Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Anasua Mukherjee

Anasua Mukherjee: বালকের চরিত্র থেকে বিনোদিনী, নারীত্বেই প্রতিবাদ খুঁজে পেয়েছেন অনসূয়া মুখোপাধ্যায়

নারীদের মধ্যে প্রতিবাদী স্বর খুঁজে না পেয়েই কি বালক হয়ে ঘুরতেন? থিয়েটারই নারীত্বের স্বাদ এনে দিয়েছে অনসূয়াকে। বিনোদিনী তাঁর মনের দোসর।

থিয়েটারই নারীত্বের স্বাদ এনে দিয়েছে অনসূয়াকে

থিয়েটারই নারীত্বের স্বাদ এনে দিয়েছে অনসূয়াকে

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২২ ২০:৪৪
Share: Save:

ছোট করে ছাঁটা চুল। গেঞ্জি, হাফ প্যান্টে তাঁকে বালিকা বলে চেনাই যেত না। মঞ্চের কোণ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকতেন ছোট্ট অনসূয়া। এক মনে লক্ষ করতেন কুশলীদের অঙ্গভঙ্গি। অনায়াসে তুলে ফেলতেন কঠিন সংলাপ। তার পর যখন নিজেই অভিনেত্রী হলেন, পূর্ণতা পেল তাঁর নারীসত্তাও।অনসূয়া দেখলেন, এ সমাজ মহিলা নৃত্যশিল্পী, অভিনেত্রীদের আজও বাঁকা চোখে দেখে। কিন্তু কেন? উত্তর খুঁজতে খুঁজতেই লড়াকু নারীদের কণ্ঠস্বরকে আপন করে নিলেন তিনি।

বাবা মুরারি মুখোপাধ্যায় দক্ষিণেশ্বরের নাট্যদল ‘কোমল গান্ধার’-এর পরিচালক। পরপর নাটকে তাঁর তুমুল ব্যস্ততা। মা পূরবী মুখোপাধ্যায় একাধারে নৃত্যশিল্পী, বাচিক শিল্পী এবং অভিনেত্রী। তাঁদের কাছেই বেড়ে ওঠা। অনসূয়া যে নাটকের পথ ধরবেন, সে তো বলা বাহুল্য!

অনসূয়া তখন ৮ বছরের, সবে দ্বিতীয় শ্রেণি। মুরারির প্রযোজনায় ‘শেষ ইচ্ছে’ নাটকে ৭-৮ বছরের এক বালককে প্রয়োজন ‘রোদ্দুর’ চরিত্রে। জামাইকে প্রস্তাবটা দিলেন অনসূয়ার দিদিমাই। খানিক আপত্তি জানিয়ে শেষমেশ রাজি মুরারিও। ‘রোদ্দুর’ হলেন ছোট্ট অনসূয়া। অভিনয়ও করলেন নিখুঁত। সেই শুরু। একের পর এক নাটকের পথ বেয়ে সেই মেয়ে এখন সাবলীল অভিনেত্রী। অনসূয়ার নিজের কথায়, "থিয়েটারের সঙ্গে সহবাস করি আমি। নাটক আমার প্রথম প্রেম। পরিবার। যন্ত্রণা, ভালবাসা, গ্লানি উগরে দেওয়ার জায়গা সেই মঞ্চ।"

অভিনয় জীবনও তাঁকে দু’হাত ভরিয়ে দিয়েছে। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ নাট্য অ্যাকাডেমির বিচারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতে নিয়েছেন তিনি। তবে আনন্দবাজার অনলাইনের ফোনে ধরা দিলেন এক ‘ডাকাবুকো’ কন্যা। উনিশ শতকে সাড়া ফেলা নটী বিনোদিনীর চরিত্রে যে নারী অনায়াসে মানিয়ে গিয়েছেন এ শতকে। ‘কোমল গান্ধার'-এর প্রযোজনায় স্বল্প দৈর্ঘ্যের নাটক ‘অর্ধেক আকাশ’ নারীত্বের গল্প বলে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বুকে নারীর গর্জন হয়ে ভেসে বেড়ায় ‘বিনোদিনী’ অনসূয়ার সংলাপ, ‘‘এ কী অভিশপ্ত জীবন ঠাকুর, আমি ভাল হতে চাইলেও আমি ভাল হতে পারব না!’’ যুগের ব্যবধান থাকলেও বিনোদিনীকে নিজের দোসর ভাবেন এ যুগের তরুণী। তার চোখ দিয়েই নতুন করে চিনে নেন প্রতিবাদের ভাষা। শুধু নাটক নয়, ধারাবাহিকেও অভিনয় করেছেন অনুসূয়া। ‘ইকির মিকির’, ‘মোম পালক’-এ মূল চরিত্রে কাজ করেছেন। পার্শ্ব চরিত্র করেছেন আরও বহু ধারাবাহিকে। আকাশবাণীতে রেডিয়ো নাটক করেছেন বহু দিন। বড় পর্দায় ‘উইকেন্ডে সূর্যোদয়’ ছবিতেও দেখা গিয়েছিল অভিনেত্রীকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE