পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ঘটনাচক্রে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে বিরাট মাপের নেত্রী ভাবার কোনও কারণই নেই। বললেন অধীর চৌধুরী। আনন্দবাজার ওয়েবসাইটের জন্য অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে অধীরের চ্যালেঞ্জ, ক্ষমতা থাকলে সারদা কাণ্ডের তদন্তটুকুই ঠিক মতো করিয়ে দেখান মমতা।
রাজ্যের ২৯৪টি আসনেই তিনি নিজে প্রার্থী, ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কতটা আত্মবিশ্বাসী হলে বা কত বিরাট ব্যক্তিত্ব হলে এমন রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়া যায়? এমন প্রশ্নে দৃশ্যতই রেগে গেলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। বললেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিরাট ব্যক্তিত্ব (টাওয়ারিং পার্সোনালিটি) আপনারা ভাবতে পারেন। আমি কোনও দিনই তা ভাবি না। তিনি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির ঘটনাক্রমিক সুবিধাভোগী। একটা বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল, তার সুযোগ নিয়ে মমতা মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেছেন।’’
পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েও যদি মুখ্যমন্ত্রী হয়ে থাকেন, তা হলেও সুযোগটাতো এক মাত্র তিনিই নিতে পারলেন। আর তো কেউ পারলেন না। এ বারও সপাটে ব্যাট চালানোর চেষ্টা করলেন অধীর। বললেন, ‘‘পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কেউ সুবিধাভোগী হয়ে গেলে, তিনি একটা বিরাট ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন, এমন কথার কোনও মানে নেই। বিরাট ব্যক্তিত্ব যদি সত্যিই হতেন, তা হলে ২৪ ঘণ্টা অন্তর অন্তর নিজের বক্তব্য বদলানোর কোনও প্রয়োজন পড়ত না।’’
দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাংঘাতিক বিঁধলেন অধীর। টেনে আনলেন তহেলকা কাণ্ডের স্মৃতি। বললেন, ‘‘তহেলকা কাণ্ড মাত্র এক লক্ষ টাকা বা দু’লক্ষ টাকার দুর্নীতি ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, আমি এই দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারে থাকব না। আমি বেরিয়ে এলাম। আর আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চোরকে চোর বলতে পারছেন না। টিভির পর্দায় দেখা যাচ্ছে, তাঁর দলের মন্ত্রীরা, সাংসদরা ঘুষ খাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, মন্তব্য করছেন যে মাফিয়া ছাড়া এই সরকার চলবে না। এতে তো এঁদের রাজনৈতিক মানসিকতাটাই প্রকাশ পায়। সেই দলের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে আসমান-জমিন ফারাক।’’
দেখুন ভিডিও
এর পরই এল সারদা খোঁচা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বললেন, ‘‘আজকে যদি সারদার তদন্ত হয়, সিধা মমতার বাড়িতে ঢুকে যাবে সিবিআই। ক্ষমতা আছে, সারদার তদন্তকে আরও ভাল ভাবে এ রাজ্যের বুকে চলতে দেওয়ার? ক্ষমতা নেই। কারণ তিনি জানেন, সারদা তদন্ত যদি ঠিক মতো হয়, তা হলে তা তাঁর নিজের ঘরেই ঢুকে পড়বে।’’
দুর্নীতি, দালালরাজ, সিন্ডিকেট আর মাফিয়ারাজের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মমতা, এমন মন্তব্যও করলেন অধীর। বললেন, ‘‘বাংলার সব শেষ হয়ে গিয়েছে, অস্বীকার করার কিছু নেই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প— সব শেষ। কিন্তু এখনও আমি মনে করি, বাংলার মানুষের রুচি, সংস্কৃতি শেষ হয়ে যায়নি। বাংলার মানুষের মধ্যে ন্যায়বোধ এখনও রয়েছে। আর তা যদি হয়, তা হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমা পাবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy