Avinash Wadhawan lost his stardom in bollywood very soon dgtl
bollywood
দুর্দান্ত সূত্রপাত, বিধ্বস্ত হয়ে বলিউড ত্যাগ করা নায়ক আজ ওয়েবসিরিজের পরিচিত মুখ
অবিনাশ সুযোগ পেলেন ‘আওয়াজ দে কহাঁ হ্যায়’ ছবিতে। বিপরীতে নায়িকা ছিলেন প্রাক্তন ভারতসুন্দরী শিখা স্বরূপ। নবাগত অবিনাশের নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশের জন্য এটা ছিল উপযুক্ত মঞ্চ।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১১:১২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
বলিউডে কেরিয়ার শুরু নয়ের দশকে। কাজ করেছেন সেরা পরিচালক এবং অভিনেতাদের সঙ্গে। সুপারহিট সূত্রপাতের পরেও বেশি দিন স্থায়ী হল না তাঁর বিজয়রথ। নামী নায়কের জায়গা থেকে অবিনাশ ওয়াধাবন চলে গেলেন ‘বিস্মৃত’-দের তালিকায়।
০২১৫
ছোট থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী ছিলেন অবিনাশ। সঙ্গে ছিল হিন্দি ছবি দেখার নেশা। ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পরে তিনি ভর্তি হন এমবিএ কোর্সে। সে সময়ে তিনি মোটা অঙ্কের বেতনের চাকরির প্রস্তাব পেতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু তিনি ঠিক করে নেন চাকরির নিশ্চিন্ত জীবন ছেড়ে তিনি বলিউডে পা রাখার জায়গা তৈরি করবেন।
০৩১৫
ইন্ডাস্ট্রিতে অবিনাশ ছিলেন বহিরাগত। কোনও পরিচিত ছিল না। কিন্তু তিনি হাল ছাড়লেন না। নিজের ভিডিয়ো তৈরি করে ঘুরতে লাগলেন প্রযোজকদের দরজায় দরজায়। কিছু ছবিতে ছোটখাটো ভূমিকায় অভিনয়ের সুযোগও পেলেন। নায়কের ভূমিকায় অভিনয়ের সুযোগ এল ১৯৯০ সালে।
০৪১৫
সে সময় বলিউডে রোমান্টিক ছবির জনপ্রয়িতার স্রোত এসেছিল। আমির খান এবং সলমন খানের রোমান্টিক ছবি সে সময় বক্স অফিসে ঝড় তুলত। অবিনাশ সুযোগ পেলেন ‘আওয়াজ দে কহাঁ হ্যায়’ ছবিতে। বিপরীতে নায়িকা ছিলেন প্রাক্তন ভারতসুন্দরী শিখা স্বরূপ। নবাগত অবিনাশের নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশের জন্য এটা ছিল উপযুক্ত মঞ্চ।
০৫১৫
ছবির পরিচালক ছিলেন সিবতে হাসান রিজভি। তাঁর কথায় নিজের নাম পাল্টে ফেলেন নবাগত নায়ক। অনেকেই জানেন না প্রথমে তাঁর নাম ছিল ‘রাকেশ’। পরিচালকের কথায় তিনি নাম পাল্টে নতুন নাম নেন ‘অবিনাশ’।
০৬১৫
প্রথম ছবিতে অবিনাশের কাজ প্রশংসিত হয়। এর পর তিনি সুযোগ পান ‘আই মিলন কি রাত’ ছবিতে। বিপরীতে নায়িকা ছিলেন সায়রা বানুর বোনঝি শাহিন। তিনি ছিলেন আর এক অভিনেতা সুমিত সেহগলের প্রথম স্ত্রী। এই ছবিও সফল হয় বক্স অফিসে।
০৭১৫
ফলে অবিনাশের কাছে সুযোগ আসতে থাকল। মহেশ ভট্টের ‘জুনুন’, পার্থ ঘোষের ‘গীত’ ছবিতে অভিনয় করলেন তিনি। বহু তারকাখচিত ছবি ‘পুলিশ অউর মুজরিম’ ছবিতেও বিনোদ খন্না, রাজকুমারের মতো তারকাদের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। তাঁর কেরিয়ারে উল্লেখযোগ্য বাকি ছবিগুলি হল ‘দিল কি বাজি’, ‘বালমা’ এবং ‘পাপি গুড়িয়া’।
০৮১৫
এমন পরিস্থিতি দাঁড়াল, একসঙ্গে ৪০-৫০ টা ছবিতে সই করলেন অবিনাশ। কিন্তু তার মধ্যে মুক্তি পেল কয়েকটি ছবি। অনেক ছবির কাজই শেষ হল না। ফলে তাঁর গায়ে ‘অপয়া’ তকমা লেগে গেল।
০৯১৫
পারিবারিক দিক থেকেও সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। প্রথম স্ত্রী ছায়ার সঙ্গে তীব্র মনোমালিন্যের জেরে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। সমস্যা এড়াতে অবিনাশ বেশির ভাগ সময় আমেরিকা, লন্ডনে থাকতেন। দীর্ঘ দিন বলিউড থেকে দূরে থাকায় তাঁর কেরিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
১০১৫
পরে তিনি আবার বলিউডে ফিরে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু তত দিনে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। বাকি নায়করা এত ভাল কাজ করছিলেন, অবিনাশকে কেউ মনে রাখেনি। লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে পালানো অবিনাশের জন্য কোনও জায়গাই ছিল না।
১১১৫
শূন্য থেকে শুরু করতে হল অবিনাশকে। পছন্দসই ভূমিকায় অভিনয়ের সুযোগও পাচ্ছিলেন না তিনি। হিন্দি থেকে সরে গিয়ে তিনি বাংলা, পঞ্জাবি, ভোজপুরী-সহ অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষার ছবিতেও অভিনয় করেন। দ্বিতীয় বার বিয়ে করে পারিবারিক জীবনেও আবার থিতু হওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
১২১৫
ছবির পাশাপাশি কাজ শুরু করলেন টেলিভিশনেও। ‘বালিকা বধূ’, ‘সিআইডি’, ‘সপনা বাবুল কা…বিদাই’, ‘শোভা সোমনাথ কি’-সহ বেশ কিছু জনপ্রিয় ধারাবাহিকের তিনি ছিলেন প্রথম সারির অভিনেতা। এখন তিনি ছোটপর্দার নিয়মিত অভিনেতা। কাজ করছেন ওয়েব সিরিজেও। কিন্তু নয়ের দশকে নায়ক-জীবনের সেই জনপ্রিয়তা আর ফিরে পাননি।
১৩১৫
একাধিক সাক্ষাৎকারে অবিনাশ স্বীকার করেছেন, কেরিয়ারে ব্যর্থতার জন্য দায়ী তিনি নিজে। পারিবারিক জীবের দ্বন্দ্ব নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন বলে ভাল করে কাজ করতে পারেননি, অভিমত অতীতের এই জনপ্রিয় নায়কের। তাঁর আক্ষেপ, অনেক সিনেমাই তিনি ছেড়ে দিয়েছেন, যেগুলোয় অভিনয় করে পরে সাফল্য পেয়েছেন সুনীল শেট্টি, অজয় দেবগণ এবং সইফ আলি খানের মতো নায়ক।
১৪১৫
‘ফুল অউর কাঁটে’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ তাঁর কাছেই প্রথমে এসেছিল, দাবি অবিনাশের। কিন্তু তিনি সময়ের অভাবে রাজি হননি প্রস্তাবে। পরে এই ছবি সুপারহিট নায়ক তৈরি করে আক্ষয় দেবগণকে।
১৫১৫
সুদর্শন চেহারা, ভাল ছবির সাহায্য পেয়েও হারিয়ে যেতে হল অবিনাশকে। তারকা হওয়ার খ্যাতি ভাল করে উপভোগ করার আগেই হারিয়ে গেলেন বিস্মৃতির অতলে।