Advertisement
E-Paper

Amit Saha: ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামার পরীক্ষায় দু’বার ফেল! তবু সফল ‘লুটেরা’, ‘ভটভটি’র অমিত

হাতে একগুচ্ছ ছবি। যেগুলোর ভিতরে অমিত আছেন, আবার নেইও। দিলখোলা রাখালের মতো তিনি ছুটে বেড়ান। অকপট অমিত সাহা।

তিয়াস বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২২ ১০:৫২
কী ভাবে সাফল্যের সরণিতে অভিনেতা অমিত সাহা

কী ভাবে সাফল্যের সরণিতে অভিনেতা অমিত সাহা

প্রশ্ন: যে চরিত্রেই অভিনয় করেন সেটাই মনে থেকে যায়...

অমিত: সে তো স্ক্রিপ্ট এবং পরিচালকদের গুণে। দর্শক কাউকে ভালবাসতে চান, সেটা দর্শকের মহানুভবতা।

প্রশ্ন: বেছে বেছে চরিত্র করেন?

অমিত: তা ঠিক নয়, আবার বাছিও। তবে গরিবের তো ছুঁতমার্গ কম থাকে, আমারও তাই। ওই পারফর্ম করা ছাড়া আমার আর কাজ নেই।

প্রশ্ন: আপনার কি মনে হয় যে, আপনি কোথাও পৌঁছননি?

অমিত: জায়গাটাই দেখতে পাচ্ছি না...। সবাই যেমন চলছে আমিও চলছি।

প্রশ্ন: অভিনয় করছেন তা-ও তো বছর ২০ হল…

অমিত: বেশিই হবে। তবে অডিয়ো-ভিজুয়াল, যেটা নিয়ে লোকে বেশি নাচানাচি করে, সেখানে অভিনয়ের বয়স ১২ বছর। তার আগে থিয়েটার করতাম। এখনও সেটাই করি।

প্রশ্ন: ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামায় ঢোকার ইচ্ছে ছিল?

অমিত: দু’বার পরীক্ষা দিয়েছি, দু’বারই ফেল করেছি। আর চেষ্টা করিনি।

প্রশ্ন: পর্দায় অভিনয় কি প্রদীপ্ত ভট্টাচার্যের সঙ্গে কাজ করতে গিয়েই শুরু?

অমিত: হ্যাঁ, তা বলা যায়। রূপকলা কেন্দ্রের ছাত্র ছিল প্রদীপ্ত। ‘বাকিটা ব্যক্তিগত’-র জন্য অভিনেতা খুঁজছিল। তখন আমি অডিশন দিই। সেই একসঙ্গে কাজ শুরু আর কি...। আগেও অবশ্য প্রদীপ্তর ‘পিঙ্কি আই লাভ ইউ’-তে ছিলাম। রূপকলার কাজ করতে গিয়ে ঋত্বিকের সঙ্গেও আলাপ।

প্রশ্ন: আগে চাকরি করতেন?

অমিত: আমি ছোট থেকেই কিছু না কিছু করে রোজগার করি। আগে চাকরি করতাম একটি টেলিভিশন চ্যানেলে। মেকআপ আর্টিস্ট ছিলাম।

প্রশ্ন: সাজাতে ভাল লাগে আপনার?

অমিত: না না, থিয়েটার করতে গিয়ে এ সব শিখেছি। আলো, মেকআপ, স্টেজ— যা কিছু করে টাকা আসে আর কি...। আমি সেগুলো রপ্ত করে নিয়েছিলাম।

প্রশ্ন: নাটক নিয়ে পড়াশোনাও তো করেছেন?

অমিত: কমার্স পড়তাম। পরে বেশি বয়সে হঠাৎ ইচ্ছে হল স্পেশাল অনার্স পড়ব। তাই রবীন্দ্রভারতীতে নাটক নিয়ে ভর্তি হলাম। তবে ভাল লাগল না, ছেড়ে দিলাম। যোগেশ দত্তর মাইমে ডিপ্লোমা করলাম একটা। ওই নাটকের প্রয়োজনেই আর কি, যখন যা লাগবে স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য।

প্রশ্ন: অভিনয়টাই যে হবে, সেটা কি জানতেন?

অমিত: না জানতাম না। আমার ফোকাস ছিল না অত। তবে অভিনয় ভালবাসতাম। পেশাদার অভিনেতা হব ভাবিনি। রোজগারের জন্য টুকটাক কাজ করতাম।

প্রশ্ন: আর প্রেম?

অমিত: হ্যাঁ, সবাই যেমন করে আমিও করেছি। শুরুতে দু-একটা এ দিক-ও দিক। তার পর সে। তার পর বিয়ে। আমার স্ত্রীও এখন আমাদের সঙ্গে ‘বিদূষক নাট্যমণ্ডলী’তে অভিনয় করে।

প্রশ্ন: ‘অনন্ত’ মুক্তি পাচ্ছে, তার পর ‘ভটভটি’। ‘বিরহী ২’-এর শ্যুটিং চলছে, হাতে তো এখন একগুচ্ছ কাজ?

অমিত: আমি সব জায়গায় আছি, আবার সে ভাবে নেইও। চরিত্রগুলোয় অনেক স্তর। এ মাসে দুটো ছবি রিলিজ করছে। সেই সঙ্গে ফেস্টিভ্যাল ঘুরছে নিজেদের কাজ ‘নিতান্তই সহজ সরল’। মাস দুই-তিনের মধ্যে ওটার মুক্তির চেষ্টা চালাচ্ছি।

প্রশ্ন: কোন ছবি দিয়ে দর্শক আপনাকে সবচেয়ে বেশি চেনে বলে মনে হয়?

অমিত: হতে পারে সেটা ‘বাকিটা ব্যক্তিগত’। তবে ‘লুটেরা’ মুক্তির পরও দিল্লি থেকে বন্ধুরা ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল। ‘দ্য উওম্যান অ্যান্ড দ্য ম্যান’, ‘ওপেন টি বায়স্কোপ’-এক এক জন এক এক ছবিতে আমায় আবিষ্কার করেছেন।

আরও পড়ুন:

প্রশ্ন: অভিনেতা না হলে কী হতেন?

অমিত: হতাম কিছু একটা। কিছু না কিছু কাজ জুটিয়ে নিতাম। কাজ নিয়ে প্রেজুডিস আমার নেই, বহু রকম কাজ করেছি। টাকা রোজগার করতে আমি ভাল পারি। চাইলে দোকানও চালাতে পারতাম।

প্রশ্ন: সবই আলগোছে? বেশি গভীরে ডুব দেওয়ার সাধ নেই বোধ হয় আপনার...

অমিত: একদমই তাই। আমি জানলা দিয়ে উঁকি মেরে বেড়াই, দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকতে মন চায় না। রোদ উঠলে ভাল লাগে, বৃষ্টি হলে ভাল লাগে। প্রচণ্ড গরমে ঝিম মারা দুপুর ভাল লাগে।

প্রশ্ন: যদি উত্তর কলকাতার ছেলে না হয়ে বর্ধমানের গ্রামে বেড়ে উঠতেন, পারতেন কলকাতায় এসে কাজ করতে?

অমিত: কোনও ভাবেই সম্ভব হত না। যা কিছু করতে পেরেছি কলকাতায় থাকার সুবাদেই। বর্ধমানের গ্রামে জন্ম হলে সুযোগ দিলেও কিছু করতে পারতাম না। আমি এমনিতেই অলস প্রকৃতির। গা ছাড়া।

প্রশ্ন: বলিউডে কাজ করার স্বপ্ন দেখেন না?

অমিত: না। আমার কোনও স্বপ্ন নেই। ‘লুটেরা’র পরে আবার যদি ডাক আসে যাব। তবে চাই আমার চরিত্রগুলো যেন জ্যান্ত দেখায়। এটা নিয়েই আমার একটা সংশয় আছে।

প্রশ্ন: বরুণ ধবনের মতো দেখতে নন, চেহারা নিয়ে কি হীনমন্যতা ছিল?

অমিত: ছিল। কিন্তু এখন আর নেই। এখন যে ধরনের কাজ হয়, তাতে অভিনেতার প্রয়োজন হয়। চেহারা তো পালটে নেওয়া যায়।

প্রশ্ন: ‘বাকিটা ব্যক্তিগত’-য় ‘মোহিনী’-বাসী, ‘লুটেরা’-য় ইলেক্ট্রিশিয়ান, ‘ভটভটি’-তে বসতির সর্দার, আপনাকে এই ধরনের শ্রেণিচরিত্রে যত বেশি দেখা যায় অন্য ধরনের চরিত্রে একেবারেই দেখা যায়নি। যদি বড়লোকের বখাটে ছেলের ভূমিকা পান একই দক্ষতায় করবেন?

অমিত: হ্যাঁ, কেন নয়। আমি চেষ্টা করি চরিত্রগুলোকে অবজেক্টিভলি বুঝতে। যদিও সব সময় বুঝে উঠতে পারি না। তবে দীর্ঘ দিন অভিনয় করতে করতে সঞ্চয় তো তৈরি হয়, সেই সঞ্চয়টাই বার বার বেরিয়ে যায়। তার সঙ্গে কখনও কখনও পরিচালক, স্ক্রিপ্ট মিলে একটা সমন্বয় তৈরি হয়। যার ভিতরে ঢুকলে আমিও আমার বশে থাকি না। ফলে অন্য রকম কিছু করে ফেলি মাঝেমাঝে। তবে সত্যি তো নয় এটা। সত্যির মতো দেখানো। বড়লোকের ছেলে বা গরিব লোকটা তো আমি নই। চরিত্রের মধ্যে ঢুকে যাওয়ায় বিশ্বাসী নই। আমি অমিত, কী ভাবে এক জন শিবুর চরিত্রে ঢুকব!

Amit Saha Votvoti Lootera Bakita Byaktigato Interview theatre
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy