সারা সেনগুপ্ত।
যিশু ও নীলাঞ্জনা সেনগুপ্তর বড় মেয়ে সারার সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য গিয়েছিলাম লেক গার্ডেন্সে, ওঁদের নতুন বাড়িতে। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘উমা’র মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছে সে। বাড়িতে এখনও ইন্টিরিয়ারের কাজ চলছে। গেস্টরুমে বসতেই মায়ের সঙ্গে চলে এল তেরো বছরের ফুটফুটে কন্যে। সারল্য ভরা মুখে নজর কাড়ে উজ্জ্বল চোখ। ভারী মিষ্টি তার হাসিও। মায়ের পাশ ঘেঁষে একটু গুটিসুটি হয়েই বসল সারা। তার পর কথা বলতে বলতে সে খুলল প্যান্ডোরা বক্স... শুটিংয়ের গল্প, সাজুগুজু, ফুচকা খাওয়া, মায়ের সঙ্গে সিক্রেট শেয়ার... কত কী যে উঠে এল...
প্র: স্কুল, পড়াশোনার মাঝে ছবির শুটিং করতে হয়েছে। বাবা-মা রাজি হল কী ভাবে?
উ: ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন একটা ছবিতে অভিনয় করব। বাবা-মা কত ফিল্ম করেছে। আমি তো জানতামই না, সৃজিত ‘উমা’র জন্য আমার কথা ভেবেছে (আমি সৃজিতকে আঙ্কল বলি না, নাম ধরে ডাকি)। তখন পুরনো বাড়িতে থাকতাম। একদিন হাভারবোর্ড চালাচ্ছিলাম। সৃজিত বলল, ‘দ্যাখ তুই হাভারবোর্ড চালাতে এত ভালবাসিস, এত ভাল স্লাইম বানাস, কিন্তু তোর বাবা-মা তোকে ছবি করতে দিচ্ছে না।’ ও আমাকে জিজ্ঞেস করল, ‘তুই মুভিটা করবি?’ আমি বলি হ্যাঁ করব। মা-বাবা তো হাঁ! তার পর রাজিও হল (মায়ের দিকে তাকিয়ে)।
প্র: প্রথম বার ক্যামেরার সামনে এসে কী রকম লাগল?
উ: শুরুতে একটু নার্ভাস ছিলাম, তার পর ইউসড টু হয়ে গেলাম। দেখলাম, নট আ বিগ ডিল। ক্যামেরার সামনে এক্সপ্রেশন দিতে আমার খুব মজা লেগেছে। পুরো টিমের সঙ্গে খুব বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল। বিশেষ করে শ্রাবন্তীদিদির সঙ্গে।
প্র: শুটিংয়ের জন্য স্কুল বন্ধ হয়নি?
উ: না, সামার ব্রেকের সময় শুটিংটা হয়েছিল।
প্র: অভিনয় করতে তো ভাল লাগে। আর সাজতে?
উ: হ্যাঁ, ভাল লাগে। তবে বেশি মেকআপ করা কিংবা জুয়েলারি পরা, ও সব ভাল লাগে না। ধরো, মা কোথাও বেরোবে, মেকআপ বক্স বের করল। সঙ্গে সঙ্গে আমার বোন জারা এক চোখে ব্লু অন্যটায় রেড, কোথাও একটু গ্রিন আইশ্যাডো লাগিয়ে নিল... দু’ দিকে পনিটেল। অদ্ভুত সাজ! কিন্তু আমাদের বলতে হবে, ভাল লাগছে। ভেরি ফানি!
‘উমা’ ছবিতে যিশু এবং সারা
প্র: আচ্ছা, খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারটা কী রকম?
উ: (মায়ের দিকে তাকালে, নীলাঞ্জনা বললেন, ‘তুমি উত্তর দাও। আমি বলব না’) বাড়িতে আমার ফেভারিট ভাত, ভেন্ডি ফ্রাই আর চিজ অমলেট। মা ছোটবেলা থেকে আমাকে এত ডিমসেদ্ধ- আলুসেদ্ধ-ভাত খাইয়েছে, সেটা আমি আর ভালবাসি না। পমফ্রেট মাছ ভাজা, ফিশ ফ্রাই আমার প্রিয়।
প্র: আর কী করতে ভালবাস তুমি?
উ: স্লাইম বানাতে খুব ভালবাসি। ক্লাস ফাইভে ভাল রেজাল্টের পর মা-বাবা কিনে দিয়েছিল। অ্যান্ড আই লাভ বেকিং! জানো, মায়ের জন্মদিনে কেক বানিয়েছিলাম। আর আমি অ্যানিম্যালস খুব ভালবাসি। রিসেন্টলি একটা কিটেন রেসকিউ করেছি। আবার আমার স্কুলের সামনে দুটো কুকুরছানা আছে। বাড়ি থেকে ওদের জন্যও খাবার আসে। আর জানো, আমি নাচতেও খুব ভালবাসি। তবে সবার সামনে নয়।
নীলাঞ্জনা: ছোটবেলায় ব্যালে শিখত, ছেড়ে দিল। তার পর ভরতনাট্যম, স্কেটিং, টেনিস... আসলে সারা একদম যিশুর মতো। আমার শাশুড়ি বলতেন, এটা যিশু সম্পর্কে। সারাও স্পোর্টসে প্রচণ্ড ভাল। বাস্কেটবল খেলে। ওর ক্লাস সিক্স, তবে পড়াশোনার যা চাপ!
সারা: আমার লক্ষ্য, একজন সাকসেসফুল উওম্যান হওয়া আর অ্যানিম্যাল কনজারভেশনিস্ট হিসেবে কাজ করা। রাস্তার কুকুর, যারা খেতে পায় না, ঘা হয়ে আছে, ওদের সুস্থ করে তুলব। মা বলে, শুধু ভালবাসলেই হবে না। ওদের জন্য তোমাকে কিছু করতে হবে।
প্র: বন্ধুরা কী বলছে?
উ: বন্ধুরা ভীষণ সাপোর্টিভ, ওরা খুব হ্যাপি। যখন আমার সারা রাত শুট ছিল, সাহির আর যশও আমার জন্য জেগে ছিল।
নীলাঞ্জনা: আসলে সারা কান্ট গেট অ্যালং উইথ গার্লস। ওর বক্তব্য, মেয়েরা কিছু খেলে না। আর ও শুধু মাঠে খেলবে, ছুটবে!
সারা: মেয়েরা এক জায়গায় বসে আঁকবে, গল্প করবে। কোথায় তাড়াতাড়ি টিফিন খেয়ে নিয়ে খেলবে, তা না!
প্র: কে বেশি বকুনি দেয়?
উ: নীলাঞ্জনা: বলেই ফেলো, এ দিক ও দিক তাকাতে হবে না তোমাকে।
সারা: আমি জানি, মা এটা আমার ভালর জন্যই করে। সো ইট’স ওকে।
প্র: সারা সিক্রেট শেয়ার করে কার সঙ্গে?
উ: দু’জনের সঙ্গেই।
নীলাঞ্জনা: তুমি কি বাবাকে বলতে পারো ক্লাসে হু হ্যাজ আ ক্রাশ অন ইউ? আমাকে বলবে, পাপাকে বোলো না কিন্তু। যদিও আবদার পাপার কাছেই করে। তবে ভয়ও বেশি পায় পাপাকে।
সারা: ওহ মাই গড! তুমি বলে দিলে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy