জেমস
প্র: ২০১৮-তে নতুন কোনও অ্যালবাম মুক্তির পরিকল্পনা আছে?
উ: নতুন গান তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে এখন শোয়ের চাপে নতুন গান তৈরির কাজে তেমন একটা সময় দিতে পারছি না। এই বছর বেশ কয়েকটি গান মুক্তি পাবে, অ্যালবাম নয়। এখন আর অ্যালবামের যুগ নেই। মাধ্যমটাই পালটে গিয়েছে।
প্র: সিডি থেকে ডিজিটাল মাধ্যমে এই রূপান্তরকে আপনি কী ভাবে দেখেন?
উ: এখন গান অনেকটাই অ্যাপকেন্দ্রিক। তার কিছু ভাল দিক থাকলেও গানের মজাটা থাকছে না। তবে ভাল গানের কদর সব সময়ই থাকবে। মান্না দে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান তো প্রজন্মের পর প্রজন্ম শুনছে। এখন সমস্যা হল, সারা দুনিয়াতেই ভাল গানের অভাব। শিল্পীকে কর্পোরেট ব্যবস্থা এমন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে যে, গুণমানে তার প্রভাব পড়ছে। এখান থেকে বেরোতে না পারলে নতুন সৃষ্টি হবে কী ভাবে? শিল্পীকে স্বাধীনতা দিতে হবে। ষাটের দশকে কিন্তু মিউজিক মুঘলরা গানের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করতেন না।
প্র: বলিউডে ‘ভিগি ভিগি’, ‘রিশতে’র মতো হিট গানের পরেও আপনাকে আর পাওয়া গেল না কেন?
উ: পেশাদার ভাবে কাজটা করতে হলে আমাকে মুম্বইয়ে থাকতে হতো। আমার পক্ষে সেটা সম্ভব ছিল না। তবে মাঝখানে ভেবেছিলাম, আমার জনপ্রিয় বাংলা গানগুলো হিন্দিতে রিক্রিয়েট করব। সময়ের অভাবে সেটা হচ্ছে না।
প্র: টলিউডেও অনুপস্থিতির কারণ কি সেটাই?
উ: এর কোনও নির্দিষ্ট কারণ নেই। অনেক বারই প্রস্তাব পেয়েছি। হয়তো সামনেই কোনও কাজ করতে পারি।
প্র: ফারুক মাহফুজ আনাম থেকে জেমস হলেন কী ভাবে?
উ: জেমস আমার ডাকনাম। বাবা-মা ওই নামে ডাকতেন। হঠাৎই দেখলাম জেমস নামেই পরিচিতি বাড়তে লাগল। ফারুক ক্রমশ অন্তরালে চলে গেল।
প্র: পড়াশোনায় অবহেলার জন্য বাবা নাকি আপনাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন?
উ: হ্যাঁ। তার পরেই বোর্ডিংয়ে থাকতে শুরু করি। সেখান থেকেই আমার গানের সফরের শুরু। তবে আক্ষেপ রয়ে গেল, বাবা আমার সাকসেসটা দেখে যেতে পারেননি।
প্র: আপনার জীবনকাহিনি তো সিনেমার প্লটও হতে পারে। বোহেমিয়ান জীবনযাত্রা, খ্যাতি, প্রেম, বিচ্ছেদ, আইকন হয়ে ওঠা... জীবনটাকে কী ভাবে দেখেন?
উ: (হেসে) সত্যি বলতে, ঘুরে তাকানোর মতো সময় নেই। আরও অনেক কাজ করতে চাই। তবে হ্যাঁ, কোনও একটা সময় নিশ্চয়ই এই চলার পথে একবার ঘুরে দেখব জীবনটাকে। যে জার্নিটা করেছি, চলার পথে স্ট্রাগল ফিরে দেখতে চাই। নাইট ক্লাবে গাইতাম, আবার বিয়ের অনুষ্ঠানেও গাইতে হতো। সবই আনন্দের সঙ্গে করতাম।
প্র: শোনা যায়, জেমস খুব বোহেমিয়ান। সেই কারণেই কি প্রথম বিয়েটা ভেঙে গেল?
উ: এ সব কথা থাক।
প্র: সাফল্যের পাশাপাশি প্রেমও তো এসেছে জীবনে...
উ: প্রেমের কি কোনও শেষ আছে? এখনও অনেক প্রস্তাব পাই (হেসে)।
প্র: আপনার সন্তানরা কী করেন?
উ: এক মেয়ে ডালাসে থাকে। আর এক মেয়ে ও ছেলে ঢাকায়। ছেলের ফিল্ম নিয়ে আগ্রহ রয়েছে। ছবি তৈরির চিন্তাভাবনা করছে। আর মেয়ে ম্যাট্রিক দেবে।
প্র: পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে?
উ: নিয়মিত হয়ে ওঠে না। অনেকেই বাইরে থাকে। তবে কেউ ঢাকায় এলে তখন কথা হয়।
প্র: আপনি তো গোটা দুনিয়া ঘুরে বেড়ান। বাংলাদেশের বাইরে আপনার সবচেয়ে পছন্দের জায়গা কোনটা?
উ: সত্যি বলব? আপনি হয়তো বলবেন, ক্লিশে উত্তর। কিন্তু সত্যিই কলকাতা আমার খুব প্রিয় শহর। এখানে সবাই বাংলায় কথা বলে, এটাই খুব ভাল লাগে। নিউ ইয়র্কও বেশ পছন্দের।
প্র: দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়ানোর কারণেই কি ফোটোগ্রাফির নেশায় পড়লেন?
উ: আমার এক ফোটোগ্রাফার বন্ধুই এই ভূত চাপিয়েছে। ও বলেছিল, ‘তুমি তো সারা বিশ্ব ঘুরে বেড়াও। নানা জায়গার ছবি তুলতে পারো তো।’ সেই শুরু... তবে এখন সেই নেশায় একটু ভাটা পড়েছে। নিজের শো নিয়ে খুব ব্যস্ত। এই তো, কলকাতাতেও তো কনসার্টের জন্যই এসেছি।
প্র: এত ব্যস্ততার মাঝে অবসর সময় কাটান কী ভাবে?
উ: বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আড্ডা দিই। গান শুনতেও ভাল লাগে। মার্লে, জিম মরিসনের গান খুব প্রিয়।
স্বর্ণাভ দেব
ছবি: সুদীপ্ত চন্দ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy