Advertisement
১০ মে ২০২৪

বিতর্ক এড়াতে বেপথু ছবি

ছবি শুরু এনকাউন্টারের দৃশ্য দিয়ে। যেখানে দিল্লির একটি বিল্ডিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন ছাত্র পুলিশের গুলিতে মারা যায়। একজন ধরা পড়ে।

ঊর্মি নাথ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

দিল্লির জামিয়া নগরে পুলিশ ও ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন জঙ্গিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা অপারেশন বাটলা হাউস-এর স্মৃতি এগারো বছর পরে উস্কে দিলেন পরিচালক নিখিল আডবাণী।

ছবি শুরু এনকাউন্টারের দৃশ্য দিয়ে। যেখানে দিল্লির একটি বিল্ডিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন ছাত্র পুলিশের গুলিতে মারা যায়। একজন ধরা পড়ে। আর দু’জন পালিয়ে যায়। সংঘর্ষে মারা যায় এক পুলিশ অফিসারও। পরে যাকে ভারত সরকার পুরস্কৃতও করে। কিন্তু ছাত্ররা কি সত্যি জঙ্গি, না কি এ সবই পুলিশের সাজানো ঘটনা? শুরু হয় দ্বন্দ্ব। মৃত ছাত্রদের নিরপরাধ দাবী করে পুলিশকে কাঠগড়ায় দাঁড় করায় মানবাধিকার কর্মী থেকে প্রায় সব রাজনৈতিক দল। এনকাউন্টারের দৃশ্য, জঙ্গি ধরার পুলিশি ছক, পুলিশের বিপক্ষে আন্দোলন, মিডিয়া ও রাজনীতিকদের সঙ্গে পুলিশের তর্ক... সব কিছু নিয়ে টানটান ছবি হতে পারত ‘বাটলা হাউস’। কিন্তু ঘনঘন হাততালি, আবেগের অশ্রুজল সরিয়ে রেখে পপকর্ন খাওয়ায় মন দিয়েছিলেন অধিকাংশ দর্শক! সত্যি ঘটনার কাঠামো এক রেখে চিত্রনাট্যের খাতিরে কল্পনার আশ্রয় নিয়েছেন পরিচালক (তা স্বীকার করা হয়েছে ছবির প্রথমেও)। কিন্তু সত্যি আর কল্পনার মিশ্রণটা ঠিক জমাট বাঁধল না। গল্প বলার বুনট আলগা হয়েছে বারবার। পথ হারিয়েছে গল্পসূত্র। এ সবের পরে ছবির শেষ আধঘণ্টায় কোর্ট রুমে ডিসিপি সঞ্জীব কুমারের (জন আব্রাহাম) দৃশ্য যা একটু নম্বর পাবে মাত্র।

চিত্রনাট্য ও সংলাপের মতোই দুর্বল জনের অভিনয়। একজন দুঁদে ডিসিপির চরিত্রে তাঁর অভিব্যক্তিহীন আড়ষ্ট অভিনয় চোখে লাগে। সুখে-দুঃখে সব আবেগেই জন এক রকম। শুধুই পেশী প্রদর্শন। বরং ডিসিপির স্ত্রীর চরিত্রে তারিফযোগ্য ম্রুণাল এবং সহশিল্পীরা।

বাটলা হাউস পরিচালনা: নিখিল আডবাণী অভিনয়: জন, রবি, ম্রুণাল, রাজেশ ৪/১০

ভাল-খারাপের গণ্ডি পেরিয়ে ছবির বেশ কিছু দৃশ্য ভাবায়। যেমন একজন দক্ষ পুলিশ অফিসার একটা এনকাউন্টারে গিয়ে এত ভেঙে পড়ছে কেন? সেই দ্বন্দ্বময় মনের ছবি পরিষ্কার নয়। দু’জন সহকর্মীকে নিয়ে হঠাৎ একটি গ্রামে ডিসিপি গেল পলাতক জঙ্গি ধরতে। যেখানে গোটা গ্রামটাই ওই জঙ্গির সমর্থনে। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট থাকা সত্ত্বেও সিনিয়র পুলিশ অফিসার কেকে (রবি কিষণ) ও বাকিরা কেন বিনা জ্যাকেটে সংঘর্ষে গেল? পলাতক জঙ্গি ধরা পরার পরে পুলিশ তাকে জানিয়ে দিচ্ছে, কাকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করেছিল! এই দৃশ্যগুলি যদি সত্যি ঘটনার প্রতিফলন হয়, তা হলে চিন্তার। আর যদি কাল্পনিক হয়, তা হলে সেটা ভারতীয় পুলিশের বুদ্ধি ও দক্ষতাকে কি প্রশ্নের মুখে ফেলছে না?

একটি বিতর্কিত বিষয় নিয়ে ছবি করতে গিয়ে পরিচালক চেয়েছেন আপ্রাণ ভাবে বিতর্ক এড়িয়ে যেতে। পরিণতিতে বেপথু হয়েছে এই ছবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE