Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নাগালে গানের দিদিমণি লোপামুদ্রা

এ দিনের কর্মশালার নাম দেওয়া হয়েছিল, ‘গান ও গায়নশৈলী’। শহরে এমন কর্মশালা এই প্রথম। অনেকেরই নামী শিল্পীর কাছে গান শেখার ইচ্ছে থাকে। কিন্তু সময়-সুযোগের অভাব কিংবা নানা সমস্যায় কলকাতায় গিয়ে গান শেখা হয়ে ওঠে না।

তালিম: কর্মশালায় গান শেখাচ্ছেন লোপামুদ্রা মিত্র। নিজস্ব চিত্র

তালিম: কর্মশালায় গান শেখাচ্ছেন লোপামুদ্রা মিত্র। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:২৩
Share: Save:

ছুটির দিনে গানের কর্মশালা হল মেদিনীপুর শহরে। আর সেখানে গান শেখালেন প্রখ্যাত সঙ্গীশিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র। রবিবার কেরানিতলায় এই কর্মশালা ঘিরে উৎসাহের ছবি ধরা পড়ে।

এ দিনের কর্মশালার নাম দেওয়া হয়েছিল, ‘গান ও গায়নশৈলী’। শহরে এমন কর্মশালা এই প্রথম। অনেকেরই নামী শিল্পীর কাছে গান শেখার ইচ্ছে থাকে। কিন্তু সময়-সুযোগের অভাব কিংবা নানা সমস্যায় কলকাতায় গিয়ে গান শেখা হয়ে ওঠে না। তাঁদের সুযোগ করে দিতে এই আয়োজন করেছিল মেদিনীপুরের সাংস্কৃতিক সংস্থা ‘অন্য প্রয়াস’। কর্মশালার উদ্যোক্তা, শিল্পী স্বাগত মাইতির কথায়, “মেদিনীপুরে গান নিয়ে নতুন কিছু করতে চেয়েছিলাম। গানকে মানুষের আরও কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলাম। সেখান থেকেই এই ভাবনা।’’

লোপামুদ্রা মিত্রের মতো শিল্পীর কাছে গানের তালিম নিতে পেরে, খুঁটিনাটি শিখতে পেরে খুশি কর্মশালায় যোগদানকারীরা। তাঁদের অন্যতম সন্তু রায়, অরিন্দম। সন্তু, অরিন্দম দু’জনেই গানের শিক্ষক। সন্তুর কথায়, “গানের কর্মশালায় থাকতে পেরে খুব ভাল লেগেছে। অনেক কিছু জেনেছি, শিখেছি।’’ অরিন্দম বলছিলেন, “গান নিয়ে আমাদের প্রায় সকলেরই একটা আলাদা অনুভূতি রয়েছে। এমন কর্মশালা সেই অনুভূতিটা আরও উস্কে দেয়।’’ খুশি লোপামুদ্রাও। শিল্পীর কথায়, “মেদিনীপুরে আসতে পেরে ভাল লাগছে। এই উদ্যোগটা দারুণ।’’ নিজের গান নিয়ে দেশ- বিদেশে ঘোরেন লোপামুদ্রা। এ দিনের কর্মশালায় নিজের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথাও শোনান তিনি। কী ভাবে গান গাইতে হয়, গান গাওয়ার সময় কোন কোন দিকে খেয়াল রাখতে হয়, সেই সব জানান। নানা বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে সুর- তাল- গানে কি ভাবে মঞ্চ মাতাতে হয়, লোপামুদ্রার কাছ থেকে সেই সব জানতে পেরে উৎসাহিত অনেকেই।

অনেক বছর আগে মেদিনীপুরে ‘অন্য প্রয়াস’ নামে এই সাংস্কৃতিক সংস্থা তৈরি করেছিলেন শিল্পী তিমিরবরণ মাইতি। স্বাগত তিমিরবরণবাবুরই ছেলে। স্বাগত যে ভাবে সংস্থার কর্মসূচির ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চেষ্টা করছেন, তাতে খুশি তিমিরবরণবাবুও। উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন মেদিনীপুরের প্রবীণ শিল্পী জয়ন্ত সাহা। জয়ন্তবাবুর কথায়, “অত্যন্ত ভাল উদ্যোগ। এটা একটা নতুন দিক। লোপামুদ্রা মিত্রের মতো শিল্পী মেদিনীপুরে এসে গান শেখাচ্ছেন, গানের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বোঝাচ্ছেন, এর থেকে ভাল কিছু হয় না।’’

লোপামুদ্রা মিত্রের গাওয়া অনেক গান বাংলা সঙ্গীতে নয়া মাত্রা যোগ করেছে। কর্মশালায় সেই গানগুলোর কথাও ঘুরেফিরে এসেছে। শহরের এক প্রবীণ শিল্পী বলছিলেন, “অনেকের সুন্দর কন্ঠ রয়েছে। তবে আসল কথা হল সেটা কে কতটা কাজে লাগাচ্ছেন। কারও ইউনিক গলা থাকলে তাকে ভার্সেটাইল গানের চেষ্টা করতে হবে। কারও গলা যদি ইউনিক না হয়েও ভার্সেটাইল হয় তাকে গলার টেক্সচার নিয়ে কাজ করতে হবে।’’ স্বাগত বলছিলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য সকলের মাঝে গানকে পৌঁছে দেওয়া। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই এই আয়োজন। এমন কর্মশালা কলকাতায় হয়। কলকাতার থেকে মেদিনীপুর পিছিয়ে থাকবে কেন!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE