Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চালিয়ে খেলে ভুল করেছি

গার্লফ্রেন্ড থেকে কেরিয়ার — সবেতেই প্রচণ্ড তাড়া করছিলেন। আজ বুঝছেন ইন্দ্রাশিস। স্বীকার করলেন অরিজিৎ চক্রবর্তী-র কাছে।গার্লফ্রেন্ড থেকে কেরিয়ার — সবেতেই প্রচণ্ড তাড়া করছিলেন। আজ বুঝছেন ইন্দ্রাশিস। স্বীকার করলেন অরিজিৎ চক্রবর্তী-র কাছে।

ছবি: কৌশিক সরকার

ছবি: কৌশিক সরকার

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৬ ০০:২৫
Share: Save:

একই মাসে দু’-দু’টো সিনেমা রিলিজ... বৃহস্পতি তো তুঙ্গে...

হ্যাঁ, ‘কুহেলি’ রিলিজ করছে আজ। দু’সপ্তাহ পরেই ‘তিনাঙ্ক’। তবে ওটাই আগে করা ছিল। ‘কুহেলি’ শেষ হয়েছে মাসখানেক হল। ঘটনাচক্রে দু’টোই একই মাসে রিলিজ হচ্ছে।

লোকে বলে, মহিলা আর ক্রিকেটে বড্ড বেশি সময় দেওয়ায় সিনেমার জন্য আপনার হাতে আর সময় থাকে না।

ঠিক বলে। তবে এখন আর বলতে পারবে না। ‘লড়াই’ বক্স অফিসে না-চলায় এত ভেঙে পড়েছিলাম যে, এক বছর কিচ্ছু করিনি। চুপচাপ বাড়িতে বসে ছিলাম। সেই এক বছরে নিজেকে অ্যানালাইজ করেছি। আর বুঝেছি, আমি কাজের বদলে অ-কাজে বেশি সময় দিতাম। ইন্ডিয়ার ম্যাচ থাকলে শ্যুট বাতিল করা কোনও প্রোফেশনাল লোকের থেকে আশা করা যায় না। দেখুন, বাইশ বছর বয়স থেকে ইন্ডাস্ট্রিতে আছি। এ মাসের ১৫ তারিখ আমার বয়স হবে তিরিশ। বুঝেছি, সিনেমাটা ডিগ্রি দিয়ে হয় না। মহিলাদের সঙ্গে পাব বা নাইট ক্লাবে গিয়েও না। কাজ দিয়ে, প্রমাণ করে কাজ পেতে হয়।

সেটা কি আপনার কারেন্ট গার্লফ্রেন্ড শেখালেন? দুষ্টু লোকেরা বলে তিনি সাংবাদিক...

আপনি যার কথা বলেছেন সে আমার গার্লফ্রেন্ড নয়। ভাল বন্ধু। ওকে ছোটবেলা থেকে চিনি। আর ওটা আমি নিজেই বুঝেছি। কেউ শেখায়নি।

আপনাকে অনেক দিন পর বেশ পজিটিভ দেখছি।

আমি সত্যিই এখন এ ভাবে ভাবছি। গত এক বছর যে আমার কী করে কেটেছে বোঝাতে পারব না। ছবি ফ্লপ হলে কতটা খারাপ লাগে সেটা টের পেয়েছি। এখন আর কিছু এক্সপেক্ট করি না। তাই ছবিটা লোকে দেখতে না গেলে খুব দুঃখ পাব। ভেঙেও পড়তে পারি। তবে কথা দিচ্ছি ‘লড়াই’য়ের পর যেমন এক বছর কিচ্ছু করিনি। ব্রেক নিয়েছিলাম। সেটা আর করব না।

সে সময়ে বাবা-মা কী বলছিলেন?

আমার ইন্ডাস্ট্রিতে আসাটাই ওদের কাছে ‘শকিং’ ছিল। ওদেরও তো কিছু করার ছিল না। আমার টাকার দরকার হলে বাবার কাছ থেকে নিতেই পারি, কিন্তু ওরা তো আমাকে ছবি এনে দিতে পারবে না। আমাকে সাপোর্ট করে গেছে বরাবর। সব সময় বলত, বাইরে তো বেরো। সিনেমা না-করলেও যেটা ভাল লাগে সেটা কর। অ্যাট লিস্ট বাড়িতে বসে থাকিস না। আর এই যে আমার সম্পর্ক নিয়ে কথা — কাগজে সেগুলো পড়েও নিশ্চয়ই খারাপ লাগত ওদের।

আপনি পার্টি করছেন। মহিলাদের সঙ্গে নাইটক্লাবে নাচছেন। কাগজে সে ছবি তো ছাপবেই...

না, না, আমি তো মিডিয়াকে দোষ দিচ্ছি না। আমি জানি, অভিনেতাদের পার্সোনাল লাইফ বলে কিছু হয় না। আর যত গসিপ পড়েছি, সব তো আর মিথ্যে বলে কাটিয়ে দিতে পারি না। আমারই ভুল ছিল। পার্সোনাল লাইফ আসলে প্রোফেশনাল লাইফটাকে ঘেঁটে দিচ্ছিল। আমি কোথাও অফ দ্য ট্র্যাক হয়ে যাচ্ছিলাম। আমি তো পড়াশোনা ছেড়ে অভিনয়টা করতে এসেছিলাম। সেটায় সমস্যা হচ্ছিল।

সে জন্যই কি পায়েল সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে গেল?

না, না, আমি কারও দিকে ইঙ্গিত করিনি। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য কতগুলো বেসিক মিল দরকার হয়, সেটা আমাদের ছিল না। যা হয়েছে, হয়েছে। নেড়া তো বেলতলায় একবারই যায়। আমাদের মধ্যে কথা হয় না ঠিকই, কিন্তু কোনও রাগ পুষে রাখিনি। এখনও পার্টিতে দেখা হলে নিশ্চয়ই ‘হাই’ বলব।

আর দেখুন, আমার সব ভাল-সব খারাপের জন্য তো শুধু আমিই দায়ী। কেন খামোখা অন্যকে দোষ দিতে যাব! অল্প বয়সে বিরাটের মতো চালিয়ে খেলতে গেছি। অফ স্টাম্পের বাইরের বল ব্যাটের কানায় লাগিয়ে ক্যাচ দিয়েছি। গাওস্কর বলেছিলেন না, রেসপেক্ট গুড ডেলিভারিজ। সেটা ভুলে গেছিলাম। এখন বুঝেছি, সব সময় চালিয়ে খেলতে নেই। ধরে খেলতে হয় সময় নিয়ে।

সে না-হয় খেললেন। কিন্তু আপনার দুই কাছের বন্ধুর বিয়ে তো সামনে। আপনার উইকেটটা কবে দিচ্ছেন?

হা হা হা। আমি ঠিক করেছি বিয়েই করব না। দু’-একটা সম্পর্ক তো ছিল। শুনেছি, আমি নাকি সময় দিই না। সত্যি কথা। কিন্তু আমি তো নিজেকে পাল্টাতে পারব না। তা হলে তো আমার আমিত্বটাই নষ্ট হয়ে যাবে। আমি সিঙ্গলই ভাল আছি।

‘কুহেলি’র ট্রেলর তো লোকের বেশ ভাল লেগেছে। পূজারিনির সঙ্গে চুমুর দৃশ্য ঘুরছে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে...

হ্যাঁ, আমিও খুব ভাল ফিডব্যাক পাচ্ছি। আসলে পুরো ক্রেডিটটাই প্রোডিউসর অভিষেক ঘোষের। খুব খেটেছি আমি। কারণ, এটা আমার কামব্যাক। সত্যি বলছি, এতটা এফর্ট আমি আগে কখনও দিইনি। সিনেমাটা দেখে মানুষ নড়েচড়ে বসবে। এই থিমের বাংলা ছবি খুব কম হয়েছে।

আপনাকে দেখতে ভাল, ‘সিঙ্গল’ হওয়ায় পিছুটানহীন — তা ইন্দ্রাশিস রায় মুম্বই যাওয়ার কথা ভাবেন না...

ভাবছি। রাত্তিরে ‘মসান’ বা ‘দম লাগাকে হইসা’ দেখে মনে হয় বইকী। বরুণ ধবন বা সিদ্ধার্থ মলহোত্ররমতো হিরো হওয়ার দরকার নেই। কমপক্ষে একটা মিনিংফুল ক্যারেকটার তো করতেই পারি। তবে বাবা-মাকে ছেড়ে থাকার মেন্টাল প্রস্তুতিটা এখনও নিতে পারিনি। এই তো সে দিন মুম্বইয়ের এক কাস্টিং ডিরেক্টর বলছিলেন, ‘‘তোমার পোর্টফোলিওতে কিন্তু চারটে অ্যামেচারিশ ছবি শুধু নেই। ২৩ বছর বয়সে ঋতুপর্ণ ঘোষের সঙ্গে কাজ করেছ। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করেছ...’’

তা শো রিল পাঠালেন সেই কাস্টিং ডিরেক্টরকে?

নাহ, এত ল্যাদ খাই কী বলব! শুরু করেছিলাম বানানো... শেষ করা হয়ে ওঠেনি। দেখি ভাইকে (চন্দ্রাশিস রায়) এ বার চেপে ধরতে হবে, ওটা বানিয়ে দেওয়ার জন্য।

দাদার ডাবিং

বৃহস্পতিবারের মেঘলা দুপুরে তিনি হাজির নজরুল মঞ্চের কাছে। কী করছিলেন দাদা? জানা গেল এক বিজ্ঞাপনী শ্যুটের ডাবিংয়ের জন্য এসেছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সঙ্গে পরিচালক মিতালি ঘোষাল। ছবি: কৌশিক সরকার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indrasish Roy Interview
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE