দিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। অসুস্থতা ও শ্বাসকষ্টের কারণে ক্ষীণ হয়ে আসা কণ্ঠে সেই অডিয়োয় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা গেল, ‘‘আমার আবেদন সকলের কাছে, পশ্চিমবাংলাকে বিপদ থেকে রক্ষা করুন। গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ সরকার তৈরি করে পশ্চিমবঙ্গে নতুন ইতিহাস তৈরি করুন।’’

নতুন প্রজন্মের উপরে ভরসা রেখে স্বৈরতন্ত্র ও সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বিরুদ্ধে রায় দেওয়ার জন্য লিখিত বার্তায় সোমবারই আবেদন জানিয়েছিলেন বুদ্ধবাবু। সিপিএমের তরফে মঙ্গলবার প্রকাশ করা অডিয়ো-বার্তায় আরও বিশদে রাজ্যের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, তৃণমূলের আমলে স্বৈরতন্ত্র ও নৈরাজ্য চেপে বসেছে। কিন্তু অন্য দিকে বেড়ে গিয়েছে বিজেপির আগ্রাসন। তাই বাংলা এখন বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে। এমতাবস্থায় গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ জোটের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন বুদ্ধবাবু। তাঁর এই বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘বুদ্ধবাবু প্রমাণ করে দিলেন, তিনিই বাংলার মুখ। তাঁর বক্তব্য নিঃসন্দেহে সর্বত্র জোট-প্রার্থীদের উৎসাহিত করবে। কোনও কুরুচিপূর্ণ শব্দ ব্যবহার না করে ঐতিহ্যশালী বাংলায় তিনি বর্তমান পরিস্থিতির সার কথা বলে দিয়েছেন।’’

দল পরিচালনার ভার সহকর্মীদের হাতে ছেড়ে অন্তরালেই এখন চলে গিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। অসুস্থতার কারণে তিনি ঘরবন্দিও। এ বারের অডিয়ো-বার্তায় দীর্ঘ দিন পরে তাঁর গলা আবার শোনা যাচ্ছে জনসমক্ষে। টানা কথা বলতে এখন সমস্যা হয়। থেমে থেমেই বিজেপি এবং তৃণমূলকে নিশানা করেছেন বুদ্ধবাবু। তাঁর মতে, বিজেপি ও তৃণমূলের কারণে এক দিকে যেমন সমস্যা তৈরি হয়েছে, তেমনই বামেদের সামনে এসেছে সুযোগও।

বুদ্ধবাবুর কথায়, ‘‘তৃণমূলের স্বৈরতান্ত্রিক নৈরাজ্য এবং বিজেপির আগ্রাসন রাজ্যে যেমন বিপদের পরিবেশ তৈরি করেছে, তেমনই এনে দিয়েছে এক সম্ভাবনা। বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং ধর্মনিরপেক্ষ একটি দল, তারা একটি যৌথ মঞ্চ তৈরি করেছে। এই নির্বাচনে সংগ্রাম করার জন্য। রাজ্যের যুব সমাজ এই সংগ্রামের সামনের সারিতে রয়েছে। তারা চায় শিল্প, তারা চায় শিক্ষা, তারা চায় সমাজের উন্নত মূল্যবোধ। নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে বাম, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির জয় হলে নতুন সরকার তৈরি হবে। যারা সাধারণ মানুষ, শ্রমিক, কৃষক, মানুষের জীবন-জীবিকার দাবিগুলি সম্পর্কে সতর্ক থেকে কাজ করবে।’’

সরকারে থাকার সময়ে বুদ্ধবাবুর কাছে অগ্রাধিকার ছিল শিল্প ও কর্মসংস্থান। ভোটের মুখে তাঁর বার্তাতেও উঠে এসেছে শিল্পে বেহাল দশার প্রসঙ্গ। বুদ্ধবাবু বলেছেন, ‘‘এ রাজ্যে শিল্প, শিল্পায়ন সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। গত ১০ বছরে উল্লেখযোগ্য একটি শিল্পও আসেনি। শিক্ষায় নৈরাজ্য, স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে, নাগরিক জীবনের চাহিদাগুলি অবহেলিত। সামাজিক জীবনে গণতন্ত্র আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষত, যুব সম্প্রদায় যাঁরা দেশের ভবিষ্যৎ, তাঁরা এখন আশাহীন, উদ্যোগহীন, হতাশায় জড়িয়ে পড়ছেন। দেশের অন্যান্য জায়গায় গিয়ে চাকরির সন্ধানে বাঁচার চেষ্টা করছেন।’’ এই পরিস্থিতি চলতে পারে না বলে মন্তব্য করে সংযুক্ত মোর্চাকে সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE