গগনেন্দ্র শিল্প প্রদর্শশালা ও নজরুল তীর্থে এই প্রদর্শনীটি চলছে।
এ বারের কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বাংলা সিনেমার ১০০ বছর উদযাপন। উৎসবে ‘হানড্রেড ইয়ার্স অব বেঙ্গলি সিনেমা’ বিভাগে ১০০ বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে তৈরি হওয়া ১৩টি ছবি দেখানো হচ্ছে। যার মধ্যে প্রমথেশ বড়ুয়ার ১৯৩৭ সালে তৈরি ছবি ‘মুক্তি’, মধু বোসের ১৯৩৭ সালে তৈরি ‘আলিবাবা’, ১৯৬০ সালে রাজেন তরফদারের তৈরি ছবি ‘গঙ্গা’থেকে শুরু করে গৌতম ঘোষের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ (১৯৯৩) ও ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘উনিশে এপ্রিল’ (১৯৯৪) ইত্যাদি ছবি দেখানো হচ্ছে। এর সঙ্গে চলছে ‘চালচিত্র’ নামের একটি প্রদর্শনী যেখানে এই ১০০ বছর ধরে চলে আসা বাংলা সিনেমার মোটামুটি সম্পূর্ণ একটা ইতিহাসকে দর্শকের সামনে তুলে ধরা হয়েছে।
গগনেন্দ্র শিল্প প্রদর্শশালা ও নজরুল তীর্থে এই প্রদর্শনীটি চলছে। প্রদর্শনীতে আছে বিভিন্ন পরিচালক, অভিনেতাদের উপর বিভিন্ন তথ্য। আছে বিভিন্ন ছবির পোস্টার, বুকলেট, ডাকটিকিট, বিজ্ঞাপন, পেপার কাটিং ইত্যাদি জিনিসের ফটোগ্রাফ। এর সঙ্গে অল্প কিছু আসল বুকলেট, রেকর্ড প্লেয়ারও এখানে স্থান পেয়েছে। বাংলা সিনেমার শুরু হয়েছিল ১৯১৯ সালে রুস্তমজি ধোতিওয়ালা পরিচালিত ম্যাডন থিয়েটার পরিবেশিত ছবি ‘বিল্লমঙ্গল’-এর হাত ধরে। সেখান থেকে শুরু করে তার পর একে একে অমর চৌধুরী, ডিজি, প্রমথেশ বড়ুয়া, নিতিন বোস, বিমল রায়, ঋত্বিক কুমার ঘটক, সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন প্রভৃতি পরিচালকের হাত ধরে বাংলা ছবির যে বিবর্তন তা প্রায় পুরোটাই এই প্রদর্শনীতে উঠে এসেছে।
বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে বাংলা ছবির পথিকৃৎ হীরালাল সেন, বাংলা বাস্তববাদী ছবির দিশারী সত্যজিৎ রায় এবং বাংলার সর্বকালের শ্রেষ্ঠ অভিনেতা উত্তমকুমার প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের উপর। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে নিউ থিয়েটার্স স্টুডিয়োর হয়ে ‘নটির পূজা’ নামক একটি মঞ্চ নাটকের চলচ্চিত্র-রূপ দিয়েছিলেন সে খবর অনেকেরই জানা নেই। এই প্রদর্শনীতে সেই তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলা ছবির গুরুত্বপূর্ণ কমেডিয়ান অভিনেতাদের একটি অংশ রাখা হয়েছে। যেখানে নৃপতি চট্টোপাধ্যায়, তুলসী চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, জহর রায়, সন্তোষ দত্ত, রবি ঘোষ, অনুপ কুমার ও চিন্ময় রায়কে স্থান দেওয়া হয়েছে। বর্তমান সময়ের ছবি, পরিচালক ও অভিনেতারাও বাদ যায়নি। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়,অনীক দত্ত, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, নন্দিতা রায়, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়-সহ এ যুগের বাংলা চলচ্চিত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের ছবিও প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে প্রয়াত পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের উপর।
আরও পড়ুন: ছবি দেখানোয় চূড়ান্ত অব্যবস্থা, চলচ্চিত্র উৎসব নিয়ে ক্ষুব্ধ দর্শকরা
মানুষ ইতিহাস বিমুখ। ফলে ইতিহাসকে ধরে রাখা এবং তাকে বার বার মানুষের সামনে তুলে ধরাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। প্রদর্শনীটি ডিজাইন করেছেন সর্বজিৎ চক্রবর্তী, সঞ্জয় ঘোষ দস্তিদার, স্নেহাশিস ভট্টাচার্য, অর্ণব সাহা, নির্মল ধর, জয়ন্তকুমার ঘোষ, সুকান্ত মিত্র, মুকুল ভট্টাচার্য, অম্লান কর্মকার, অনুরুদ্ধ মিত্র, কৌস্তভ তরফদার, সুমিতা দে, জয়শ্রী মণ্ডল পাল, সৌমেন খামরুই, বিশ্বজিৎ লাহিড়ী,অরিন্দম বসু, রজত কয়াল, সুদীপ ভট্টাচার্য ,অজিত কুমার দত্ত, সুমিত ঘোষাল এবং বিজয় শাউ।
(মুভি ট্রেলার থেকে টাটকা মুভি রিভিউ - রুপোলি পর্দার সব খবর জানতে পড়ুন আমাদের বিনোদন বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy