যিশু, জ়ারা এবং সারা। ছবি: দেবর্ষি সরকার
সে দিন যিশু সেনগুপ্তর লেক গার্ডেন্সের বাড়িতে পৌঁছনোর পরেই আকাশ ভেঙে নামল বৃষ্টি। তখন সকাল দশটা। ছুটি ছুটি মেজাজ। এ হেন দিনেও যিশু এবং বাড়ির নতুন সেলেব্রিটি সদস্য সারা সেনগুপ্ত ব্যস্ত থাকবেন ‘উমা’র প্রচারে। সাক্ষাৎকারের সঙ্গে ফোটোশুটও হবে, তাই বারো বছরের নায়িকার মুখে-চোখে-ঠোঁটে লেগে আছে ব্লাশার, লিপস্টিকের ছোঁয়া। কিন্তু মেকআপের কি সাধ্য তাঁর ওই নিষ্পাপ চোখের সারল্য কেড়ে নেয়? বাবা আর দিদির সঙ্গে এসে যোগ দিল ছোট্ট মিষ্টি জ়ারাও। সে-ও আছে ছবিতে। সব মিলিয়ে সাক্ষাৎকার কম, খুনসুটি হল বেশি!
প্র: বাবার সঙ্গে শুটিং করার সবচেয়ে মজার কী?
সারা: প্রথম ছবি, তাই পুরো ব্যাপারটা খুব এক্সাইটিং ছিল। ছবিতেও বাবা আমার বাবার ভূমিকায়। এটা সত্যিই খুব মজার এক্সপিরিয়েন্স।
জ়ারা: (বাবার কোলে বসে বলতে থাকে) আমারও খুব মজা লেগেছে।
প্র: সারা যখন শট দিত, তখন যিশু কী করতেন?
যিশু: সৃজিত বলেই দিয়েছিল, অভিনয় নিয়ে কোনও কথা বলতে পারব না। দু’-একবার বলতে গিয়ে খুব বকুনি খেয়েছি। তাই এটা বলতে পারি, যা করেছে নিজে করেছে।
প্র: মেয়ে অভিনয় করছে, টেনশন হতো না?
যিশু: প্রচণ্ড! আমার কুড়ি বছরের কেরিয়ারে ছবি মুক্তি পাওয়ার আগে কোনও দিন টেনশন হয়নি। কিন্তু এখন হচ্ছে... মেয়ের রেজ়াল্ট বেরোনোর আগে।
প্র: বন্ধুদের কাছে সারা কি তারকা?
সারা: (আদুরে গলায়) বন্ধুরা আমাকে নিয়ে খুব এক্সাইটেড। ইউটিউবে উমার টিজ়ার, ট্রেলার প্রথমে ওরা দেখেছিল, তার পর আমি দেখি। তার পর পাপা।
যিশু: আসলে আমরা তিনজনে বন্ধু। সমবয়সি প্রায়। মা হচ্ছে ‘মা’।
প্র: সারা, জ়ারা বাইরে খেতে খুব ভালবাসে। শুটিংয়ে গিয়ে কী হতো?
যিশু: শুটিং চলাকালীন সুযোগ পায়নি। শেষ হওয়ার পর প্যারিস গিয়েছিলাম। ওখানে খুব মজা হয়েছে। সেখান থেকে ফিরে তো ম্যাডামের ডেঙ্গি হয়ে গেল।
সারা: জানো, আউটডোরে একটা মজার ঘটনা ঘটেছিল। একটা দৃশ্যে ঝোপের মধ্য দিয়ে দৌড়ে আসছিলাম। তাতে খুব কাঁটা। সেকেন্ড শটে আমি ছুটে আসছি। হঠাৎ বাবা দেখল, আমি নেই!
যিশু: সুইৎজ়ারল্যান্ডের যেখানে শুটিং হয়েছিল, সেখানটা ধানখেতের মতো। কিন্তু প্রচণ্ড ঘন এবং চোরাকাঁটা অনেক। দ্বিতীয় শটের আগে বৃষ্টি হওয়ায় দৌড়নোর সময় তাল সামলাতে না পেরে সারা পড়ে যায়। ও খুব অ্যাথলেটিক। কিন্তু এক সেকেন্ড পরেও ওঠেনি দেখে আমি ছুটলাম। সারাকে পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়ে এলাম। পুরো গা ছড়ে গিয়েছে। প্রচণ্ড কান্না। আর এই ব্যাটা হাসছে (জ়ারার দিকে মজা করে চোখ পাকিয়ে)!
সারা: তার আগে আমি হাসছিলাম।
যিশু: তখন জ়ারা পড়ে গিয়েছিল বলে এ হেসেছে।
জ়ারা: আমিও পড়ে গিয়েছিলাম।
প্র: দু’বোন একসঙ্গে শুটিংয়ে। ঝগড়া হয়নি?
যিশু: আসলে সারা চান্সই পায়নি। রাতে যখন ফিরতাম, তখন বেচারা ক্লান্ত। ঝগড়াটা হয়েছে প্যারিসে বেড়ানোর সময়ে। ডিজ়নিল্যান্ডে কে কোন রাইডটা চড়বে, তা নিয়ে।
সারা: আমি পাপাকে জোর করে রোলার কোস্টারে সামনের সিটে বসিয়েছিলাম।
যিশু: দশ তলার উপর থেকে ধপ করে ফেলে দিচ্ছে! বাপ রে! চোখ বন্ধ করে থাকতাম। ওখানে ওরা অনেক প্রিন্সেসের শো দেখেছে।
যিশুর কথার মাঝে জ়ারা: আমি প্রিন্সেস দেখেছি।
প্র: জ়ারার প্রিয় রাজকন্যা কে?
উ: স্লিপিং বিউটির অরোরা। বাট নাও আই লাইক সিন্ডারেলা। (পাশ থেকে যিশু বললেন, সিন্ডারেলা কবে থেকে প্রিয় হল!) আমার গ্লাস স্লিপার্স নেই কিন্তু গাউন আছে।
আমাদের কথার মাঝেই চলে এলেন নীলাঞ্জনা। ‘‘আজ আমরা একটা কনসার্টে যাব। জ়ারা কি যাবে?’’ যিশু বললেন, ‘‘না জ়ারু তো যাবে না। ওর ভাল লাগে না।’’ একটু আগেই জ়ারা ঠিক করতে পারছিল না যাবে কি না, কিন্তু বাবার কথা শুনে সে সঙ্গে সঙ্গে যাওয়ার জন্য রেডি। নীলাঞ্জনা ফিসফিস করে বললেন, ‘‘ওকে যেটা ‘না’ বলা হবে, সেটাতেই ও রাজি।’’ এ দিকে ততক্ষণে ফোন নিয়ে চলছে দুই বোনের দুষ্টুমি.... আমিও বেরোনোর পথ ধরলাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy