দীর্ঘ টানাপড়েনের অবসান। পুরোনো স্থানেই ফিরে আসতে চলেছেন অন্যত্র বদলি হওয়া শিক্ষকেরা। জেলার প্রতিটি স্কুলে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে বাছাই করা শিক্ষকদের দূরবর্তী জেলায় বদলি করা হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে এমন ১,০০০ জনের তালিকা তৈরি করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। যাঁদের মধ্যে ৬০৫ জনের কাছে বদলির আদেশও পৌঁছে গিয়েছিল। তাঁদেরই পুরনো স্কুলে ফিরিয়ে আনছে সরকার।
শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আগামী দিনে এই ধরনের বদলির ক্ষেত্রে অনলাইন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার আশা রাখছি। একই সঙ্গে কাছের স্কুলগুলিতে বদলি নীতি চালু করারও দাবি জানাচ্ছি।”
ছাত্র-শিক্ষকের সংখ্যার অনুপাত সঠিক রাখতে ২০২৩ সালে রাজ্য সরকারের তরফে এই বিশেষ ‘সারপ্লাস ট্রান্সফার’-এর প্রক্রিয়া চালু করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় যাঁদের বদলি করা হয়েছিল, তাঁদের পুরনো কর্মস্থলেই ফেরানো হবে।
১০-সি ধারায় বাড়তি শিক্ষক-শিক্ষিকা হিসাবে ৬০৫ জনের বদলির সুপারিশ করা হয়েছিল। তবে বিকাশ ভবনের তরফে এরই মাঝে ১১০ জনের সুপারিশ বাতিল করা হয়। বর্তমানে ধাপে ধাপে ৬০৫-এর মধ্যে বাকি ৪৯৫ জনের সারপ্লাস ট্রান্সফারের মাধ্যমে বদলির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এসএসসির নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী, শিক্ষকেরা পুরোনো স্কুলে বদলি হতে পারবেন। এ ছাড়াও পরবর্তীকালে সারপ্লাস ট্রান্সফার ৩০ থেকে ৫০ কিমির মধ্যে করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাসের অভিযোগ, ‘‘বার বার বদলির প্রক্রিয়া এবং তার নিয়মে রদবদলের কারণে বিভ্রান্ত হচ্ছেন শিক্ষকেরা। বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করে তার পরই সরকারের সিদ্ধান্তে আসা দরকার।’’
শিক্ষক সংগঠনের একাংশের দাবি, দূরবর্তী স্কুলগুলিতে বদলি হওয়ায় শিক্ষক শিক্ষিকাদের মধ্যে অসন্তোষের বিষয়টি শিক্ষা দফতরকে জানানো হয়েছিল। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সেই অর্ডার তুলে নিয়েছে।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘এসএসসি এত দিন পরে অর্ডার বাতিল করলেও সুপারিশ তুলে নিয়েছে কি না, তা স্পষ্ট করা হয়নি। মধ্যশিক্ষা পর্ষদও এখনও বদলির অর্ডার প্রত্যাহার করে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পুরোনো স্কুলে ফিরে আসার নির্দেশ দেয়নি। এই বিষয়টি অবিলম্বে খতিয়ে দেখা হোক।’’
এরই সঙ্গে জানা গিয়েছে, উৎসশ্রী পোর্টাল মারফত আপস বদলি বা মিউচুয়াল ট্রান্সফারের আবেদনও দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ওই পোর্টাল চালু করার পর এখনও পর্যন্ত ১০০-র বেশি আবেদন জমা পড়েছে।