২০১৪ সাল থেকে শুরু হয়েছিল সফর। সঙ্গীতপ্রেমীদের সঙ্গে বাংলার মাটির সংস্কৃতি ও শিল্পের পরিচয় করাতেই সূচনা হয়েছিল ‘সহজ পরব’-এর। প্রতি বছরের মতো এই বছরও দু’দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে রয়েছে নানা চমক।
২০১৪ সালে লোপামুদ্রা মিত্র এবং কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য-সহ দোহারের নানা আলোচনা ও পরিকল্পনার ফলস্বরূপ শুরু হয়েছিল ‘সহজ পরব’-এর। এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য, উপমহাদেশের লোকশিল্পের বিভিন্ন ধারার প্রচার ও প্রসার ঘটানো। তা ছাড়াও, এই প্রজন্মের শ্রোতাদর্শকের মধ্যে লোকশিল্প সম্পর্কে আগ্রহ বৃদ্ধি করাও এই অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্দেশ্য। দেশের নানা প্রান্তের লোকশিল্পীদের এক ছাদের নীচে নিয়ে এসেছে ‘সহজ পরব’। সেখানে রয়েছেন খ্যাতনামী লোকশিল্পীরাও।
২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় জাদুঘর প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘সহজ পরব’। প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে বাংলার বর্ষীয়ান শিল্পী কানাই দাস বাউলকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। বিশেষ বিভাগ হিসেবে থাকছে উস্তাদ জ়াকির হুসেন স্মরণে ‘ইয়াদোঁ কা সফর’। এই বিভাগে থাকছেন জ়াকির হুসেনের ভাই ও তাঁর দীর্ঘ দিনের সহশিল্পী উস্তাদ ফজ়ল কুরেশি, উস্তাদ তৌফিক কুরেশি, পণ্ডিত যোগেশ শামসি, সাবির খান ও সূত্রধর পণ্ডিত তন্ময় বোস। আওয়াধি-ভোজপুরি লোকসঙ্গীত থাকছে বিদূষী মালিনী অবস্তির কণ্ঠে।
‘সহজ পরব’ অনুষ্ঠানের ঝলক। ছবি-সংগৃহীত।
দ্বিতীয় দিন থাকছেন অর্জুন খ্যাপা, স্বপন অধিকারী, নূর আলম, আমানত ফকির। পরে রয়েছেন গুজরাটের সিদি গোমা। পরিবেশনায় ‘সিদি ধামাল ডান্স গ্রুপ’। আফ্রিকান সুরের রেশ পাওয়া যাবে ওঁদের সঙ্গীতে। এর পর মধ্যপ্রদেশের মুনাওয়ার মাসুমের কণ্ঠে কাওয়ালি শোনা যাবে অনুষ্ঠানে। সবশেষে হরিনাম সংকীর্তন দিয়ে এ বছরের মতো সমাপ্তি হবে ‘সহজ পরব’-এর।
অনুষ্ঠান সম্পর্কে লোপামুদ্রা বলেন, “কালিকাপ্রসাদের স্বপ্ন আমরা সার্থক করার চেষ্টা করছি। ‘সহজ পরব’ নামটাই বলে দিচ্ছে, এই অনুষ্ঠানে সবটাই সহজাত। এখানে কোনও কর্পোরেট ব্যাপার নেই।” লোপামুদ্রার দাবি, এই অনুষ্ঠানে যোগদানকারী সকল শিল্পীই সমস্তটা করে থাকেন মনের আনন্দে। শিকড়ের সুর সন্ধান ও উদ্যাপনই এই উৎসবের লক্ষ্য। গায়িকা জানালেন, প্রথম দিনে সহজ যাত্রা থাকছে। তাঁর কথায়, “ভারতীয় সঙ্গীতে শিকড়ের সুর সুদূরপ্রসারী। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তা পৌঁছে দিতে আমরা এই উৎসব এত বড় ভাবে আয়োজন করে থাকি।”