Advertisement
E-Paper

আমাকে ঘাঁটাতে এসো না

তাঁর সম্পর্কে ইন্ডাস্ট্রি কী ভাবছে, তা নিয়ে আদৌ চিন্তিত নন তিনি। বলিউডে সুজিত সরকার-এর ‘পিকু’র সঙ্গীত পরিচালনা দিয়ে শুরু করলেন নতুন ইনিংস। অনুপম রায়-এর মুখোমুখি ইন্দ্রনীল রায়তাঁর সম্পর্কে ইন্ডাস্ট্রি কী ভাবছে, তা নিয়ে আদৌ চিন্তিত নন তিনি। বলিউডে সুজিত সরকার-এর ‘পিকু’র সঙ্গীত পরিচালনা দিয়ে শুরু করলেন নতুন ইনিংস। অনুপম রায়-এর মুখোমুখি ইন্দ্রনীল রায়

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৫ ০০:০১

তা হলে এসএমএস এলো সেই ফোন নম্বর থেকে?

কোন এসএমএস? কার ফোন থেকে?

যে ফোন থেকে এসএমএস এলে স্টার থেকে নামী ডিরেক্টর, প্রোডিউসর থেকে সাংবাদিক সবাই মনে মনে অসম্ভব খুশি হয়। অমিতাভ বচ্চনের ফোন থেকে?

না, এখনও ওঁর ফোন থেকে কোনও এসএমএস পাইনি। কিন্তু খবর পেয়েছি যে ওঁর বোধহয় ‘পিকু’ র গানগুলো ভাল লেগেছে।

তাই? কে খবর দিল?

কী হয়েছিল, সে দিন অমিতাভজি ডাবিং করতে স্টুডিয়োয় এসেছিলেন। আমি এর মধ্যে কয়েকটা ব্যাকগ্রাউন্ড থিম পাঠিয়েছিলাম। ‘পিকু’ ছবিতে অনেকগুলো থিম আছে, সেগুলো কী এখনই বলতে পারছি না। কিন্তু সেদিন অমিতাভজির আমার বানানো একটা থিম ভালো লেগে গিয়েছিল। উনি সেটা বলতেই আমাকে সুজিতদা (পরিচালক সুজিত সরকার), সাউন্ডের বিশ্বদীপদা রেকর্ডিং স্টুডিয়ো থেকেই ফোন করে কনগ্র্যাচুলেট করল।

দীপিকা কিছু বললেন?

দীপিকা ফোন বা এসএমএস করেননি, কিন্তু ট্যুইট করেছিল যে ‘জার্নি সং’টা শ্যুটিংয়ের সময় থেকেই গাড়িতে বেজে চলেছে।

‘পিকু’র মিউজিক ডিরেক্টর হওয়াটা নিশ্চয়ই আপনার এত দিনের সঙ্গীতজীবনের সব চেয়ে হাই পয়েন্ট।

সেই রকম করে বলা মুশকিল। কিন্তু অন্যতম সেরা মুহূর্ত তো বটেই। যেদিন বাঙালি শ্রোতাদের ‘আমাকে আমার মতো থাকতে দাও’ গানটা ভাল লেগেছিল সেদিনটাও আমার কাছে একই রকম গুরুত্বপূর্ণ।

আর দেখুন আমি একটা স্কুল অব মিউজিকে বিশ্বাস করি। একটা ঘরানা আছে...

এই যে বললেন অনুপম রায়ের ঘরানা, এটা শুনে অনেকেই কি নাক কুঁচকোবে?

সেটা তাঁদের ব্যাপার। তাঁদের নাকের ব্যাপার।

আচ্ছা...

আমার ভাল লাগছে এটা ভেবে যে ধরনের মিউজিক আমি ভালবাসি এবং বিশ্বাস করি সেই সঙ্গীতের ধারাটাই কিন্তু আমি হিন্দি ছবিতেও বজায় রাখলাম।

আর আমার আগের কাজগুলো দেখেই তো সুজিতদা আমায় অ্যাপ্রোচ করেছিল। ‘হেমলক’ শুনে, ‘২২শে শ্রাবণ’ শুনেই তো উনি এই ছবির অফার দিয়েছিলেন। সুতরাং আমার ধারাটা কী জানা ছিল সুজিতদার। এইটুকু বলতে পারি সুজিতদা আমার কাছে ফাদার ফিগারের মতো।

‘পিকু’র পর নিশ্চয়ই আরও বেশ কিছু ছবির অফার আসছে?

না, সেই রকম কোনও অফার এখন পর্যন্ত নেই। সুজয়দার (ঘোষ) সঙ্গে তো অনেক দিন ধরেই কথা চলছে। কবে সেটা মেটিরিয়ালাইজ করে দেখি…

আপনাকে কিছু অস্বস্তিকর প্রশ্ন করতে চাই…

(হেসে) বলুন…

সৃজিত আনন্দplus-য়ের একটা ইন্টারভিউতে বলেছিলেন ওঁর ছবির মিউজিকের ক্ষেত্রে উনিই শেষ কথা। ঘরোয়া আড্ডায় এটাও বলেছিলেন ওঁর ছবিতে প্রায় নাইনটি পারসেন্ট মিউজিকটা উনি নিজেই দেখেন। টেন পারসেন্ট অনুপম…

এটা বলেছিল?

হ্যাঁ, বলেছিলেন তো বটেই।

এইটুকুই বলব পরিসংখ্যানটা একেবারেই মিথ্যে। কারণ ওর ছবিতে যে সব গান রয়েছে সেগুলো লেখা আর সুর তো আমার নিজেরই।

কিন্তু এটা খুব আশ্চর্য না, সৃজিতের ছবি হলেই আপনার গান সুপারহিট হয়, না হলে নয়।

তা হলে বলি, হরনাথ চক্রবর্তীর ছবি ‘চলো পাল্টাই’য়ে ‘বাড়িয়ে দাও তোমার হাত’ কিন্তু খুব জনপ্রিয়। বড় হিট। যেখানেই অনুষ্ঠান করি, সেখানেই এই গানটার অনুরোধ আসে...

হ্যাঁ হিট হতে পারে। কিন্তু ‘বসন্ত এসে গেছে’ তো নয়।

না, ‘বসন্ত এসে গেছে’ নয় তো বটেই। ‘আমাকে আমার মতো থাকতে দাও’ নয় তো বটেই। আসলে সৃজিত ছাড়া কোনও পরিচালকই আমায় সেই রকম ভাবে সুযোগ দেয়নি। আর একটা কথা বলি।

সৃজিত গানটা যোগ্য সম্মান দিয়ে শ্যুট করে। সেটা গানের পপুলারিটিকে বাড়িয়ে দেয়। আর একটা উদাহরণ দিই। ‘ওপেনটি বায়োস্কোপ’য়ে ‘বন্ধু চল’ গানটা গাইবার সময় আমি বুঝিনি অনিন্দ্যদা এতটা যত্ন করে গানটা শ্যুট করবে। সৃজিত, অনিন্দ্যদা যে ভাবে আমার গানকে মর্যাদা দেয় সেটা দুর্দান্ত…

এটাও শুনেছি সৃজিতের সঙ্গে তো আপনার প্রচুর ঝগড়া হয়?

অবশ্যই হয়। সৃজিত কনট্রোল ফ্রিক। ও চায় সবটা কনট্রোল করতে। ‘অটোগ্রাফ’-এ আমি শুধু গানটা বেঁধে সৃজিতকে দিয়েছিলাম। কোথায় ভায়োলিন বাজছে, কোথায় পিয়ানো সেটা দেবুদা (দেবজ্যোতি মিশ্র) ঠিক করেছিল। ‘২২শে শ্রাবণ’ থেকে ব্যাপারটা বদলে যায়। ‘চতুষ্কোণ’য়ে তো সৃজিত একেবারেই ইন্টারফেয়ার করেনি। হয়তো একটা কনফিডেন্স ডেভেলপ করে গিয়েছে আমার কাজের প্রতি।


আচ্ছা, এত দিন বাংলায় গান বানাতে বানাতে একেবারে জাতীয় পর্যায়ে বিগ বাজেট বলিউড ছবিতে চলে গেলেন। এই চেঞ্জটার জন্য মানসিক ভাবে কি কোনও প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?

না, সে রকম কোনও মাইন্ডসেট-এর বদল আমি করিনি। আমি যে ধরনের গান বানাই, সেই রকম গান বানানোর চেষ্টাই করছি। শুধু বাংলা গানের সময় যে প্রোডাকশন ভ্যালুটা থাকে, সেটা নেক্সট লেভেল-এ নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি।

আচ্ছা এই সাক্ষাৎকারে একটা ব্যাপার ক্লিয়ার করবেন প্লিজ?

কী বলুন?

শোনা যায় দেবজ্যোতি মিশ্র ‘আমাকে আমার মতো থাকতে দাও’ গানটা নাকি হাইজ্যাক করে নিয়েছিলেন প্রায়?

আমিও শুনেছি কথাটা। কিন্তু আমার সামনে দেবুদা সব সময়ই বলেছে, এটা অনুপমের গান। কিন্তু আপনার কথাটা আমার কানেও এসেছে। অনেকেই বলেছে…

বিশ্বাস করেন সে কথা?

দেখুন, দেবুদার সঙ্গে আমার দারুণ সম্পর্ক। দেবুদার সঙ্গে রাতে কথা হয়, আমাকে নানা পরামর্শ দেন। কোনও কাগজে সাক্ষাৎকারে আমার প্রসঙ্গ এলে খুব প্রশংসা করেন…

আপনার এই অতি ডিপ্লোম্যাটিক নেচার নিয়ে আমার পরের প্রশ্ন…

কী সেটা?

এই যে একটা অমায়িক ভাবমূর্তি আপনি নিজের বানিয়েছেন, খুব কম লোকই জানে আপনি কতটা মিডিয়া হাংগ্রি, কতটা কম্পিটিটিভ…

হ্যাঁ আমি কম্পিটিটিভ। কিন্তু সেটা দেখানোর কী আছে বুঝছি না। আর কে আমাকে নিয়ে কী ভাবল সেটা তাদের পারস্পেকটিভের ব্যাপার। আমি সেটা বদলাতেও চাই না। আর মিডিয়ার ব্যাপারে সত্যি বলছি আমার কিছু যায় আসে না। সত্যিই কিছু যায় আসে না…

যদি কিছু এসে না যায় তা হলে আনন্দplus-য়ের একটা ইন্টারভিউ দু সপ্তাহ ছাপানো হয়নি দেখে তিন-চার বার ফোন করতেন কেন আপনি?

হ্যাঁ, সেটার কারণ সেই সাক্ষাৎকারে আমার ‘বাক্যবাগীশ’ অ্যালবামটার ব্যাপারে আমি কিছু কথা বলেছিলাম। ওটা আপনারা বের না করার আগে আমি বাকিদের কাউকে কিছু বলতে পারছিলাম না। তাই জন্যই ফোন করেছিলাম।

আর একটা ইন্টারভিউ ছিল যেটায় আপনি বলেছিলেন ‘রবীন্দ্রনাথ আমাকে টানে না’…

ও বাবা, আমায় সেটাতে মিসকোট করা হয়েছিল..

মোটেও না। রেকর্ডিংটা শুনেছিলাম। আপনি স্পষ্ট বলেছিলেন ‘রবীন্দ্রনাথ আমাকে টানে না’। কাগজে বেরিয়ে যাওয়ার পর বোধহয় ভয় পেয়ে ফোন করেছিলেন এটা ভেবে, বাঙালি শ্রোতারা রেগে গিয়ে যদি আপনার অ্যালবাম না কেনে…

না, একেবারেই তা নয়। আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল আমার ফেভারিট মিউজিক ডিরেক্টর কে। আমি বলেছিলাম সলিল চৌধুরী। তা আমি যদি বাড়িতে সারাদিন সলিল চৌধুরী শুনি কার তাতে কী এসে যায়?

সত্যি কারওর কিছু এসে যায় না…

হ্যাঁ এগ্জ্যাক্টলি। কিন্তু তার পরই জিজ্ঞেস করা হল রবীন্দ্রনাথের গান কেমন লাগে। এটা তো ইচ্ছে করে পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করা। রবীন্দ্রনাথের গান ভালবাসব না, এটা কি হতে পারে নাকি! কিন্তু সেটা ধরে হেডলাইন করাটা ঠিক ছিল না…

আপনি কাকে দিয়ে গান গাওয়াবেন সেটা যেমন আপনার ব্যাপার, হেডিং কী হবে সেটা পেশাদার সাংবাদিকই ঠিক করবে। আপনি নন। তাই না?

হানড্রেড পারসেন্ট তাই।

আচ্ছা, ‘পিকু’র গান শোনার পর একটা কথা অনেকেই বলছে, অনুপম এত ভাল হিন্দি কী ভাবে লিখল...

না না, আমি একেবারেই ভাল হিন্দি লিখতে পারি না। যখন সুজিতদাকে গান পাঠিয়েছিলাম, শুধু ‘লা লা’ করে তো আর পাঠানো যায় না। তাই আমি কিছু শব্দ দিয়েই সেই গানগুলো পাঠিয়েছিলাম। সেই শব্দগুলো সুজিতদার পছন্দ হয়েছিল। তবে সুজিতদা আমাকে বলেছিল খুব খটোমটো হিন্দি না লিখতে। আর গান মুম্বইতে পাঠানোর আগে আমি কিন্তু আমার বন্ধু রীতেশ শাহ্-কে দিয়ে হিন্দি গ্রামারটা ঠিক করে নিতাম।

মানে কাল কোনও হিন্দি ছবির অফার এল যেখানে বলা হল অন্য কেউ লিরিকস লিখবে, রাজি হবেন?

অবশ্যই রাজি হব। বললাম না, আমার হিন্দি ভাল না। আমি হিন্দি সাহিত্য পড়িনি। যেটুকু হিন্দি শিখেছি, সেটা হিন্দি গান বা হিন্দি ছবি বা বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে। এই পাতি হিন্দি নিয়ে বেশি দূর এগোনো সম্ভব নয়।

কলকাতায় কিছু সঙ্গীত পরিচালক আছেন যেমন ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত, যিনি আপনাকে গায়কই মানেন না, এই রকম তিনি কাগজেও বলেছিলেন…

হ্যাঁ পড়েছিলাম সেটা। কেন ভুতোদা (ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তর ডাকনাম) এই রকম বলল কে জানে? আমি ওর সুরেও গান করেছি…

আপনার ঘনিষ্ঠ কিছু মানুষকে আড্ডায় বলতে শুনেছি আপনি নাকি বড্ড পরশ্রীকাতর।

কারা এই ঘনিষ্ঠ মানুষজন? আর যদি তাঁরা ঘনিষ্ঠই হন, তবে কেন তাঁরা আমার বদনাম করছেন? এটাও বুঝি না, এ সব আড্ডাতে এত কথা আমাকে নিয়ে কেন হয়। একেবারেই পরশ্রীকাতর নই আমি। বাজে কথা।

কখনও মনে হয়, তোরা আমাকে পরশ্রীকাতর বললি, আমি গান গাইতে পারি না বললি, কিন্তু অমিতাভ-দীপিকার ‘পিকু’র মিউজিক ডিরেক্টর কিন্তু আমিই হলাম…

আমি ও ভাবে দেখি না। ওই ভাবে বলা বোধ হয় ছেলেমানুষি করা হবে। এইটুকু জানি আমি আরও ভাল কাজ করে যেতে চাই। আমি চাকরি করতাম, সেটা ছেড়ে গান বাঁধতে এসেছি। এত দিন সাধ ছিল বাঙালিদের গান শোনাব। এবার ‘পিকু’ আমাকে আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে। সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চাই…

একটা নতুন কমিকসের বইও তো বেরিয়েছে আপনার?

হ্যাঁ, ছোটবেলা থেকে কমিকস আমার ভীষণ প্রিয়। আমার বাবা ছবি আঁকতেন, সেই থেকেই ইন্টারেস্ট। ছোটবেলায় গোগ্রাসে টিনটিন, অ্যাস্টেরিক্স পড়েছি। এ বার এই কমিকস স্ট্রিপ, ‘অ্যান্টনি ও চন্দ্রবিন্দু’র পুরো গল্পটা আমার লেখা। ছবিগুলো অবশ্য আমার বন্ধু সম্বুদ্ধ বিশী এঁকেছে।

শুনলাম বিয়ে করছেন?

হ্যাঁ, ইচ্ছে আছে। দেখি কবে হয়...

এটা তো আপনার সেকেন্ড ম্যারেজ হবে?

হ্যাঁ।

আপনি কি এমনিতে খুব প্রাইভেট একজন মানুষ?

মিলিয়ে মিশিয়ে। যখন প্রাইভেট হওয়ার তখন প্রাইভেট। যখন পাবলিক হওয়ার, তখন পাবলিক। আমার কাছে শিল্পীর শিল্পসত্তাটাই আসল...

সেটা আপনার কাছে হতে পারে, কিন্তু কিশোরকুমারের গায়কি যতটা ইন্টারেস্টিং, ততটাই মুখরোচক তাঁর চারটে বিয়ে। এই মাশুল তো পাবলিক ফিগারকে দিতেই হবে।

আমি আপনার সঙ্গে সহমত। যাঁরা আমার প্রাইভেট লাইফ জানতে ইচ্ছুক, তাঁরা জানতেই পারেন। তবে আমি তাঁদের কোনও রকম সাহায্য করতে পারব না। আমার কাজ গান গাওয়া। নিজের অ্যালবাম বানানো। ভাল অনুষ্ঠান করা...

স্টেজে রূপম ইসলামকে কম্পিটিশন দিতে পারবেন অনুপম রায়?

পৃথিবীতে তো কত রকমের পারফর্মার আছেন, কেউ ধীরে ধীরে গান করে, কেউ বসে গান গায়, কেউ দাঁড়িয়ে। অন্য কেউ কী ভাবে গান গাইছে, সেটা নিয়ে আমি সত্যি ভাবি না। ওই যে বললাম, আমাকে ঘাঁটাতে এসো না, আমি কাউকে ঘাঁটাব না...

Shoojit Sircar Anupam Roy music director tollywood bollywood Indranil Roy piku Amitabh Bachchan Deepika Padukone Irrfan Khan abpnewsletters
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy