কৌতুক ও ভাঁড়ামোর মধ্যে সূক্ষ্ম ফারাক বজায় রেখে কমেডি ছবি তৈরির কাজ বেশ ঝুঁকিবহুল। গোটাটাই নির্ভর করে পরিচালকের মুনশিয়ানার উপর। আর সেটা যদি হয় পরিচালকের প্রথম ছবিতেই, সেই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। অবশ্য কখনও কখনও চিত্রনাট্য যে এই সরু সুতো পেরোয়নি তা নয়, তবে অধিকাংশ সময়ই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পেরেছেন পরিচালক প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী।
এক কাজপাগল অফিস বস মি. ভট্টাচার্য (রঞ্জিত) ও তার কর্মচারী গীতিনের (সোহম) পরিবারকে কেন্দ্র করে এগোয় ছবির গল্প। গীতিন বিয়ের পর হনিমুনে যাওয়ার তোড়জোড় করলেও বসের দখলদারিতে সেই সুযোগ আর হয়ে ওঠে না। স্ত্রী জয়তীর (শুভশ্রী) ক্রমাগত চাপে পড়ে, অফিসে অসুস্থতার মিথ্যে গল্প ফেঁদে স্ত্রীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে গীতিন। কিন্তু উত্তরবঙ্গে হনিমুন উপভোগ করতে গিয়ে ঘটনাক্রমে ফের বসের খপ্পরে পড়ে যায় গীতিন! তার পরেই শুরু হয় নানা রকম কর্মকাণ্ড!
সমরেশ বসুর গল্প অবলম্বনে এই ছবির প্লট নির্মাণ করা হয়েছে। তবে গল্প যে কৌতুকের খোরাক জোগায়, সেটাই সিনেমার পরদায় তুলে ধরা বেশ কঠিন। এখানেই উতরে যায় ছবি। তবে অপর্ণা সেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, উৎপল দত্ত অভিনীত ‘ছুটির ফাঁদে’র সঙ্গে এই ছবির মিল অবশ্য অস্বীকার করা যায় না।
হনিমুন
পরিচালনা: প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী
অভিনয়: রঞ্জিত মল্লিক, সোহম,
শুভশ্রী, রুদ্রনীল, পার্থসারথি
৫.৫/১০
এই ছবির সম্পদ নিঃসন্দেহে রঞ্জিত মল্লিক। বর্ষীয়ান অভিনেতা দীর্ঘদিন পর অভিনয়ের মূলস্রোতে ফিরে অক্ষুণ্ণ রেখেছেন নিজের ফর্ম। তাঁর বলিষ্ঠ অভিনয় নজর কাড়ে। অন্য দিকে রুদ্রনীলকেও বেশ লাগে। সোহম-শুভশ্রীও যথাযথ। অভিনয়ের পাশাপাশি ছবি জুড়ে ঝকঝকে ক্যামেরাও বেশ আকর্ষক। স্যাভির মিউজিক ভাল।
তবে ছবিটিতে বেশ কয়েকটা অসঙ্গতিও চোখে পড়ে। প্রণবেশের কবল থেকে স্ত্রীকে উদ্ধার করতে কেন এত বেগ পেতে হবে গীতিনকে? অথবা রাতের আঁধারে চশমা না পরে গীতিনের বন্ধু চিত্তরঞ্জনের (রুদ্রনীল) মি. ভট্টাচার্যকে ধরে ফেলার দৃশ্যও বেশ সাধারণ। ছবির দ্বিতীয়ার্ধ আরও একটু টানটান করাই যেত অহেতুক দীর্ঘায়িত না করে। সে ক্ষেত্রে সম্পাদনায় আরও একটু নির্মম হওয়াই যেত। তবে সব মিলিয়ে ‘হনিমুন’ যথার্থ বিনোদন উপহার দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy