Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভিডিও অস্ত্রে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভোট-যুদ্ধে নেমেছে যুযুধান দু’পক্ষ

২০১৬-র বঙ্গ-যুদ্ধের ময়দানে আপনাকে স্বাগত! এই যুদ্ধ শুধু মাঠে-ময়দানে বা দেওয়ালে দেওয়ালে নয়। যুগের ধর্ম মেনে রণাঙ্গন এ বার সোশ্যাল মিডিয়াও। দুই যুযুধান শিবিরই সেখানে জমি ছাড়তে নারাজ! তাই তৃণমূল যখন মিউজিক ভিডিও এনে বাংলা জুড়ে উন্নয়ন ও আনন্দের লহরের কথা বলছে, সিপিএম পাল্টা তৈরি করছে আলাদা আলাদা ভিডিও ক্লিপ। যেখানে কোথাও চা-বাগানের শ্রমিকদের দুর্দশা দেখানো হচ্ছে, কোথাও আবার সামনে আনা হচ্ছে পুলিশকে মেরুদণ্ডহীন করে রেখে শাসক দলের মদতে দুষ্কৃতী দাপটের অভিযোগ। এক দিকে খুশির ছবি। আনন্দে আছেন মানুষ। আরও আরও ভাল দিন আসার আশাও দেখা যাচ্ছে। আর অন্য দিকে, চায়ের কাপ থেকে চলকে পড়ছে রক্ত! থানার মধ্যেই পুলিশ মাথা লুকোচ্ছে ফাইলের তলায়!

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৬ ০৪:০৮
Share: Save:

২০১৬-র বঙ্গ-যুদ্ধের ময়দানে আপনাকে স্বাগত!

এই যুদ্ধ শুধু মাঠে-ময়দানে বা দেওয়ালে দেওয়ালে নয়। যুগের ধর্ম মেনে রণাঙ্গন এ বার সোশ্যাল মিডিয়াও। দুই যুযুধান শিবিরই সেখানে জমি ছাড়তে নারাজ! তাই তৃণমূল যখন মিউজিক ভিডিও এনে বাংলা জুড়ে উন্নয়ন ও আনন্দের লহরের কথা বলছে, সিপিএম পাল্টা তৈরি করছে আলাদা আলাদা ভিডিও ক্লিপ। যেখানে কোথাও চা-বাগানের শ্রমিকদের দুর্দশা দেখানো হচ্ছে, কোথাও আবার সামনে আনা হচ্ছে পুলিশকে মেরুদণ্ডহীন করে রেখে শাসক দলের মদতে দুষ্কৃতী দাপটের অভিযোগ। এক দিকে খুশির ছবি। আনন্দে আছেন মানুষ। আরও আরও ভাল দিন আসার আশাও দেখা যাচ্ছে। আর অন্য দিকে, চায়ের কাপ থেকে চলকে পড়ছে রক্ত! থানার মধ্যেই পুলিশ মাথা লুকোচ্ছে ফাইলের তলায়!

দু’তরফের সব ভিডিওই দেড় থেকে দু’মিনিট দৈর্ঘ্যের।


তৃণমূলের মিউজিক ভিডিও

তৃণমূলের মিউজিক ভিডিও আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করেছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আপনাদের জন্য এই মিউজিক ভিডিও আনতে পেরে আমি খুব খুশি। এই তৃণমূল সঙ্গীত উপভোগ করুন আপনারা!’’ শাসক দল বলেই হয়তো, মমতার দলের ভিডিও-প্রয়াসে পেশাদারিত্বের ছোঁয়া বেশি। ভিডিও পরিচালনা করেছেন অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, গান লিখেছেন অনুপম রায়। ভিডিওয় অনুপমের সঙ্গেই তৃণমূল সঙ্গীতে গলা মেলাতে শোনা যাচ্ছে শ্রীকান্ত আচার্য, সোমলতা, প্রতীক চৌধুরী, রূপঙ্কর বাগচি, লোপামুদ্রা মিত্র ও উজ্জয়িনী মুখোপাধ্যায়কে। গত পাঁচ বছরে পাহাড় থেকে জঙ্গলমহল, গোটা বাংলার সার্বিক উন্নতির ছবি দেখানো হয়েছে মিউজিক ভিডিওয়।

সিপিএম আবার দেখাতে চেয়েছে সার্বিক অবনতির করুণ চিত্র। চা-বাগানে মৃত্যুর মিছিল কী ভাবে লম্বা হয়েছে, তার বিষাদ ধরা হয়েছে ভিডিও ক্লিপিংয়ে। কেন্দ্রে বিজেপি এবং রাজ্যে তৃণমূল সরকারের উদাসীনতায় চা-শ্রমিকদের জীবন যে শুকিয়ে যাচ্ছে, ভিডিওয় নেপথ্য ভাষণে থাকছে তার বিবরণ। আবার অন্য একটি ভিডিও শুরু হচ্ছে ২০১১ সালের নভেম্বরে ভবানীপুর থানায় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতার হাজির হয়ে যাওয়ার ফুটেজ দেখিয়ে। প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, অভিযুক্তকে ছাড়িয়ে আনতে যেখানে মুখ্যমন্ত্রী থানায় চলে যান, সেই রাজ্যে আইনের শাসন বলে কিছু থাকে কি? একের পর এক ঘটনায় পুলিশের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য দিয়ে অভিযোগ করা হচ্ছে, এ রাজ্যে কেউই আর নিরাপদ নন!

এ বারের প্রচারে মূলত চার ভাবে সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করতে চাইছে সিপিএম। এক তো দলের রাজ্য কমিটির ওয়েবসাইট রয়েছে। পাশাপাশি তাদের ফেসবুক পেজ-ও রয়েছে। এ ছাড়া দলের রাজ্য সম্পাদক সীর্যকান্ত মিশ্র-সহ অনেক নেতারই রয়েছে টুইটার হ্যান্ডল। দলের তরফে সেই টুইটগুলোই রি-টুইট করা হচ্ছে। সিপিএম সূত্রে জানানো হয়েছে, এ বার হোয়াট্‌সঅ্যাপকেও যথেষ্ঠ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন গ্রুপ তৈরি করে সেখানে প্রচার চালানো হবে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘আমাদের নিজস্ব টিম দিয়েই এই ধরনের ভিডিও ক্লিপ তৈরি করা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে এটা খুব কার্যকরী অস্ত্র।’’

সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য অভীক দত্ত বলেন, ‘‘প্রথাগত প্রচারের পাশাপাশি আজকের দিনে সোশ্যাল মিডিয়ারও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া ভলান্টিয়ার তৈরি করা হচ্ছে। প্রায় এক লাখ ভলান্টিয়ার এই কাজ করবেন বলে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। তাঁরা মূলত বিভিন্ন ভাবে সোশ্যাল মিডিয়াটাকে সামলাবেন। কার্টুন থেকে অডিও-ভিডিও পোস্ট— সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা রকম ভাবে প্রচার চালানো হবে।’’

অস্ত্র নিয়ে অতএব ‘সোশ্যাল’ ময়দানে দু’পক্ষই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE